এককভাবে বেশি আসনে বিজয়ী হয়েও কারাগারেই থাকবেন ইমরান?
অনিশ্চয়তাতেই থাকছে পাকিস্তানের রাজনীতি। দেশটির জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের তিন দিন পরও এর চূড়ান্ত ফল জানা যায়নি।
প্রথমে মনে হচ্ছিল কারাবন্দি ইমরান খানই হয়ত সরকার গঠনে সমর্থ হবেন। দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না দেওয়া ইমরানের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছেন। তবুও কি তিনি কারাগারেই থেকে যাবেন?
সবশেষ পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সময় যেন ইমরানবিরোধীদেরই অনুকূলে।
দেশটির গণমাধ্যম সূত্রে এখন পর্যন্ত যে ফলাফল পাওয়া গেছে তাতে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। জোট গঠনের পথে হাঁটতে হচ্ছে সবাইকেই।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৩৩৬ আসনের মধ্যে সরাসরি নির্বাচন হয় ২৬৬ আসনে। বাকি ৭০টির মধ্যে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ১০ আসন।
তিন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল ২৬৩ আসনে।
আজ রোববার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন'র প্রতিবেদনে দেখা যায়—২৬৩ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫৬ আসনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রাথমিক ফলাফলে ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৩ আসন, নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ (পিএলএম-এন) পেয়েছে ৭৩ ও বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪টি আসন।
দেশটির সরকার গঠনে প্রয়োজন অন্তত ১৩৪ আসন।
এমন পরিস্থিতিতে এক সময়ের বৈরী পিএলএম-এন ও পিপিপি মিলে সরকার গঠন করার সম্ভাবনার কথাই বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ডন'র হিসাবে এখন এই দুই দলের আসন ১২৭টি। সেই জাদুকরী সংখ্যা থেকে তারা সামান্য পিছিয়ে।
আজ পাকিস্তানের স্থানীয় সময় ভোররাত ১২টা ১১ মিনিটে পিএলএম-এন'র তথ্যসচিব মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক্স বার্তায় জানিয়েছেন—গতকাল পিএলএম-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ ও পিপিপির সহসভাপতি আসিফ জারদারির বৈঠক থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। দল দুটি আরও আলোচনায় রাজি হয়েছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও তিনি এক্স বার্তায় জানান।
ডন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পিএলএম-এন ও পিপিপির মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পাশাপাশি ১৭টি আসন পাওয়া এমকিউএম-পির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন পিএলএম-এন নেতারা।
গতকাল পিপিপি নেতা বিলওয়াল বলেছিলেন, পিএলএম-এন'র সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগির বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি।
এ দিকে, আজ সারা পাকিস্তানে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ইমরানের পিটিআই। হয়ত দলটি বুঝতে পারছে তাদের ক্ষমতায় ফেরার আশা ক্রমশই ক্ষীণ হয়ে আসছে।
মরিয়ম আওরঙ্গজেবের এক্স বার্তায় জানা গেছে আজ রোববার আবারও আলোচনায় বসবে পিএলএম-এন। আজই হয়ত জানা যেতে পারে কে হচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্লেষকরা আরও মনে করেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলেও মূলত সরকার গড়ে-ভাঙে দেশটির সেনাবাহিনী।
Comments