লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামে ২১০০ হেক্টর জমির আমন ধান হেলে পড়েছে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির কারণে লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের মোট ২ হাজার ১০০ হেক্টর জমির আমন ধান মাটিতে হেলে পড়েছে।
দুই জেলার কৃষি বিভাগ এমন তথ্য জানালেও, কৃষকদের মতে এই পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি হবে।
খেতের আধা পাকা এসব আমন ধান হেলে পড়ায় আশানুরূপ ফলন থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, সিত্রাংয়ের প্রভাবে কুড়িগ্রামে ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর ও লালমনিরহাটে ৪৭০ হেক্টর জমির আমন ধান হেলে পড়েছে।
তবে কী পরিমাণ আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে তা নির্ণয় করতে কৃষি কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ী গ্রামের কৃষক নজের আলী (৬০) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তার ৮ বিঘা জমির আমন ধানের মধ্যে ৩ বিঘা জমির আমন ধান হেলে পড়েছে। এসব ধান আধা পাকা।
এ বছর প্রতিবিঘা জমি থেকে তিনি ১৫-১৬ মণ ধানের ফলন পাবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি ধানের ফলন কম পাওয়ার আশঙ্কা করছেন।
তিনি বলেন, 'সিত্রাংয়ের কারণে আমাদের এলাকায় সোমবার রাতভর ঝড়-বাতাস ও বৃষ্টি ছিল। এতে খেতের মধ্যেই আমন ধানের গাছ মাটিতে হেলে পড়েছে। সিত্রাং এসে আমাদের আশাহত করেছে।'
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা গ্রামের কৃষক নবিন চন্দ্র বর্মণ (৬৭) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ১০ বিঘা জমির মধ্যে ৪ বিঘা জমির আমন ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। গ্রামের সব কৃষকের খেতের অবস্থা একই। ২ সপ্তাহ পর ধান কাটার কথা ছিল।'
'ধানগাছ হেলে পড়ায় প্রতিবিঘা জমিতে ৪-৫ মণ ধানের ফলন কম পাবো,' বলেন তিনি।
জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝড়-বাতাসে আমন ধানের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নির্ণয়ের কাজ চলছে। আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে বিস্তারিত বলা যাবে।'
আপাতত ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমির আমন ধানগাছ মাটিতে হেলে পড়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হামিদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলায় ৪৭০ হেক্টর জমির আমন ধানগাছ মাটিতে হেলে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে। মাঠ পর্যায়ে আমন ধানের ক্ষতির হিসাব নিরূপণের কাজ চলছে।'
তবে আবহাওয়া অনুকূলে আসায় হেলে পড়া আমন ধানের তেমন ক্ষতি হবে না বলে মনে করছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝড়-বাতাসের কারণে আমন ধানের খেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কমে যাবে।'
Comments