একাত্তরের গণহত্যা মামলায় এনএসআইয়ের সাবেক ডিজি ওয়াহিদুল হকের জামিন
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগের মামলায় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ওয়াহিদুল হককে জামিন দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ওয়াহিদুল হকের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ওয়াহিদুল হকের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, 'আমরা ট্রাইব্যুনালকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, বিগত সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হয়রানির অংশ হিসেবে এই মামলা করেছে।'
পালোয়ান আরও বলেন, ৭৮ বছর বয়সী ওয়াহিদুল সাড়ে ছয় বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
'আমরা তার মেডিকেল রেকর্ড উপস্থাপন করেছি। তার স্বাস্থ্য, বয়স এবং হেফাজতের মেয়াদের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল তাকে জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে,' যোগ করেন তিনি।
পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শকও ছিলেন ওয়াহিদুল। তাকে ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল গ্রেপ্তার করা হয়।
১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ রংপুর সেনানিবাসের কাছে ৫০০ থেকে ৬০০ মানুষকে হত্যার সঙ্গে ওয়াহিদুল জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে।
২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর ওয়াহিদুলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয় এবং ২০১৯ সালের ১৬ অক্টোবর যুদ্ধাপরাধ মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
তদন্ত সংস্থা ও মামলা থেকে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার চন্ডিবর্দী গ্রামের ওয়াহিদুল ১৯৬৬ সালের অক্টোবরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।
১৯৭০ সালের মার্চ মাসে তাকে ক্যাপ্টেন হিসেবে রংপুর সেনানিবাসে বদলি করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানান, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ একমাত্র বাঙালি সেনা কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ক্যান্টনমেন্টের কাছে ৫০০ থেকে ৬০০ লোককে হত্যায় অংশ নেন।
১৯৭১ সালের ৩০ মার্চ তাকে পাকিস্তানে বদলি বদলি করা হয়। বাংলাদেশে ফিরে ১৯৭৪ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তার যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে অনেকেই জানায় তাকে 'বাধ্যতামূলক অবসরে' পাঠানো হয়।
১৯৭৫ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১৯৭৬ সালের অক্টোবরে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন এবং পরে এনএসআইয়ের পরিচালক, এনএসআইয়ের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হন এবং ২০০৫ সালে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে অবসরে যান।
Comments