আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দেশে রিজার্ভ কম

আইএমএফ

সদ্য বিদায়ী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী ন্যূনতম রিজার্ভ ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রাখার লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বছর শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, দেশটির রিজার্ভ লক্ষ্যমাত্রা তুলনায় ৫৮ মিলিয়ন ডলার কম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ রাখার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছিলাম।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের নূন্যতম রিজার্ভ আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি। এই লক্ষ্য পূরণ বাধ্যতামূলক নয়।'

'সরকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারলে আরও ভালো হতো' উল্লেখ করে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তবে এটা দেখে ভালো লাগছে যে তারা রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।'

তার মতে, গত নভেম্বরের তুলনায় ডিসেম্বরে রিজার্ভ বেড়েছে। আইএমএফের কাছ থেকে ঋণের বাকি অর্থ পেতে বাংলাদেশকে আগামী মাসগুলোয় এই গতি ধরে রাখতে হবে।

আইএমএফ ম্যানুয়াল অনুসারে, গত রোববার বাংলাদেশের মোট রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার।

গত বছরের জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি যখন বাংলাদেশের জন্য চার দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদন করে, তখন তারা সেই বছরের ডিসেম্বরের জন্য ন্যূনতম রিজার্ভ ২৬ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছিল। পরে রিজার্ভ দ্রুত কমে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রাটি সংশোধন করা হয়।

আইএমএফের নথি থেকে জানা গেছে, গত ডিসেম্বরে রিজার্ভ ধরা হয়েছিল ১৭ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। আগামী মার্চে এই লক্ষ্যমাত্রা ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার ও জুনে ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার।

ঋণ কর্মসূচির অধীনে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ পেতে সরকারকে যে ছয়টি লক্ষ্য অর্জন করতে বলা হয়েছিল এর মধ্যে দুটি পূরণ করতে না পারায় এই সংশোধনটি এসেছে। সেই দুটি লক্ষ্য রিজার্ভ ও রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। এরপরও আইএমএফ দ্বিতীয় কিস্তির ছাড় দেয়।

লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও রিজার্ভের পরিমাণ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কিনতে শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি ১০৪ কোটি ডলার কেনা হয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে সংকটে থাকা ইসলামী ব্যাংক থেকে কেনা ২০ কোটি ডলারও আছে।

একই সময়ে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোকে ডলার দেওয়া চলমান রেখেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক অন্যান্য ব্যাংকের কাছে ৬৭০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত দুই বছরে ১৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিক্রি করায় রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনসহ অন্যান্য সরকারি সংস্থার আমদানি বিল পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলো বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার সহায়তা নিচ্ছে।

আইএমএফের ৪২ মাসের ঋণ কর্মসূচির পরবর্তী পর্যালোচনা আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে। তখন বাংলাদেশ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Students suffer as NCTB fails to deliver books

Even two weeks into the new academic year, primary and secondary students across the country have not been able to fully start academic activities, with 25.15 crore or 63 percent of the required textbooks remaining undelivered.

10h ago