ওজন বাড়ায় যেসব ফল ও সবজি

ওজন বাড়ায় যেসব সবজি ও ফল
ছবি: সংগৃহীত

শরীরের ওজন বাড়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকে। তবে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এমন কোনো সবজি ও ফল রয়েছে কি না, যা ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখছে তা অনেকেই বুঝতে পারেন না।

কোন কোন সবজি ও ফল ওজন বাড়াতে পারে, চলুন জেনে নিই স্পেশালাইজড গ্যাস্ট্রোলিভার কেয়ারের পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহানের কাছ থেকে।

 

যেসব সবজি ওজন বাড়ায়

পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, মাটির নিচে জন্মানো যেসব সবজি রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সুগার কনটেন্ট বা শর্করা বেশি থাকে। এ কারণে ওজন বাড়ে। যেমন- মাটির নিচে জন্মানো আলু, মুলা, গাজর, মিষ্টি আলু, কচুর লতি, কচুর মুখি ইত্যাদি। শুধু ওজন বাড়ার জন্যই নয়, যারা ডায়াবেটিসের রোগী তাদেরও এই ধরনের সবজি খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

পানি জাতীয় সবজি খেলে ওজন বাড়ে না। কারণ সেগুলোতে সুগার কনটেন্ট কম থাকে। মূলত ক্যালরি বেশি, সুগার কনটেন্ট বেশি এমন সবজি ওজন বাড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। যেমন-

. মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলু খেতে মিষ্টি হয়। এটিতে শর্করার পরিমাণ অনেক বেশি। মিষ্টি আলু ক্যালরি ও সুগার বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে ওজন বাড়তে পারে।

২. সাদা আলু: আলুতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ অনেক বেশি, যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। আলুতে থাকা ক্যালরি ও সুগার ওজন বাড়াতে পারে।

৩. কচু জাতীয় খাবার: কচুর লতি, কচুর মুখি এগুলো মাটির নিচে হয়। এতে কার্বোহাইড্রেট, শর্করা ও ফাইবার থাকে, যা ওজন বাড়ায়।

৪. মিষ্টি কুমড়া: যদিও মিষ্টি কুমড়া মাটির নিচে হয় না, এর স্বাদ চিনি জাতীয় বা মিষ্টি লাগে খেতে। এই সুগার যদি পরিমাণে বেশি খাই, আমাদের শরীরে ফ্যাটযুক্ত হয়। এই অতিরিক্ত ক্যালরিই ফ্যাট হিসেবে ওজন বাড়ায়।

৫. শালগম, মূলা: মাটির নিচে জন্মানো শালগম ও মূলা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ওজন বাড়ে।

৬. গাজর: গাজর ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে। অনেক সময় আমরা এটি কাঁচা কিংবা সালাদ হিসেবে খাই। যার ফলে শরীর সরাসরি শর্করা গ্রহণ করে নেয়। আবার হালুয়া তৈরি করে খাওয়ায় সময় এতে অতিরিক্ত চিনি যুক্ত করার ফলে ক্যালরির পরিমাণ আরো বেশি বেড়ে যায়। সুতরাং রান্না করে কিংবা কাঁচা যেকোনো উপায়েই গাজর ওজন বাড়ায়।

৭. ভুট্টা: ভুট্টা বা বেবি কর্ন কিছুটা মিষ্টি স্বাদযুক্ত। পরিপক্ক ভুট্টা, কর্নফ্লাওয়ারে ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে, যা ওজন বাড়াবে।

যেসব ফল ওজন বাড়াতে পারে

পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, প্রায় সব ধরনের মিষ্টি জাতীয় ফল ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে। গ্রীষ্মকালীন ফল আম, কাঁঠাল, লিচুর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে সুগার, গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ থাকে। পরিমাণের চেয়ে বেশি খেলে এসব ফল ওজন বাড়াবে।

১. আম: পাকা আমে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে, ক্যালরিও বেশি। মাঝারি আকারের একটি আম খাওয়া ভালো, আর বড় আকারের হলে খাওয়ার পর হাঁটাহাঁটি করতে হবে। আর ডায়াবেটিসের রোগীরা মাঝারি আকারের আমের অর্ধেক খেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আম অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়ার কারণে ওজন বেড়ে যেতে পারে।

২. লিচু: অনেক বেশি পরিমাণে সুগার থাকে লিচুতে, যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

৩. কলা: কলায় কার্বোহাইড্রেট, সুগার ও গ্লুকোজ রয়েছে, যা ওজন বাড়িয়ে দেয়।

৪. কাঁঠাল, তরমুজ, পেঁপে, ড্রাগন: মিষ্টিজাতীয় ফল কাঁঠাল, তরমুজ, পেঁপে ও ড্রাগন ফল অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে ওজন বাড়তে পারে।

৫. খেজুর: খেজুর দুই কিংবা তিনটার বেশি সাধারণত খাওয়া যায় না। এতে ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে, তাই পরিমাণে বেশি খেলে ওজন বাড়ে।

৬. কিশমিশ: শুকনো আঙুর বা কিশমিশে শর্করা ও ক্যালরি বেশি থাকায় ওজন বাড়াতে পারে।

৭. আনারস: মিষ্টি আনারসে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে, যা ওজন বাড়ায়।

৮. ডাব: ডাবের পানি শরীরের ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে না। কিন্তু ডাবের শাসে, নারকেলে শর্করা ও ফ্যাট বেশি থাকে। তাই ডাবের শাস, নারকেল বেশি পরিমাণ খাওয়ার কারণে ওজন বাড়তে পারে।

৯. আতা: আতা ফল সুগার ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ, যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

পুষ্টিবিদ ইসরাত জাহান বলেন, আমাদের দেশে ঋতু অনুযায়ী যেসব সবজি ও ফল পাওয়া যায় সেগুলো ওই পরিবেশে শরীরের জন্য উপকারী। গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা শীতকালে যেসব রোগব্যাধি হয় সেইসময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উপযোগী সবজি ও ফল পাওয়া যায়। তাই ঋতুভিত্তিক সবজি ও ফল সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। ওজন যাতে না বাড়ে সেজন্য মাটির নিচে জন্মানো ও মিষ্টিজাতীয় সবজি ও ফল কম খেতে হবে। খাওয়ার সময় অবশ্যই পরিমাণ খেয়াল রাখতে হবে। যেকোনো কিছুই পরিমাণের চেয়ে বেশি খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

 

Comments

The Daily Star  | English
Starlink satellite

How to order your Starlink device from Bangladesh

Bangladeshi customers can place orders directly through Starlink’s official website at starlink.com. 

31m ago