১০৩ জ্বর নিয়ে সারেং বউ সিনেমার শুটিং করেছিলেন ফারুক

চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে চিত্রনায়ক ফারুকের সুপারহিট সিনেমা আছে অসংখ্য। কালজয়ী সিনেমাও আছে বেশ কয়েকটি। 

সোনালি দিনের সাড়া জাগানো সিনেমার নায়ক ফারুক অসুস্থ হওয়ার আগে তার বাসায় দ্য ডেইলি স্টার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেছেন বিভিন্ন বিষয়ে। সে সময়ের স্মৃতিচারণের কিছু অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।

প্রখ্যাত সাংবাদিক ও লেখক শহীদুল্লাহ কায়সারের সারেং বউ উপন্যাস থেকে নেওয়া সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন ফারুক। সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন  খ্যাতিমান পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন।

এ দেশের গ্রামীণ জীবনের সংগ্রাম, সুখ, দুঃখের গল্প এবং একজন সারেংয়ের জীবনের দারুণ এক উপাখ্যান এঁকেছেন পরিচালক সারেং বউ সিনেমায়।

নায়ক ফারুক বলেছিলেন, 'পরিচালক আমার কাছে গল্পটি বলার পর ভালো লেগে যায়। গল্প শুনেই নিজেকে সারেং হিসেবে কল্পনা করতে শুরু করি। তারপর সবরকম প্রস্তুতি নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই।'

'সিনেমাটি মুক্তির পর খুব প্রশংসা পেয়েছিলাম সবার কাছ থেকে। আমার অভিনীত  কদম চরিত্রটির প্রতি দর্শকদের ভালোবাসা জন্মায়। কবরীর চরিত্রটির প্রতিও  নিখাদ ভালোবাসা দেখান দর্শকরা। সারেং বউ মুক্তির এত বছর পরও নতুন প্রজন্মের সিনেমাভক্তরা প্রশংসা করেন। আমি মনে করি এ সবই প্রাপ্তি। এ সবই অর্জন। ভালো সিনেমার প্রতি ভালোবাসা কখনো কমে না।'

সারেং বউ সিনেমার শুটিংয়ের সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলছিলেন, 'একটা ঘটনা কখনো ভুলতে পারব না। আউটডোরে শুটিং করছিলাম আমরা। একদিন আমার খুব জ্বর এলো। শুটিং করার মতো অবস্থায় ছিলাম না। আবার না করেও উপায় ছিল না। কেননা, সেদিন কবরী শুটিং শেষ করে ঢাকায় ফিরে যাবেন। কবরীর জন্য জ্বর নিয়েই আমাকে শুটিং করতে হবে! না করব তা-ও পারছিলাম না।'

'কী আর করব? জ্বর নিয়ে শুটিং করতে হবে। মনে কষ্ট নিয়ে শুটিং করতে রাজি হই। ১০৩ জ্বর নিয়ে সারেং বউ সিনেমার শুটিং করেছিলাম সেদিন। জ্বরে শরীর পুড়ে যাচ্ছিল। শুটিং চলাকালে ইউনিটের কাউকে বলিনি জ্বরের কথা। সিনেমার ক্ষতি হয়, এটা ভেবেই বলিনি,' বলেন ফারুক।

'শুটিং শেষ হয়। কবরী ঢাকায় ফিরে যান। আমি মন খারাপ করে থেকে যাই। এই স্মৃতি এখনো আমার মনে আছে। এভাবেই আমরা শুটিং করেছি।'

আরেকটি সিনেমার স্মৃতিচারণ করেন তিনি। 'নয়নমনি সিনেমার শুটিং করেছিলাম আউটডোরে। পুরোপুরি গ্রামে। আমার বিপরীতে নায়িকা ববিতা। ববিতা আমার দেখা আধুনিক ও স্মার্ট নায়িকা। শহুরে চরিত্রে তাকে খুব সুন্দর মানায়। সেই ববিতা গ্রামীণ চরিত্রে অভিনয় করে অবাক করে দিলেন সবাইকে।'

তিনি বলেন, 'নয়নমনি ছাড়াও গোলাপি এখন ট্রেনে, লাঠিয়ালসহ আরও সিনেমায় আমি ও ববিতা জুটি বেঁধেছিলাম। সবগুলো সুপারহিট হয়েছিল। আজ শুধু নয়নমনি সিনেমার কথা বলছি। নয়নমনি আমজাদ হোসেন পরিচালিত ব্যবসাসফল সিনেমা। মাসের পর মাস নয়নমনি হলে চলেছে। আজও এই সিনেমার গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে।'

'সুজন সখী সিনেমাটিও আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে আছে। সুজন সখী সুপারহিট হয়েছিল। এই সিনেমার একটি গান - সব সখীরে পার করিতে নেব আনা আনা, আজও মানুষ ভোলেনি। কবরী ছিলেন নায়িকা। গ্রামে শুটিং করেছিলাম। মুক্তির পর কী যে অবস্থা হয়েছিল! এই সিনেমাটিও মাসের পর মাস হলে চলেছে। রেকর্ড সৃষ্টি করেছিল সুজন সুখী।'

'আমার ভালো লাগে এই ভেবে যে, লোকে বলে সোনালি দিনের সিনেমা। সোনালি দিনের সিনেমার আমিও একজন। সোনালি দিনের সিনেমায় আমারও একটুখানি অবদান আছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Tariffs

Economic lessons from the tariff war

Our understanding of tariffs might not be complete.

10h ago