সংস্কারের জন্য অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব আইএমএফের

ফাইল ছবি রয়টার্স

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে অতিরিক্ত এক বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দিলেও অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন, চলতি হিসাবের ঘাটতি কমিয়ে আনা ও ডলারের মজুত বাড়াতে কমপক্ষে দুই বিলিয়ন ডলারের জন্য চেষ্টা করছে সরকার।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গত অক্টোবরে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক বৈঠকের ফাঁকে বিদ্যমান ঋণ কর্মসূচির অধীনে ওয়াশিংটনভিত্তিক বহুপাক্ষিক ঋণদাতা সংস্থার কাছে নতুন করে ৩ বিলিয়ন ডলার চেয়েছিলেন।

আলোচনার পর বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ও বিদ্যমান ঋণের চতুর্থ কিস্তির কাঠামোগত সংস্কার শর্ত পালন নিয়ে পর্যালোচনা করতে মাসের শুরুতে ১৩ সদস্যের একটি আইএমএফ মিশন বাংলাদেশে আসে।

আলোচনায় জড়িতদের কাছ থেকে দ্য ডেইলি স্টার জানতে পেরেছে ঋণের পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি মিশনের সঙ্গে আলোচনার পর অতিরিক্ত সংস্কার শর্তের বিনিময়ে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।

তবে সরকার অন্তত দুই বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব ধরে রেখেছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান ঋণ কর্মসূচির অধীনে বাকি চারটি ধাপের প্রতিটিতে ১ বিলিয়ন ডলার করে আসবে।

গত বছরের জানুয়ারিতে, আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে। এ পর্যন্ত এটি তিন কিস্তিতে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন দিয়েছে।

এদিকে আইএমএফ মিশন বিভিন্ন পলিসি ডকুমেন্টস চূড়ান্ত করতে আজ এবং আগামী ১৫ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।

পলিসি ডকুমেন্টসের মধ্যে রয়েছে সরকারের অর্থনৈতিক ও আর্থিক নীতির স্মারকলিপি, লেটার অব ইনটেন্ট, টেকনিক্যাল মেমোরেন্ডাম ও সমঝোতা স্মারক।

আইএমএফ অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার উদ্যোগে সন্তুষ্ট হলেও পরবর্তী ঋণের কিস্তির জন্য নির্দিষ্ট শর্ত আরোপ করবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

এবার আইএমএফ রাজস্ব আদায় বাড়ানো, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সার খাতে ভর্তুকি কমানো এবং ব্যাংকিং খাতের সুশাসনের ওপর জোর দিচ্ছে।

রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরের বাজেটে কর অব্যাহতি সংক্রান্ত সরকারের পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে আইএমএফ।

এছাড়া, আইএমএফ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পলিসি ও প্রশাসনকে আলাদা করতে এবং একাধিক ভ্যাট হার কমানোর শর্ত আরোপ করতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং ব্যাংকিং খাতের ক্ষেত্রে, আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ, ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং দেউলিয়া আইন সংশোধনের জন্য বিভিন্ন শর্ত আরোপ করতে পারে।

ভর্তুকি কমানো এবং মূল্য সমন্বয়ে সরকারের পরিধি কমিয়ে আনতে শর্তও দিতে পারে আইএমএফ।

জুন পর্যন্ত সরকারের বকেয়া ছিল প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে।

আগামী বছরের জুনের মধ্যে বকেয়া অর্ধেক এবং আগামী অর্থবছরে বাকি টাকা পরিশোধের লক্ষ্য রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের।

দাম সমন্বয়ের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম আরও বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।

তবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চলতি অর্থবছরে দাম সমন্বয় করতে রাজি নয় কারণ এটি মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

তবে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ব্যয় কমাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

আগামী ১৭ ডিসেম্বর অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আইএমএফ মিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Fire breaks out at Korail slum

Five fire engines are rushing to the spot after the blaze originated around 4:15pm

24m ago