ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক এবি ব্যাংকের ঋণখেলাপি
এবি ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়েছেন আর অ্যান্ড আর অ্যাভিয়েশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) একজন পরিচালক রিক হক সিকদার। আগামী দুই মাসের মধ্যে তিনি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাকে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালকের পদ হারাতে হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এবি ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তি পরিশোধে খেলাপি হয়েছে আর অ্যান্ড আর অ্যাভিয়েশন। রিক হক সিকদার এই প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, তাই খেলাপি হওয়ায় তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালকের পদ হারাতে পারেন।
তিনি আরও জানান, রিক হক সিকদার আর অ্যান্ড আর অ্যাভিয়েশনের মনোনীত পরিচালক হিসেবে ন্যাশনাল ব্যাংকের একজন পরিচালকের দায়িত্বে আছেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক দুই মাসের মধ্যে পাওনা পরিশোধের সময় দিয়ে রিক হক সিকদারকে চিঠি পাঠিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী তার পরিচালকের পদ শূন্য থাকবে।
এ বিষয়ে রিক হক সিকদারের কোনো বক্তব্য থাকলে তা চিঠি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, 'আপনার বক্তব্যের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।'
এ বিষয়ে জানতে রিক হক সিকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি দ্য ডেইলি স্টার।
তবে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল ও ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মেহমুদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ন্যাশনাল ব্যাংকের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান আনোয়ার এহতেশাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এটি রিক হক সিকদারের ব্যক্তিগত বিষয়, তাই ন্যাশনাল ব্যাংকের মন্তব্য করার কিছু নেই।'
এর আগেও, ব্যাংকটির পরিচালকের পদ হারান রিক হক সিকদার। খেলাপি স্ট্যাটাসের কারণে ২০২১ সালে তিনি পদটি হারিয়েছিলেন।
সেবার ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর ছাড়পত্র না পাওয়ায় তার পরিচালকের মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকৃতি জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যান হন।
জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর আগে তার মেয়ে পারভীন হক সিকদার ও দুই ছেলে রিক হক সিকদার এবং রন হক সিকদার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন।
বর্তমানে ব্যাংকটি লোকসান ও উচ্চ খেলাপি ঋণের মধ্যে আছে। ঋণ অনিয়মের কারণে ২০২২ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকের লোকসান হয়েছে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার ওপরে।
এছাড়া, চলতি বছরের জুন শেষে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৩৯১ কোটি ৭২ লাখ টাকায়, যা ব্যাংকটির মোট ঋণের ২২ দশমিক ১৪ শতাংশ।
Comments