সুমনের মরদেহ দাফনে পুলিশ বাধ্য করেছে, অভিযোগ পরিবারের
রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে মারা যাওয়া সুমন শেখের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আজিমপুর গোরস্তানে তাকে দাফন করা হয়।
তবে সুমনের পরিবারের অভিযোগ, তারা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। তারা আদালতে মামলা করতে গেলেও পুলিশ তাদের মীমাংসার কথা বলে কালক্ষেপণ করে জোরপূর্বক মরদেহ বাবার কাছে গছিয়ে দেয় দাফনের জন্য।
সুমনের স্ত্রী জান্নাত বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ ঘটনায় পুলিশ কোনো মামলা নেয়নি। তাই গতকাল আদালতে গিয়েছিলাম, আদালতও মামলা নেয়নি। আজ আবারও আদালতে যাই মামলা করতে, পারিনি। এরমধ্যেই পুলিশ আমার সহজ-সরল শ্বশুরকে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক মরদেহ দিয়ে আজিমপুরে পাঠিয়ে দেয় দাফনের জন্য। পরে আমরা খবর পেয়ে গোরস্থানে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে কোনোমতে স্বামীর মুখটা শেষবারের মতো একটু দেখতে পেরেছি।'
সুমনের বাবা পিয়ার আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গতকাল রাতে পুলিশ আমার বাসায় আসে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় ৪-৫ জন নেতাকে ম্যানেজ করে আজ ছেলের মরদেহ আমাকে গছিয়ে দেয় পুলিশ। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ রামপুরায় নিয়ে আসি। সন্ধ্যায় আজিমপুর গোরস্তানে দাফন করি।'
এ ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সুমন আত্মহত্যা করেছেন। মরদেহ মর্গ থেকে বাবা নিয়ে গেছেন। এজন্য কোনো জোরজবরদস্তি করা হয়নি।'
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, 'পুলিশ মীমাংসা কেন করবে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজে পরিষ্কার দেখতে পেয়েছি যে, সুমন আত্মহত্যা করেছেন। এখন বিষয়টি নিয়ে তার স্ত্রী রাজনীতি করছেন।'
ডেলিভারিম্যান সুমন শেখ (২৫) পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার পর শনিবার পুলিশ দাবি করে যে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছিলেন।
তবে পরিবারের বক্তব্য, দাবি অনুযায়ী ঘুষ না দেওয়ায় তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা না হওয়া পর্যন্ত সুমনের পরিবার মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। শনিবার ও রোববার বিক্ষোভ করেন সুমনের স্বজনরা।
Comments