মেঘনায় জাহাজডুবি, ইলিশের অভয়ারণ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ভোলার মেঘনা নদীতে ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেলসহ ডুবে যাওয়া জাহাজটির উদ্ধার কাজ ২৪ ঘণ্টাতেও শুরু হয়নি। এতে জাহাজের তেল নদীতে ছড়িয়ে ইলিশের অভয়ারণ্যসহ জীবৈচিত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পরিবেশ ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা কে এম শাফিউল কিঞ্জল বলেন, 'গতকাল বিকেল ৫টা থেকে সারা রাত তেল উত্তোলন অব্যাহত আছে। এখনো তেল উত্তোলন চলছে। উত্তোলন করা তেল একটি বলগেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে তেল কিছুটা ছড়িয়ে পড়লেও তা বড় আকারের নয়।'

তিনি আরও বলেন, 'আমরা তেল পানিসহ উত্তোলন করছি। আরও কিছু মেশিনারি এসে পৌঁছালে পানি থেকে তেল আলাদা করে উত্তোলন করা সম্ভব হবে।'

ডুবে যাওয়া ট্যাংকারটি থেকে তেল উত্তোলন করে পাশে রাখা বলগেটে ট্রান্সফার করছে কোস্টগার্ড সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

বিআইডব্লিউটিএ'র যুগ্মপরিচালক (উদ্ধার) আবদুস সালাম জানান, এই অয়েল ট্যাংকারটির ওঠাতে পারে এমন কোনো উদ্ধারকারী জাহাজ বিআইডব্লিউটিএ'র নেই। মালিকপক্ষ সাগরবধূ-৩ নামে একটি উদ্ধার জাহাজ পাঠিয়েছে। আরও একটি উদ্ধার জাহাজ সাগরবধূ-৪ এলে দেশীয় পদ্ধতিতে ট্যাংকারটি ওঠানোর চেষ্টা করা হবে।'

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. তোতা মিয়া বলেন, 'আমাদের লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বরিশাল থেকেও লোক আসছে। তবে, এলাকাটি স্রোতবহুল হওয়ায় তেল জমে থাকেনি, স্রোতের টানে কিছু ভেসে গেছে। কতটুকু তেল ছড়িয়ে পড়ছে এখনো বলতে পারছি না। তবে, নদীর বিভিন্ন অংশে ছড়িয়েছে। এতে, নদীর ইকো সিস্টেমের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এই নদীতে বসবাসকারী সব একোয়াটিক যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাতে সন্দেহ নেই।'

ডুবে যাওয়া জাহাজ থেকে ছড়িয়ে পড়া তেল ভাসছে নদীতে। ছবি: স্টার

এলাকাটি ইলিশের অভায়রাণ্যের মধ্যে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. আনিসুর রহমান তালুকদার।

তিনি বলেন, 'তেল পানির সঙ্গে যোগ গেলে হলে ইকো সিস্টেমকে ক্ষতি করবে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ইলিশ চলাচলের ওপর। এটি উদ্বেগজনক হতে পারে। আমরা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলতে পারব।'

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ডুবে যাওয়া ট্যাংকারটি থেকে তেল উত্তোলন করে পাশে রাখা বলগেটে ট্রান্সফার করছে কোস্টগার্ড সদস্যরা। চারিদিকে কিছুটা তেল ছড়িয়ে পড়ার চিহ্ন থাকলেও লাল পতাকা দিয়ে ও এলাকায় না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, শনিবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১১ লাখ লিটার অকটেন ও ডিজেল লোড করে চাঁদপুরের ৫ নম্বর ঘাটের পদ্মা ডিপোর উদ্দেশ্যে রওনা হয় ট্যাংকারটি। রোববার ভোর ৪টার দিকে ভোলার সদর উপজেলার তুলাতুলি মেঘনা নদীতে পৌঁছালে পিছন দিক থেকে আসা অপর একটি জাহাজ এটিকে ধাক্কা দেয়। এতে তাদের পিছনের ইঞ্জিন রুমের কাছে ছিদ্র হয়ে পানি প্রবেশ করে আংশিক ডুবে যায়। এ সময় তারা চিৎকার করলে একটি বালুবাহী বলগেট তাদের সবাইকে জীবিত উদ্ধার করে।

প্রায় ডুবে যাওয়া জাহাজে প্রায় ৯ কোটি টাকার তেল আছে বলে কোস্টগার্ড সূত্র জানায়।

Comments

The Daily Star  | English

No more concessions for India on border killing or fencing

There couldn’t be a more harrowing indictment of India’s ruthless border policy than the recent killings of two Bangladeshis around the 14th anniversary of the gruesome murder of Felani Khatun.

6h ago