মৃত্যুর ৪ দিন আগে রবিউলকে গ্রেপ্তারের আংশিক তথ্য পাওয়া গেছে: পুলিশ

রবিউল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে অগ্রগতির তথ্য জানাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। ছবি: স্টার

গাজীপুরের সুতা ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম মারা যাওয়ার চার দিন আগে পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আংশিক তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, আমরা রবিউলের পরিবারের সদস্য ও ভোগড়া পেয়ারাবাগান এলাকায় তার প্রতিবেশীসহ ৮৭ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের কাছে অনেক ধরনের তথ্য পেয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ কেউ রবিউলকে চার দিন আগে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছেন। এর কিছুটা সত্যতা আমরা পেয়েছি। এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্ত হবে।

গত ১৮ জানুয়ারি রবিউলের মৃত্যুর ব্যাপারে বাসন থানা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল আগের রাতে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর গাড়িচাপায় তিনি আহত হয়েছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

তবে পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিল পুলিশের নির্যাতনে রবিউলের মৃত্যু হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিচারের দাবিতে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে মহাসড়কে পুলিশের তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন ও ভোগরা বাইপাস মোড়ে বাসন থানার পুলিশ বক্সে ভাঙচুর করা হয়। পরে ময়না তদন্ত ছাড়াই রবিউলের লাশ দফন করা হয়।

মহাসড়ক অবরোধ ও ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের আসামি করে দুটি মামলা করে পুলিশ। দুই মামলায় মোট ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত প্রায় ৬০০ জনকে আসামি করা হয়।

তবে স্থানীয় লোকজন ও পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য ছিল, মুঠোফোনে বিটকয়েন দিয়ে জুয়া খেলার অভিযোগে ১৪ জানুয়ারি রাতে চার জনকে আটক করে বাসন থানার পুলিশ। পরের দিন তিন জনকে ছেড়ে দিলেও রবিউলকে থানায় আটকে রাখা হয়েছিল।

এই ঘটনায় বাসন থানার দুই উপপরিদর্শককে (এসআই) সাময়িক বরখাস্ত করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জিএমপি। কয়েকদিন পর বাসন থানার ওসিকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। তদন্তের অগ্রগতি জানাতে জিএমপি কমিশনার আজ দুপুরে তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।

তিনি বলেন, থানা হেফাজতে ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের মৃত্যু হয়নি। এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বাসন থানা পুলিশের গাফিলতি ব্যাপারে জিএমপি কমিশনার বলেন, রবিউলকে রাতে থানা থেকে ছাড়া হলেও তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়নি। তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়ার তথ্যও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। থানায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও সেগুলো বিকল ছিল। এসব ব্যাপারে ওসি মালেক খসরুর ব্যাপারে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)-কে সুপারিশ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জিএমপি কমিশনার আরও বলেন, বাসন থানার সিসিটিভি ক্যামেরা কারা বন্ধ বা ক্ষতি করেছে তা তদন্তে ধরা পড়বে।

 

 

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

8h ago