হাতিরঝিল থানা হেফাজতে মৃত্যু: রামপুরায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

পুলিশের হেফাজতে সুমন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় বিচারের দাবিতে রামপুরায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষভো করেন এলাকাবাসী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

হাতিরঝিল থানায় সুমন শেখের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার চেয়ে অন্তত দেড় শ মানুষ রামপুরায় সড়ক অবরোধ করেছেন। আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

রাত সোয়া ১০টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সুমন শেখের স্বজন ও এলাকাবাসী রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করছিলেন।

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রামপুরা ব্রিজের কাছে বিক্ষুব্ধ লোকজন রাস্তার পশ্চিম পাশের লেন বন্ধ করে দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে তারা সেখানে বিক্ষোভ করছেন।

পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে সড়ক ছেড়ে দেন বলে জানান তিনি।

পুলিশ ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে জানিয়ে রাত ১০টার দিকে তিনি বলেন, বিক্ষোভের কারণে রামপুরা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়েছে। মালিবাগ থেকে কুড়িলের দিকে পূর্ব পাশের লেন দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে।

ডেলিভারিম্যান সুমন শেখ (২৫) পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার পর শনিবার পুলিশ দাবি করে যে তিনি গলায় ফাঁস দিয়েছিলেন।

তবে পরিবার বলছে, দাবি অনুযায়ী ঘুষ না দেওয়ায় তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা না হওয়া পর্যন্ত সুমনের পরিবার মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার এসআই হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল মো. জাকারিয়া।

এ ছাড়া তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুককে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।

সুমনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায়ও হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করে স্বজনরা।

থানা হেফাজতে সুমন শেখের মৃত্যুর বিষয়ে গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে থানায় এনে আলাদা একটি লকআপে রাখা হয়েছিল। রাত ৩টা ৩২ মিনিটে ভেন্টিলেটরের রডের সঙ্গে সুমন নিজের ট্রাউজার খুলে গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। থানার সিসিটিভি ফুটেছে এটি দেখা গেছে।'

এ ঘটনায় 'দায়িত্বে অবহেলার কারণে' হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল জাকারিয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

গতকাল সুমনের স্ত্রী জান্নাত বেগম ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, 'আমাদের বাসা পূর্ব রামপুরা হাইস্কুল গলিতে। গতকাল রাত সাড়ে ৮টায় কয়েকজন বাসায় এসে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যান। তার (সুমন) বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে বলেন। কিন্তু কী অভিযোগ সেটা তারা জানাননি।'

'আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের শাস্তি চাই,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Enforced disappearances: Eight secret detention centres discovered

The commission raised concerns about "attempts to destroy evidence" linked to these secret cells

3h ago