তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপরে
উজানে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এতে শঙ্কায় পড়েছেন তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষ।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বলছে, উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তার পানির জেরে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের গোবর্ধান এলাকায় পাউবোর স্পার বাঁধ ধসার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আজ সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পানি বেড়ে দুপুর ১২টায় তা বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। উজান থেকে পাহাড়ি ঢল আসার কারণে তিস্তায় পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গোবর্ধান এলাকার স্পার বাঁধটিতে তিস্তার পানির চাপ বেড়েছে। কিন্তু, এটি ধ্বসে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।'
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিস্তা নদীর পানি হ্রাস পাওয়ায় রোববার রাত থেকে বন্যাদুর্গত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছিল। সোমবার সকালে কিছু বানভাসি মানুষ তাদের বাড়িতেও ফিরে যান। কিন্তু, দুপুর ১২টায় তিস্তার পানি হঠাৎ বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বানভাসি মানুষকে আবারও নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি এভাবে ওঠা-নামা করায় তিস্তাপাড়ের লোকজন মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন।'
গড্ডিমারী গ্রামের বানভাসি দিনমজুর তবিয়ার রহমান (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমার নিচে, আবার দুপুরে বিপৎসীমার অনেক ওপরে। আকস্মিক তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় আমার ঘরের আসবাবপত্র ভেসে গেছে। আমার ৫টি ছাগলের মধ্যে একটি বানের পানিতে ভেসে গেছে। কিছু আসবাবপত্র নিয়ে এখন আমরা সরকারি রাস্তার ওপর আশ্রয় নিয়েছি।'
আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধান গ্রামের বানভাসি ফজলার রহমান (৬৫) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হঠাৎ করে তিস্তার পানি বিপৎসীমার অনেক ওপরে ওঠায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। তিস্তায় বেড়েছে পানির চাপ। পানির চাপে স্পার বাঁধটি হুমকিতে পড়েছে। এই স্পার বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কয়েক হাজার গ্রামবাসিকে বন্যার পানিতে ভাসতে হবে।'
Comments