তদন্ত প্রতিবেদন

চট্টগ্রামে ট্যাংকারে আগুনের পেছনে অদক্ষতা-অবহেলা, মেলেনি নাশকতার প্রমাণ

গত ১৩ অক্টোবর বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বি-এলপিজি সোফিয়া ট্যাংকারে আগুন লাগে। স্টার ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম বন্দরে গত মাসে দুই এলপিজি ট্যাংকারে আগুনের পেছনে কোনো নাশকতার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে মাদার ভেসেলের কর্মীদের অদক্ষতা, অবহেলা ও যথাযথ প্রস্তুতির অভাবের কথা উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি।

কুতুবদিয়ায় বহির্নোঙ্গরে অক্টোবরে দুই এলপিজি ট্যাংকারে আগুনের ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটি গত বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনটি এখনো প্রকাশ করা না হলেও যোগাযোগ করা হলে তদন্ত কমিটির প্রধান বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য কমোডর এম ফজলার রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ১৩ অক্টোবর বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন বি-এলপিজি সোফিয়া ট্যাংকারটি মাদার ভেসেল ক্যাপ্টেন নিকোলাস থেকে এলপিজি নেওয়ার সময় দুই জাহাজেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে মাদার ভেসেলের সঙ্গে বি-এলপিজি সোফিয়াকে বেঁধে রাখা দড়িটি ছিঁড়ে যায় এবং ট্যাংকারটি উন্মুক্ত অবস্থায় ভাসতে ভাসতে বেশ দূরে চলে যায়।

তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে কমডোর ফজলার রহমান বলেন, 'আগুন লাগার পেছনে এলপিজি স্থানান্তরের কাজে নিযুক্ত ক্রুম্যানদের অদক্ষতা ও অবহেলা খুঁজে পাওয়া গেছে।'

৯ সদস্যের এই তদন্ত কমিটি আগুনের পেছনে নাশকতা বা উদ্দেশ্যমূলক কোনো কারণ খুঁজে পায়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ফজলার রহমান বলেন, 'দুই জাহাজ বেঁধে রাখা দড়ি ছিঁড়তে শুরু করলেও মাদার ট্যাংকারের ক্রুম্যানরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়। ১২টি দড়ি ছিঁড়ে যেতে ২৫-৩০ মিনিট সময় লেগেছিল। কিন্তু ক্রুম্যানরা কিছু করতে পারেনি।'

'আকস্মিক এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে জাহাজের ক্রুরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এর অর্থ হলো তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা ছিল না,' যোগ করেন তিনি।

অনুসন্ধানের আর বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি তিনি।

তবে তদন্ত কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য নিশ্চিত করেছেন যে, তদন্ত প্রতিবেদনে মাদার ট্যাংকার ক্যাপ্টেন নিকোলাসের ক্রুম্যানদের অবহেলা, দক্ষতার অভাব ও অনুপযুক্ত মুরিং, এই তিন কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, যার কারণে জোয়ারের স্রোতে দড়ি ছিঁড়ে যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জোয়ারের স্রোতের কারণে রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে প্রথম দড়ি ছিঁড়ে যায়। এরপর একের পর এক ছিঁড়তে থাকে। এতে গ্যাস স্থানান্তরের কাজে ব্যবহৃত হোসপাইপের ওপর চাপ তৈরি হয় এবং একপর্যায়ে হোসপাইপ ছিঁড়ে যায়। গ্যাস ছড়িয়ে যাওয়ায় প্রথম মাদার ভেসেল ক্যাপ্টেন নিকোলাসের ডেকে আগুন লাগে। পরে দ্রুত বিএলপিজি সোফিয়াতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

কমিটির এক সদস্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দড়ি ছিঁড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপ্টেন নিকোলাসের ক্রুরা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করেনি। এতে গ্যাস লিক করতে থাকে।'

কমিটি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে তিনটি সুপারিশ করেছে।
প্রথমত, ক্রু সদস্যদের যথাযথ প্রশিক্ষণ, নিখুঁত জয়েন্ট প্ল্যান অপারেশন এবং বন্দরে এ ধরনের কাজের সময় স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব নিয়ম অনুসরণ নিশ্চিত করা।

 

Comments

The Daily Star  | English

Polythene ban: A litmus test for will and eco-innovation

Although Bangladesh became the first country in the world to announce a complete ban on the use of polythene bags in 2002, strict enforcement of the much-lauded initiative has only started taking shape recently.

14h ago