ধানের বাজারদরে খুশি লালমনিরহাটের কৃষক

ধানের দাম : ধানের বাজারদরে খুশি লালমনিরহাটের কৃষক।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রাম এলাকায় আমন ধানের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষক। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

গত বছর এই সময়ে প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছিল ৯০০-৯৫০ টাকা। এ বছর তা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০ টাকা থেকে ১১ শ টাকা। ধানের বর্তমান বাজারদরে খুশি লালমনিরহাটের কৃষক।

তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে উৎপন্ন খরচ দেড় হাজার টাকা থেকে ২ হাজার টাকা বেশি বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। ধানের দাম আরও বাড়বে এমন প্রত্যাশাও করছেন তারা।

গতকাল শনিবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার দুড়াকুটি হাটে কৃষক মন্তেজার রহমান (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ধানের বর্তমান বাজারদরে খুশি। ৮ মণ ধান ১ হাজার ৯০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এ বছর ১১ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। ৯ বিঘা জমির ধান ঘরে তুলেছেন। বাকি ২ বিঘা জমির ধানের ৩-৪ দিনের মধ্যে ঘরে তুলবো।'

প্রতি বিঘা জমি থেকে তিনি ১৫ মণ ধান পেয়েছেন উল্লেখ করে আরও বলেন, 'গত বছর প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপন্ন করতে খরচ হয়েছিল ৯ হাজার টাকা। এ বছর খরচ হয়েছে ১১ হাজার টাকা। ডিজেল, সার, কীটনাশকের দাম বাড়ার পাশাপাশি শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে।'

'আশা করছি, কয়েকদিন পর ধানের দাম আরও বাড়বে,' যোগ করেন তিনি।

ধানের দাম : ধানের বাজারদরে খুশি লালমনিরহাটের কৃষক।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার দুড়াকুটি হাটে ধান বিক্রি করছেন কৃষক। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

দুড়াকুটি হাটে ধানের পাইকার শাহ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন খুব কম কৃষকই ধান হাটে এনে বিক্রি করছেন। অধিকাংশ কৃষকই বাড়ি থেকে ধান বিক্রি করছেন। ধানের পাইকাররাও কৃষকের বাড়িতে গিয়ে ন্যায্য মূল্যে ধান কিনছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'বর্তমানে আমরা প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৭০ টাকা থেকে ১১ শ টাকায় কিনছি। হাটে ধানের তেমন সরবরাহ নেই। ধানের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। তবে দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে।'

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রাম এলাকার কৃষক ধনেশ্বর চন্দ্র বর্মণ (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। তবে এবার ফলন আশানুরূপ হয়েছে। পোকা-মাকড়ের তেমন উৎপাতও ছিল না।'

'১০ বিঘা জমি থেকে ১৪৮ মণ ধান পেয়েছি। ধান উৎপাদনে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। গত ২ বছর থেকে ধান উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছি,' তিনি বলেন।

আদিতমারী উপজেলার ভাদাই গ্রামের কৃষক আফতাব উদ্দিন (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কয়েক বছর আগে ধান চাষে শুধু লোকসানই হতো। গত ২ বছর থেকে ধান চাষে লাভবান হচ্ছি। ধানের বর্তমান বাজারদর অব্যাহত থাকলে কৃষকরা ধান চাষে আরও বেশি উৎসাহিত হবেন।'

'এক বিঘা জমি থেকে যে পরিমাণ খড় পাওয়া যায় সেগুলো বিক্রি করেও ৩-৪ হাজার টাকা আসে। বাজারে খড়ের চাহিদা অনেক।'

তিনি আরও বলেন, '১২ বিঘা জমি থেকে এ বছর ১৭০ মণ ধান পেয়েছি। ১৫ মণ ধান বিক্রি করেছি ১১ শ টাকা মণ দরে।'

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর অনাবৃষ্টির কারণে আমন চাষে কৃষকদের সেচের পানির জন্য বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। তবে, ধানের ফলন আশানুরূপ। কৃষকরা আশানুরূপ দরে ধানও বিক্রি করতে পারছেন।'

এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ধান চাষ করে কৃষকরা ৭-৮ হাজার টাকা লাভ করতে পারছেন, বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

India curbs import of Bangladeshi jute, woven fabrics, yarn

However, the products will be allowed to be imported only through Nhava Sheva seaport in Maharashtra

1h ago