নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েলের সম্মতি, যাচাই করছে হামাস: যুক্তরাষ্ট্র

গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতি চালুতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে ইসরায়েল।
আজ শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস জানিয়েছে, প্রস্তাবে তাদের দাবিগুলো পূরণ না হলেও তারা এটি খতিয়ে দেখছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারকে জানান, ইসরায়েল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের উপস্থাপিত চুক্তিতে সম্মতি দিয়েছে।
তবে নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।

অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, ইসরায়েল এই প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তিতে প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও গাজায় মানবিক ত্রাণের পরিমাণ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রয়টার্সকে জানান, তারা প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করছে এবং এর খুঁটিনাটি যাচাই করে দেখবে।
তিনি আরও জানান, এই চুক্তির শর্তগুলো ইসরায়েলকে মাথায় রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং এতে পুরোপুরি যুদ্ধ বন্ধ, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও হামাসের দাবি অনুযায়ী ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কোনো অঙ্গীকার নেই।
এর আগেও হামাস ও ইসরায়েলের পরস্পর বিরোধীতার কারণে একাধিকবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনা ভেস্তে গেছে।
এ বছরের মার্চে দুই মাসের বিরতির পর নতুন চুক্তির বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হতে না পারায় নতুন করে গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের দাবি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ ও এই সংগঠন যেন আর কখনো সামরিক বা প্রশাসনিক সক্ষমতা অর্জন করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, যুদ্ধ বন্ধের অঙ্গীকার দেওয়ার আগেই গাজায় আটক বাকি ৫৮ জিম্মিকে ফিরিয়ে দিতে হবে—এটাও ইসরায়েলের অন্যতম দাবি।
তবে হামাস তাদের অস্ত্র জমা দিতে রাজি হয়নি এবং বলেছে, ইসরায়েলকে গাজা থেকে সব সেনা সরিয়ে নিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে যুদ্ধ বন্ধের অঙ্গীকার করতে হবে।
বুধবার উইটকফ সাংবাদিকদের বলেন, ওয়াশিংটন খুব শিগগির ইসরায়েল-হামাসের কাছে গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য নতুন শর্তসম্বলিত একটি চুক্তিপত্র পাঠাবে।

উইটকফ সে সময় বলেন, 'দীর্ঘমেয়াদী সমাধান, সাময়িক যুদ্ধবিরতি এবং শান্তিপূর্ণভাবে ওই সংঘাত নিরসনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমি ইতিবাচক ও আশাবাদী।'
সম্প্রতি গাজায় নির্বিচার গণহত্যা চালানোর দায়ে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েছে ইসরায়েল।
সাধারণত ইউরোপের যেসব দেশ প্রকাশ্যে ইসরায়েলের সমালোচনায় করত না তারাও যুদ্ধ বন্ধ ও ত্রাণ উদ্যোগ বাড়াতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। ওই হামলায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত ও ২৫০ জন জিম্মি হন। সেদিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনো অব্যাহত আছে। ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু।
Comments