পুনর্বাসন সাহায্য অপর্যাপ্ত, ফেনীতে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট

পুনর্বাসন সাহায্য অপর্যাপ্ত, ফেনীতে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট
গরুকে খাওয়াবেন বলে শনিবার দুপুরে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার জগৎপুর গ্রামের কৃষক আলম কলা গাছ টুকরো টুকরো করছিলেন | ছবি: মোস্তফা সবুজ/স্টার

বন্যায় পরে ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। গবাদি পশু বাঁচিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও খামারিরা।

ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ গ্রামের কৃষকের খড়ের গাদা ভেসে গেছে। যেটুকু অবশিষ্ট আছে, তাতেও পচন ধরে  গরুর খাওয়ার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে মাঠে নেই ঘাস।

শনিবার দুপুরে ফুলগাজী উপজেলার জগৎপুর গ্রামের বাসিন্দা আলমকে কলা গাছ টুকরো টুকরো করতে দেখা যায়।

জানতে চাইলে ৩৮ বছর বয়সী এই কৃষক বলেন, 'আমার বাড়িতে এখন চারটি গরু আছে, বন্যায় একটি মারা গেছে। পানির স্রোতে আমার দুটি খড়ের গাদা ভেসে গেছে, এখন গরুর কোনো খাবার নেই।'

তিনি বলেন, 'গত ১০ দিন হলো গরুকে পানির সঙ্গে একমুঠো ধানের কুড়া মিশিয়ে খেতে দিচ্ছি। না খেয়ে গুরুগুলো শুকিয়ে গেছে। সবাই তো মানুষের জন্য ত্রাণ দিচ্ছে, কিন্তু কেউ গরুর খাদ্য দিচ্ছে না।'

আলম জানান, ১৮ হাজার টাকা খরচ করে তিন কানি জমিতে আমন ধানের চাষ করেছিলেন তিনি। বন্যার পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে।

একই গ্রামের আরেক কৃষক ওহেদুন্নবীকে দেখা যায় ঘাড়ে করে এক বস্তা শুকনো খড় নিয়ে আসতে।

জানতে চাইলে ওহেদুন্নবী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এক বস্তা খড় আমি ছয় কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিয়ে এলাম। আমার চারটি গরু খাবারের অভাবে এখন মৃত প্রায়। মাঠে-ঘাটে কোথাও কোনো ঘাস নেই যে এনে দেবো।'

'বন্যার আগে আমার যে খড় ছিল, তা আরও এক বছর গরুতে খাওয়াতে পারতাম। বন্যায় তিন কানি জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে হয়তো গরুকে আর খড় দিতে পারব না, গরুগুলো কষ্ট পাচ্ছে। চিন্তা করছি সব বেঁচে দেবো,' যোগ করেন তিনি।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন্যার শুরুতে প্রাথমিকভাবে আমরা জেলায় প্রাণী সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ হিসাবে করেছিলাম প্রায় ৪০০ কোটি টাকা, কিন্তু এখন আরও অনেক বেশি হবে।'

গো-খাদ্যের সংকটের কথা জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, 'বন্যার শুরুর দিকে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এর পরে আর কোনো বরাদ্দ পাইনি। হয়তো সামনের সপ্তাহে আরও কিছু বরাদ্দ পাব।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh exports to EU

RMG exports to EU rise by 2.99% in Jan-Nov

In the 11 months, Bangladesh shipped garments worth $18.15 billion, second highest after China

1h ago