ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে আর তেল ছড়াচ্ছে না: বিপিসি চেয়ারম্যান

গত ২৫ ডিসেম্বর ভোরে ভোলা সদর উপজেলার তুলাতুলি সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া জাহাজ সাগর নন্দিনী-২। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ভোলার মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া তেলবাহী জাহাজ সাগর নন্দিনী-২ বর্তমানে পেছনের অংশ নিমজ্জিত অবস্থায় আছে এবং জাহাজ থেকে কোনো তেল আর ছড়িয়ে পড়ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ।

আজ মঙ্গলবার বিপিসিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

তিনি জানান, জাহাজটিকে উদ্ধারের জন্য আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চাঁদপুর থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ ঘটনাস্থলের দিকে রওনা দিয়েছে এবং আনুমানিক বিকেল ৫টার মধ্যে সেটি পৌঁছে যাবে। অন্যদিকে, মুন্সিগঞ্জ থেকে উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিয়ে ডুবুরি দলও কাছাকাছি সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সাগর নন্দিনী-২ ডুবে যাওয়া ও উদ্ধার কাজের ধারাবাহিক বর্ণনায় বিপিসি চেয়ারম্যান জানান, জাহাজটি ২৪ ডিসেম্বর রাত আড়াইটায় পিওসিএলের এলজে-৫ জেটিতে লোড নেওয়ার জন্য বার্থিং গ্রহণ করে। জাহাজটিতে ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৪৯৬ লিটার ডিজেল ও ২ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫২ লিটার অকটেন লোড করা হয়।

জাহাজটি ২৪ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় জেটি ত্যাগ করে এবং একইদিন বিকেল ৩টায় চাঁদপুরের ডিপোর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জাহাজটি চাঁদপুরে যাওয়ার পথে ২৫ ডিসেম্বর ভোর ৪টার দিকে ভোলার তুলাতলি এলাকায় মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে অন্য একটি কার্গো জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনায় পড়ে এবং জাহাজের ইঞ্জিনের পেছনের দেয়াল ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকে পেছনের অংশ নিমজ্জিত হয়ে পড়ে।

দুর্ঘটনার পরপরই ২৫ ডিসেম্বর সকালে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সিনিয়র সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং চেয়ারম্যান (সচিব) বিপিসিকে একটি চিঠি দিয়ে জাহাজটির দুর্ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে জাহাজের জনবল অন্য একটি বাল্কহেড কার্গো জাহাজের মাধ্যমে উদ্ধার হয়ে তীরে পৌঁছায় এবং ভোলা সদর মডেল থানায় জিডি করে।

ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে কোস্টগার্ড এবং নৌপুলিশ সাগর নন্দিনী-২ অয়েল ট্যাংকারটির চারিদিকে অয়েল ব্যারিকেড বুমের মাধ্যমে ঘিরে রাখে এবং জাহাজ থেকে ছড়িয়ে পড়া কিছু তেল পানির ওপর থেকে হোসপাইপের মাধ্যমে ৭টি ড্রামে পূর্ণ করে জাহাজ মালিকের কাছে ফেরত দেয়।

পদ্মা অয়েলের পক্ষ থেকে পরিবেশ দূষণ রোধে জাহাজ মালিককে দ্রুত জাহাজটি উদ্ধার এবং তেল সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

২৫ ডিসেম্বর সকালে পিওসিএলের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক (সরবরাহ ও বিতরণ) দুপুর ৩টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রশাসন ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

দুর্ঘটনা কবলিত জাহাজ থেকে তেল সংগ্রহের জন্য ২৫ ডিসেম্বর একই মালিকের মালিকানাধীন অন্য জাহাজ সাগর নন্দিনী-৩ দ্রুত বাঘাবাড়ী ডিপোতে খালাস শেষে ঘটনাস্থলে রওনা দেয়।

অন্যদিকে, সাদিয়া অনিক নামের অন্য একটি অয়েল ট্যাংকার দ্রুত চাঁদপুর ডিপোতে খালাস শেষে ২৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় চাঁদপুর ডিপো ইনচার্জ এবং ডিজিএমসহ (অপারেশন) ঘটনাস্থলে রওনা দিয়ে দুপুর ২টার মধ্যে পৌঁছায়।

২৫ ডিসেম্বর বিপিসির পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, দুর্ঘটনার দায় নিরূপণসহ উদ্ধারকৃত জ্বালানি তেল ও ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা দুর্ঘটনাস্থলে অবস্থান করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

গতকাল পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটিকে উদ্ধারের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus opens second round of talks to strengthen national unity

'Beautiful July Charter' would be unveiled following discussions, he says

3h ago