দ. আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনই ফেনীর
দক্ষিণ আফ্রিকায় শুক্রবার মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৫ বাংলাদেশি প্রবাসী নিহত হয়েছেন। তারা সবাই ফেনী জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
নিহতরা হলেন, ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মো. ইসমাইল হোসেন, দাগনভূঁঞা উপজেলার মাতুভূঁইয়া ইউনিয়নের রাজু আহমেদ, জায়লস্কর ইউনিয়নের মোস্তফা কামাল এবং সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চর মজলিশপুর ইউনিয়নের আবুল হোসেন ও তার ছেলে নাজিম হোসেন।
নিহতদের স্বজন ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা শুক্রবার রাতে বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
এ দুর্ঘটনায় আরও ২ বাংলাদেশি প্রবাসী আহত হয়েছেন। তারা হলেন, দাগনভূঁইয়ার আনিসুল হক মিলন ও গোপালগঞ্জের নাহিদ আহমেদ।
শুক্রবার সকালে দেশটির রাজধানী প্রিটোরিয়া থেকে ১ হাজার কিলোমিটার দূরে বিউফোর্ট ওয়েস্ট শহরে তাদের বহনকারী গাড়ির সঙ্গে একটি লরির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত হন।
এসময় তারা জোহানেসবার্গ থেকে কেপটাউনে যাচ্ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আফ্রিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক মো. তারিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুর্ঘটনায় নিহত ইসমাইল হোসেন ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিরলী গ্রামের শরিয়ত উল্যাহর ছেলে।
নিহতের স্বজন স্থানীয় সাংবাদিক শাহজালাল ভূঁইয়া জানান, ভাইকে নিয়ে গত ১০ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন ইসমাইল। ৩ ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। আগামী এপ্রিলে বাড়িতে এসে বিয়ে করার কথা ছিল তার। ১০ দিন আগে তার দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী ভাই বাড়ি এসেছেন।
নিহত মোস্তফা কামাল দাগনভূঁঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের সিরাজ উল্লার ছেলে।
তার ভাই অ্যাডভোকেট মোস্তফা জামান নোফেল জানান, মোস্তফা গত ১২ বছর ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড়। তার ২ সন্তান রয়েছে।
নিহত রাজু আহমেদ দাগনভুঁঞা উপজেলার মাতুভুঁঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রামের মিলন মিয়ার ছেলে।
নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে দাগনভূঁঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'উপজেলার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চর মজলিশপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে আবুল হোসেন নিহত হয়েছেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ওই দেশে গাড়িচালকের পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। এ ঘটনায় তার ছেলে নাজিম হোসেনেরও মৃত্যু হয়েছে। নাজিম হোসেনের জন্ম ওই দেশে হওয়ায় সে সেখানকারও নাগরিক।'
ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের বাড়ি ফেনীর বিভিন্ন উপজেলায়। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিহতদের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের খোঁজ-খবর নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।'
Comments