সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেয়েও সরকার গঠন করতে পারছে না ইমরানের পিটিআই
অনেক নাটকীয়তার পর গতকাল দিবাগত রাতে পাকিস্তানের নির্বাচন-পরবর্তী বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব পাওয়া গেছে। নির্বাচনে ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও সরকার গঠন করতে যাচ্ছে মুসলিম লীগ-নওয়াজ ও পিপলস পার্টি অব পাকিস্তানের জোট।
আজ বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০১টি আসনে জয়লাভ করে। স্বতন্ত্রদের বেশিরভাগই পিটিআই সমর্থিত। তবে পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, একটি স্বীকৃত রাজনৈতিক দল বা দলের সঙ্গে জোট গঠন না করে আলাদা করে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরকার গঠন করতে পারে না।
শেষ রাতের এসব ঘটনা প্রকাশ্যে এলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) তাদের আনুষ্ঠানিক এক্স একাউন্টে পিএমএল-এন ও পিপিপির ছয় নেতার একটি ছবি পোস্ট করে।
— PTI (@PTIofficial) February 13, 2024
এই ছবির ক্যাপশন দেওয়া হয় 'ইশতেহার চোর'।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে যৌথ সম্মেলনে সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় দুই দল। একই কায়দায় ২০২২ সালে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার সরকারকে উৎখাত করেছিল দল দুইটি।
জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেহবাজ শরীফের নাম প্রস্তাব করা হবে। শেহবাজ নিজে তার বড় ভাই নওয়াজকে এই পদে দেখতে চাইলেও তিনি এতে রাজি হননি।
পিএমএল-এন এর সভাপতি শেহবাজ শরীফ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'এখানে উপস্থিত দলগুলো দুই তৃতীয়াংশ আসন পেয়েছে'। তার সঙ্গে পিপিপি ও আরও দুইটি ছোট দলের নেতারাও ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর জিও নিউজকে পিএমএল-এন এর মুখপাত্র মারিয়াম আওরঙ্গজেব নিশ্চিত করেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জোটের পছন্দ শেহবাজ শরীফ।
শেহবাজ বলেন, তিনি চান পিটিআই পরবর্তী সরকারে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং তিনি এ বিষয়ে ইমরান খানের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী।
'আসুন আমরা আগের সব কিছু ভুলে যাই, ক্ষমা করে দেই—সবাই হাতে হাত মিলিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করি', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'ব্যক্তিস্বার্থকে বিসর্জন দেই, ব্যক্তিগত রাগের কারণগুলোকে পাশে সরিয়ে রাখি'।
দিনের শুরুতে আদিয়ালা কারাগারে ইমরান খান পিএলএম-এন বা পিপিপির সঙ্গে সহযোগিতার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেন।
ইসলামাবাদে অবস্থিত এই কারাগারে একটি শুনানির সময় উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিককে তিনি বলেন, 'আমরা পিএমএল-এন বা পিপিপি—কারও সঙ্গেই বসব না।'
দুই দলের যৌথ সম্মেলন অনেক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। বিশেষ করে, পরবর্তী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো নিয়ে তেমন কিছুই বলা হয়নি। সংশ্লিষ্টদের মতে, পদগুলো নিয়ে আরও দরকষাকষির সম্ভাবনা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শেহবাজ উল্লেখ করেন, তিনি তার ভাই নওয়াজ শরীফকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন।
ভোটগ্রহণের দিন মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখায় ভোট ও ফলাফল প্রকাশে কারচুপির অভিযোগ ওঠে। ভোট গণনায় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায়, যা অস্বাভাবিক।
ইমরান খান মঙ্গলবার বলেন, 'শুরুতে আমরা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে যাব। এরপর আমরা জোট নিয়ে চিন্তা করব'।
এর আগে, পিপিপির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি জানান, তিনি তার বাবা আসিফ জারদারিকে প্রেসিডেন্ট পদে আবারও দেখতে চান।
'তিনি আমার বাবা দেখে আমি এটা বলছি না। আমি বলছি কারণ দেশ এখন বড় ধরনের শঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং যদি কারও এই আগুন নেভানোর সক্ষমতা থাকে, তাহলে সেটা আসিফ আলি জারদারি', যোগ করেন তিনি।
Comments