নরসিংদীতে ডিবি পুলিশ হেফাজতের নারীর মৃত্যু

নরসিংদীর ১ কেন্দ্রে ভোট বাতিল

নরসিংদীতে গোয়েন্দা পুলিশ হেফাজতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে মারা যান ওই নারী।

মারা যাওয়া নারীর নাম নুরতাজ বেগম (৫৩)। তার বাড়ি নরসিংদী সদর উপজেলার কান্দা পাড়ায়। বিষয়টি নরসিংদী ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের পরিচালক এ এন এম মিজানুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শহরের ভেলানগরে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) নাইমুল মোস্তাকের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়।

পুলিশের দাবি, নুরতাজ বেগমকে ১০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ২০মিনিটের দিকে ডিবি কার্যালয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করার পর বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় নরসিংদী জেলা পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিন সদস্যের এই কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক নাইমুল মোস্তাক বলেন, নুরতাজ একজন মাদক কারবারি। তাকে ১০ কেজি গাঁজাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। রাতে অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকালে হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদক মামলা হয়েছে।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, পেটে ব্যথা নিয়ে নুরতাজ বেগমকে গতকাল রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেন ডিবি সদস্যরা। আজ সকাল ৮টার দিকে হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নরসিংদীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, গাঁজাসহ গ্রেপ্তারের পর ডিবি হেফাজতে থাকা ওই নারী অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আইন অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তার শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।

নুরতাজ বেগমের বড় ছেলে রাজিব মিয়া (৩৬) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাদা পোশাকে তিনজন আমাদের বাড়িতে আসেন সকাল ১১টার দিকে। তারা নিজেদেরকে পুলিশ হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন যে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমাদের মা মারা গেছেন। তার মরদেহ ঢাকা থেকে আনা হচ্ছে। মরদেহ গ্রহণ করার জন্য নরসিংদীর যেকোনো সরকারি হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলা হয় এবং পরে তারা চলে যান।'

তিনি বলেন, 'এ খবর পেয়ে আমরা প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে যোগাযোগ করি। কিন্তু সেখানে মায়ের মরদেহ না পেয়ে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে যাই দুপুর ১২টার দিকে। সেখানে গিয়ে জানতে পারি যে মায়ের মরদেহ সেখানে আছে। তখন আমাদেরকে মায়ের মরদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। দুপুর ৩টার দিকে একজন ম্যাজিস্ট্রেট আসলে তার উপস্থিতিতে মায়ের মরদেহ দেখতে দেওয়া হয় এবং বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে নরসিংদী সদর হাসপাতালে মরদেহ এনে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেল ৫টার দিকে আমরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসি।'

তিনি আরও বলেন, 'মায়ের গায়ে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। কিন্তু আমাদেরকে কেন প্রথমেই দেখতে দেওয়া হলো না, সেটা রহস্যময় মনে হয়েছে।'

কোনো অভিযোগ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, 'মা তো আর ফিরে আসবে না। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আর কি হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে হয়রানির শিকার হতে চাই না।'

Comments

The Daily Star  | English

Bad loans hit alarming record

Awami League-affiliated businesses had already put the country’s banking sector in trouble with huge bad debts, but the loans disbursed through irregularities to these companies turned sour even at a more alarming pace after the party’s ouster.

5h ago