ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর মুখপাত্র নিহত, ইরানের নিন্দা-শোক

হিজবুল্লাহর প্রয়াত গণমাধ্যম সংযোগ কর্মকর্তা আফিফ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হিজবুল্লাহর প্রয়াত গণমাধ্যম সংযোগ কর্মকর্তা আফিফ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

লেবাননের রাজধানী বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহর মুখপাত্র ও গণমাধ্যম সংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আফিফ নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় শোক ও নিন্দা প্রকাশ করেছে ইরান।

আজ সোমবার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই আফিফের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আফিফ ছিলেন 'লেবানিজদের কণ্ঠস্বর এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জনগণের মত প্রকাশের অধিকার প্রতিষ্ঠার অভিযানের প্রতীক।'

আফিফকে হত্যার ঘটনাকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে 'একটি আগ্রাসী ও জঙ্গি কার্যক্রম' বলে অভিহিত করেন বাঘাই। তিনি জানান, 'ফিলিস্তিন ও লেবাননে তাদের অপরাধগুলোকে যারা প্রকাশ্যে আনতে চায়, তাদেরকে নিশ্চুপ করিয়ে দেওয়ার ইসরায়েলি অভিযানের সর্বশেষ বলি আফিফ'।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই। ছবি: এএফপি
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই। ছবি: এএফপি

গাজা ও লেবাননে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের সংশ্লিষ্টদের হত্যার দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ও জাতিসংঘের কাছে দাবি জানান।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৮৮ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন।

রয়টার্স জানায়, রাস আল–নাব্বা এলাকায় চালানো হামলায় আফিফ নিহত হন।

যে ভবনে হামলা চালানো হয়েছিল, সেটি ছিল সিরিয়ার বাথ পার্টির লেবানন শাখার কার্যালয়। লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির (এনএনএ) খবরে বলা হয়, বাথ পার্টির লেবানন শাখার সেক্রিটারি জেনারেল আলি হিজাজি হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম কর্মকর্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ হামলায় একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন নিখোঁজ আছেন। ঘটনাস্থল থেকে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে।

হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন আফিফ। বেশ কয়েক বছর ধরে আফিফ হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।

হিজবুল্লাহর প্রয়াত গণমাধ্যম সংযোগ কর্মকর্তা আফিফ। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হিজবুল্লাহর প্রয়াত গণমাধ্যম সংযোগ কর্মকর্তা আফিফ। ফাইল ছবি: রয়টার্স

প্রায়ই নাম না প্রকাশ করে তিনি স্থানীয় ও বিদেশি সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহ করতেন বলে জানা গেছে।

আফিফ অল্প বয়সে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন। ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের যুদ্ধের সময়য় হিজবুল্লাহর টেলিভিশন চ্যানেল আল-মানারের তথ্য পরিচালক হিসেবে পরিচিতি পান আফিফ।

হিজবুল্লাহ প্রধান নিহত হওয়ার পর বেশ কয়েকটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গত মাসের এক সংবাদ সম্মেলনে আফিফ জানিয়েছিলেন যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনে হিজবুল্লাহর ড্র্রোন হামলা চালানো হয়েছে।

Comments