ন্যাশনাল ব্যাংকের লোকসান অব্যাহত
উচ্চ খেলাপি ঋণে ভুগতে থাকা ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড টানা দ্বিতীয় বছরের মতো লোকসান করেছে। ২০২৩ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকের লোকসান হয়েছে ১ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা।
এর আগের বছর ন্যাশনাল ব্যাংকের লোকসান ছিল ৩ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। সুতরাং ২০২৩ সালে আগের বছরের চেয়ে লোকসান প্রায় ৫৪ শতাংশ কমলেও লোকসানের অঙ্ক এখনো বেশি।
বর্তমানে ব্যাংকটির ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার কথা বাজারে উঠেছে।
আজ রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় ঋণাত্মক ৪ টাকা ৬৫ পয়সা, যা আগের বছরের ঋণাত্মক ১০ টাকা ১৩ পয়সা থেকে কম।
ন্যাশনাল ব্যাংক ২০১৯ সালে ৪১৯ কোটি, ২০২০ সালে ৩৪৮ কোটি এবং ২০২১ সালে ১৯ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। কিন্তু এরপর খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ায় পরের বছর থেকে দৃশ্যপট বদলে যায়।
১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বেসরকারি ব্যাংকটি ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ক্ষতির মুখে পড়েছিল। কারণ সুদ মওকুফ বাড়ানো এবং ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকটির সুদ আয় কমে যায়।
এ অবস্থায় সুশাসন ফিরিয়ে আনতে গত বছরের ডিসেম্বরে ন্যাশনাল ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্যাংকটি বলছে, ঋণগ্রহীতারা সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ঋণ ও অগ্রিমের সুদ ব্যালান্স শিটের আয় খাতে নেওয়া যায়নি।
এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ঋণ বাবদ উচ্চ সুদ ব্যয় করেছে।
২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৭ টাকা ৩ পয়সা, যা এক বছর আগে ছিল ১৩ টাকা।
ব্যাংকটির নতুন বোর্ড ও নতুন ব্যবস্থাপনা ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
ব্যাংকটি ২০২১ ও ২০২২ সালে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি এবং ২০২৩ সালের লভ্যাংশ নিয়ে কোনো তথ্য দেয়নি।
ব্যাংকটি বর্তমানে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।
২০২২ সাল শেষে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের ২৫ শতাংশ ছিল খেলাপি ঋণ। ২০২২ সালে ব্যাংকটির শ্রেণিকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা, যা ব্যাংকের মোট ঋণ ও অগ্রিমের ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
ডিএসইর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৩ হাজার ২১৯ কোটি টাকা এবং এর রিজার্ভ রয়েছে ১ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা।
Comments