কেন আলোচনায় বাদামি পেঙ্গুইন ছানা পেস্তো

পেস্তো। ছবি: সি লাইফ অ্যাকুরিয়ামের সৌজন্যে

বয়স মাত্র নয় মাস, শরীরজুড়ে নরম বাদামি পশম; ওজন সাড়ে ২২ কেজি আর লম্বা প্রায় তিন ফুট। এরই মধ্যে সে উচ্চতায় তার বাবা-মাকে ছাড়িয়ে গেছে!

বলছি পেঙ্গুইন ছানা পেস্তোর কথা, যার বাস অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের সি লাইফ অ্যাকুরিয়ামে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে পেস্তো, অ্যাকুরিয়ামের ভেতর তার দুলকি চালে হেঁটে চলার অনেকগুলো ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। কোনো কোনোটিতে রয়েছে তার বাবা-মায়সহ অন্য পেঙ্গুইনদের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের দৃশ্যও।

সাধারণত পেঙ্গুইনের কথা ভাবলেই মনে পড়ে সাদা-কালো শরীরের কথা। কিং পেঙ্গুইনরা বাদামি পালকে আবৃত শরীর নিয়ে জন্মায়। কিছুদিন বয়স গড়াতেই যখন তারা সাঁতার শিখে যায়, ওই বাদামি পালকও ঝরে পড়তে শুরু করে। এই ফ্লেজিং প্রক্রিয়ার পরেই পেঙ্গুইন পায় তার চিরাচরিত চেহারা।

সাদা-কালো এই প্রাণীর যৌন পরিচয় বা লিঙ্গ চোখে দেখে নির্ণয় করা সম্ভব নয়, বলা হয় এরা সেক্সুয়ালি মনোমরফিক। একটি পেঙ্গুইন পুরুষ নাকি নারী, তা জানতে হলে পায়ের আঙুল থেকে নিতে হয় এক ফোঁটা রক্ত আর সেটি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যায় তার সেই পরিচয়।

এখন প্রশ্ন হলো, বাদামি পশমে মোড়া তিন ফুট লম্বা পেস্তো ছেলে না মেয়ে?

এই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে সি লাইফ অ্যাকুরিয়ামের ইনস্টাগ্রাম পেজে। যেখানে প্রকাশ করা হয়েছে পেস্তোর জেন্ডার রিভিলিং ভিডিও। সেখানে দেখা যায়, সি লাইফের কর্মীরা একটি কেক ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন। সমুদ্র থিমের ওপর ভিত্তি করে তৈরি ওই কেকটির ওপর ফনড্যান্ট দিয়ে বানানো ছোট্ট একটি পেঙ্গুইনও দাঁড়িয়ে আছে। যখন কেকটি কাটা হলো, দেখা গেল চকলেট কেকের প্রতি স্তরে রয়েছে উজ্জ্বল নীল রঙের ক্রিম।

এর অর্থ, পেস্তো একটি পুরুষ পেঙ্গুইন।

সাধারণত পেঙ্গুইনের লিঙ্গীয় পরিচয় বের করা ও তা সবাইকে জানানোর কাজ করেন সি লাইফের কিপার মিশেলা স্মেল। পেস্তোর পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি জানালেন, তার সবসময়ই মনে হতো যে পেস্তো ছেলেই হবে। ফ্লেজিং শেষ হলে তার শরীর কিছুটা সংকুচিত হবে এবং তাকে বেশ হালকা-পাতলা দেখাবে। তা ছাড়া সে ইতোমধ্যে উচ্চতায় বাবাকে ছাড়িয়ে গেছে, ফলে ফ্লেজিংয়ের পর নিঃসন্দেহে সে হবে দারুণ আকর্ষণীয়।

এরই মধ্যে পেস্তো তার জীবনের নতুন দিগন্তে হাঁটতে শুরু করেছে, ঝরতে শুরু করেছে তার বাদামি পশম। শিগগিরই অ্যাকুরিয়ামের সবচেয়ে বড় ও বয়সী পেঙ্গুইন বাবা ব্লেকের কাছ থেকে নিতে শুরু করবে সাঁতারের পাঠ।

মিশেলা স্মেল বলেন, 'কিছু কিছু পেঙ্গুইন কিশোরবেলা থেকেই স্বাধীনচেতা হয়ে ওঠে। আমার ধারণা পেস্তোও তার জীবনের বালক পর্যায়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। সবকিছু ঠিক থাকলে শিগগিরই আমরা তার দুঃসাহসিক সব কর্মকাণ্ড দেখতে পাব।'

এবার জেনে নিই, আদুরে পেস্তো রোজ কী কী খায়।

পেস্তোর প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় থাকে ৩০টির বেশি মাছ, যা তাকে মোট চার বেলায় খাওয়ানো হয়। এই পরিমাণ সাধারণ যেকোনো পেঙ্গুইনের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

আর যেহেতু সে এখনো ছোট, তাই কিছু সম্পূরক খাবারও পায় তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে। তবে যে খাবারই তারা খায়, সেখান থেকে প্রচুর বর্জ্য বের হয়।

মিশেলা স্মেল বললেন, পেঙ্গুইন প্রতি ১৫ মিনিট পরপর মলত্যাগ করে। ফলে যখন যারা এদের রক্ষণাবেক্ষণ করেন, তাদের দিনের বড় সময় কাটে বর্জ্য পরিষ্কারের কাজে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

অনুবাদ করেছেন শেখ সিরাজুম রশীদ

Comments

The Daily Star  | English
rohingya-migration

Rohingyas fleeing Arakan Army persecution

Amid escalating violence in Myanmar’s Rakhine State, Rohingyas are trespassing into Bangladesh every day, crossing the border allegedly to escape the brutality of Myanmar’s rebel group, the Arakan Army (AA).

8h ago