নায়ক ফারুক যে অজানা কথা বলেছিলেন

অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। ছবি: স্টার

কিংবদন্তি নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক আজ সোমবার সকাল ৮:৩০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

চলচ্চিত্রে 'মিয়াভাই' খ্যাত এই অভিনেতা ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট নিজের ৭৩তম জন্মদিনে দ্য ডেইলি স্টারকে নায়করাজ রাজ্জাকের অজানা একটা ঘটনার কথা বলেছিলেন। লেখাটা ২০২১ সালের ১৮ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত হয়েছিল। সেটি আবার পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

ফারুক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকা ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে নায়করাজ রাজ্জাক মাথা ফাটিয়ে রক্তাক্ত করেছিলেন আজাচৌ, মানে বিখ্যাত বিনোদন সাংবাদিক ও লেখক আহমেদ জামান চৌধুরীর। যদিও নায়করাজ রাজ্জাক উপাধি তিনিই দিয়েছিলেন নায়ককে। পুলিশ কেস পর্যন্ত হয়েছিল এ ঘটনায়। তখনকার চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব খান আতাউর রহমান থেকে শুরু করে নারায়ণ ঘোষ মিতা, কাজী জহিরসহ অনেকেই কিছুই করতে পারছিলেন না এ বিষয়ে।'

'একসময় সবাই সরে গিয়েছিলেন রাজ্জাক ভাইয়ের পাশ থেকে। ঘটনাটা খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছিল। একটা মহল চক্রান্ত করছিল, রাজ্জাক ভাইকে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। তার ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল তারা। সেই সময় চাইলে আমিও প্রতিশোধ নিতে পারতাম। কারণ, আমার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী ছিলেন তিনি, কিন্তু আমি সেটা করিনি।'

'রাজ্জাক ভাই একদিন আমাকে বললেন, "আমার মানসম্মান বাঁচাও ফারুক।" তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে ঘটনা খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমার এক সহকর্মী জনপ্রিয় নায়ককে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে, তার মানসম্মান নষ্ট করবে, এটা ভেবে কষ্ট পাচ্ছিলাম খুব। তখন আমি আজাচৌর সঙ্গে বেশি বেশি যোগাযোগ শুরু করলাম। নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখতাম তার। ঘটনার তৃতীয় দিনের রাতে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল। এরমধ্যেই রাত ১২টার পর রাজ্জাক ভাইকে তার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে আসলাম। সেখানেই আজাচৌ চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। দুজন-দুজনকে দেখে চমকে গেলেন। তাদের মেলানোর জন্য অনেক নাটক করেতে হয়েছিল। এই ঘটনার কথা অনেকেই জানেন না, এটা আমি করেছিলাম। কোনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে দেইনি রাজ্জাক ভাইকে।'

'মোট ৩টা সিনেমা "এরাও মানুষ", "মায়ের আঁচল" ও "সখী তুমি কার" সিনেমায় অভিনয় করেছি রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে। আমার কিছুটা বড় হলেও বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল তার সঙ্গে।'

এইচ আকবর পরিচালিত 'জলছবি' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে নায়ক ফারুকের বড়পর্দায় অভিষেক হয়। ১৯৭৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৬ সালে ভূষিত হয়েছেন আজীবন সম্মাননায়।

ফারুক অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে 'সারেং বৌ', 'লাঠিয়াল', 'সুজন সখী', 'নয়নমণি', 'মিয়া ভাই', 'গোলাপী এখন ট্রেনে', 'সাহেব', 'আবার তোরা মানুষ হ', 'আলোর মিছিল', 'দিন যায় কথা থাকে', 'সখী তুমি কার', 'কথা দিলাম' ও 'সূর্য গ্রহণ' ইত্যাদি।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

13h ago