সুদের হার বাড়াচ্ছে ব্যাংকগুলো

ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

একদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি অন্যদিকে আমানতের সুদের হার কমের কারণে আমানতকারীদের অনেককেই ব্যাংকে টাকা রাখতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। আবার সরকারি ও বেসরকারিও ঋণ বাড়ায় ব্যাংকগুলোয় তারল্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ঘাটতি মেটাতে ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়াচ্ছ।

ব্যাংক ভেদে সুদের হারের ভিন্নতা আছে। তবে সার্বিকভাবে, মে মাসে আমানতের বিপরীতে গড় সুদের হার বেড়ে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ হয়। এটি আগের ১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ১ মাস আগেও আমানতের গড় সুদের হার ছিল ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারিখাতে ঋণ ও বেসরকারিখাত থেকে ঋণের চাহিদা বেড়েছে। তারল্য সংকট বা প্রবাহ বাড়াতে ব্যাংকগুলো বেশি সুদ দিয়ে আমানত নিচ্ছে।'

তিনি আরও বলেন, 'উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে আমানতের সামগ্রিক সুদের হার আরও বাড়তে পারে।'

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতি ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে উন্নীত হয়। ১ বছর আগে এটি ছিল ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

অর্থাৎ, আমানতের প্রকৃত রিটার্ন নেতিবাচক রয়ে গেছে। মূল্যস্ফীতির কারণে সঞ্চয়কারীরা ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, গত জুনে ঋণের পাশাপাশি ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদের হারও আগের মাসের তুলনায় বেড়েছে।

৩৬৪ দিনের ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার গত জুনে বেড়ে ৭ দশমিক ৯০ শতাংশ হয়েছে। ১ মাস আগে তা ছিল ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। ৫ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদের হার ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ হয়েছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্যাংকিং খাতে তারল্য কম আছে। অনেক ব্যাংক তাই আমানত আকৃষ্ট করতে উচ্চহারে সুদ দিচ্ছে।'

'আমানতের সুদের হার ঋণের সুদের হারের চেয়ে দ্রুত গতিতে বাড়ছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'আমানতকারীদের আকৃষ্ট করতে কিছু ব্যাংক ৯ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে।'

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক শাহ মো. আহসান হাবিব ডেইলি স্টারকে জানান, ২০২০ সালের এপ্রিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হারের সীমা আরোপের কারণে আমানতকারীরা চাপে ছিলেন। যদিও বিনিয়োগ ও অর্থনীতির ওপর সামগ্রিক প্রভাব বিবেচনায় তা গ্রহণযোগ্য ছিল।

তিনি বলেন, 'উচ্চ মূল্যস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে আমানত থেকে প্রকৃত রিটার্ন নেতিবাচক হয়ে গেছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমানতের হার বৃদ্ধি প্রত্যাশিত।'

অধ্যাপক হাবিব মনে করেন, বাজারে ন্যায্যতা নিশ্চিত করার দৃষ্টিকোণ থেকে আমানতের সুদের হার বাড়ানোর উদ্যোগ ইতিবাচক।

'ঋণের সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বেসরকারি বিনিয়োগের ওপর চাপ বাড়বে, তবে আমানতকারীরা লাভবান হবেন,' বলেন অধ্যাপক হাবিব।

Comments

The Daily Star  | English

Constitution should be updated

Dr Kamal Hossain, emeritus president of Gono Forum, yesterday recommended updating the constitution.

21m ago