বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে পেঁয়াজের খেত, উৎপাদন পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কা
ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দায় বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও হালি পেঁয়াজের খেত। গত দুইদিনের বৃষ্টিতে পেঁয়াজের ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে ধারণা কৃষকের।
সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার অন্তত ১০ জন পেঁয়াজ চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুড়িকাটা পেয়াজের বয়স হয়েছে ৪০-৪৫ দিন। এ পেয়াজ পরিপক্ক হতে মোট ৯০ দিন সময় লাগে। পানি দ্রুত না নেমে গেলে খেতের পেঁয়াজ পচে যাবে।
অপরদিকে হালি পেয়াজের চারা তৈরি করা হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চারা মরে যাবে বলে ধারণা করছেন কৃষক।
সালথার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কৃষক হাবিবর রহমান (৪৮) তিন বিঘা জমিতে হালি পেঁয়াজের চারা তৈরি করছিলেন। জমি চাষ, সার-ওষুধ পানি ও শ্রমিক দিয়ে ইতোমধ্যে তার প্রায় ১৮-২০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে।
দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'জমিতে এখন যেভাবে পানি উঠেছে এতে আর এই পেঁয়াজ বাঁচার সম্ভাবনা নেই। নতুন করে হালি লাগাতে আবার বিঘাপ্রতি ২০ হাজার টাকা খরচ বেড়ে গেল।'
একই এলাকার কৃষক মিরান ফকির (৫৪) চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন। তিনি বলেন, 'বুধবার পর্যন্ত আমাদের মাঠে অনেকে পেয়াজের হালি লাগিয়েছে। পেঁয়াজের গোড়া এখনো শক্ত হয়নি। বৃষ্টির পানিতে যে অবস্থা হলো, তাতে পেঁয়াজ তো নষ্ট হলোই, আবার নতুন করে জমি চাষ করে পেঁয়াজ লাগাতে হবে। এতে অন্তত ১৫ দিন আমরা পিছিয়ে যাব।'
নগরকান্দা উপজেলারচর যশোহরদী ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি লক্ষণ চন্দ্র মন্ডল ৩৭ শতাংশ জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ করেছিলেন। সেই জমি এখন পানির নিচে।
তিনি জানান, এ পেঁয়াজ পরিপক্ক হতে আরও ৪৫ দিন সময় লাগবে। তার আগে পানি জমায় গাছ মরে যাবে, পাতা হলুদ হয়ে যাবে, কিছু পচে যাবে।
জানতে চাইলে নগরকান্দা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা তিলক কুমার ঘোষ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করা হবে। এর মধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৩৫০ হেক্টর এবং হালি পেয়াজ ৪০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। বৃষ্টি থামলে কীভাবে দ্রুত পানি সরানো যায়, এ বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'বৃষ্টির কারণে কিছু পেঁয়াজের ক্ষতি হবে। এছাড়াও পেঁয়াজের মৌসুম পিছিয়ে যাবে বৃষ্টির কারণে।'
মন্তব্য জানতে সালথা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদারকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও, তিনি রিসিভ করেননি।
Comments