উচ্চশিক্ষার জন্য গবেষণাপত্র কতটা গুরুত্বপূর্ণ, না থাকলে উপায়

উচ্চশিক্ষা, গবেষণাপত্র
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রসহ বহির্বিশ্বে উচ্চশিক্ষায় আবেদনের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো স্যাম্পল পেপার কিংবা গবেষণাকাজ থাকা। গবেষণাপত্রটি ভালো কোনো জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেল হতে পারে, কিংবা আপনার থিসিস, মনোগ্রাফের কোনো পেপারওয়ার্ক হতে পারে। সব ক্ষেত্রেই যে গবেষণা কাজটি প্রকাশিত হতে হবে, এটি জরুরি নয়। বিশেষ করে যারা সদ্য আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের পরেই উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করেন।

তবে জার্নালে প্রকাশিত আর্টিকেল হোক, কিংবা ভালো মানের থিসিস, আপনার যে গবেষণায় হাতেখড়ি আছে এমন কাজ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বহির্বিশ্বে উচ্চশিক্ষার সময়টাতে একজন শিক্ষার্থীকে গবেষণার জন্যই প্রস্তুত করে তোলা হয়। আপনার যে ফান্ডিং, সেটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবেই দেওয়া হয়। সামাজিক বিজ্ঞানের অধীনে যেই কলেজ বা বিভাগগুলো রয়েছে, সেখানে ফান্ডিং টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টশিপের ওপর নির্ভর করলেও, পাশাপাশি অনেক গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী কোনো অধ্যাপকের সঙ্গে গবেষণাতেও কাজ করেন।

এরপর আসে আপনার নিজের কোর্সওয়ার্ক। আমাদের দেশে উচ্চশিক্ষা অনেকটা লেকচারভিত্তিক বা পরীক্ষাকেন্দ্রিক হলেও যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপে তা এমন নয়। সেখানে প্রতিটি কোর্সেই একটি পুরো গবেষণা প্রস্তাবনা তৈরি করতে হয়। এই প্রস্তাবনার মান ভালো হলে শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে তা কোনো জার্নালে প্রকাশনার জন্য দিয়ে থাকে। আরও একটি বিষয় হলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফারেন্স। ভালো মানের কোনো গবেষণা প্রস্তাবনা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে উপস্থাপন করে থাকে, যা সেখানকার শিক্ষাব্যবস্থার একটি অংশ। এই কনফারেন্সগুলোকে নেটওয়ার্কিংয়ের বেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবেই ধরে নেওয়া হয়, যেখানে বিভিন্ন অধ্যাপক, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ থাকে। তাই আবেদনের সময়েই একটি ভালো মানের গবেষণা বা এ বিষয়ক কাজ থাকলে মনে করা হয়, আবেদনকারীর গবেষণায় হাতেখড়ি আছে এবং পরবর্তীতে অধ্যাপক এই আবেদনকারীর সঙ্গে কাজ করতে পারেন।

এ ছাড়াও, একেকটি সেমিস্টারে যখন আবেদন করা হয়, সেখানে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী থাকে। এই পুরো পোল থেকে সেসব আবেদনকারীকেই বাছাই করা হয়, যাদের ভালো গবেষণা বা প্রকাশনা আছে। এখন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আবেদনকারী ভিন্ন কোনো বিষয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে আগ্রহী, কিন্তু তার গবেষণার কাজটি করা হয়েছে অন্য আরেকটি বিষয়ে। সেক্ষেত্রে আবেদনকারীর এসওপি বা স্টেটমেন্ট অব পারপাসে স্পষ্ট করে উল্লেখ করে দিতে হয় যে, কেন আবেদনকারী বর্তমানে ভিন্ন একটি বিষয়ে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অধ্যাপকের কাজের সঙ্গে শিক্ষার্থীর কাজের বিষয়, গবেষণার মেথড মিলছে কি না। সাধারণত পিএইচডির ক্ষেত্রে প্রফেসরের কাজের সঙ্গে মিল রেখেই নিজের গবেষণার আগ্রহ উল্লেখ করতে হয়।

এখন আসা যাক যাদের রিসার্চ পেপার বা কোনো পাবলিকেশন নেই তাদের ক্ষেত্রে। আমরা সাধারণত যে শিক্ষাব্যবস্থায় অভ্যস্ত, সেখানে গবেষণার অনেক বিষয়ই ঠিকমতো হাতেখড়ি দিয়ে শেখানো হয় না। বিশেষ করে স্কোপাস ইন্ডেক্সড অন্তর্ভুক্ত যেই জার্নালগুলো, সেখানে একটি ভালো মানের গবেষণা প্রকাশের ক্ষেত্রে বেশ সময় লেগে যায়। একজন কেবল আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীর পক্ষে সেই মানের গবেষণা প্রকাশনা আসলেই সময়ের ব্যাপার। বিশেষ করে যদি সামাজিক বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়গুলোর কথা বলা হয়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কোর্স ওয়ার্কের অ্যাসাইনমেন্ট, অ্যানালাইসিস, কিংবা কোনো এনজিও বা গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকলে সেই কাজের রিপোর্ট বা প্রোজেক্ট পেপারও দেওয়া যেতে পারে।

আমার বেশ কিছু সহকর্মীকে দেখেছি, সাংবাদিকতায় থাকাকালীন ভালো মানের প্রতিবেদন, ফিচার, স্যাম্পল রাইটিং হিসেবে আবেদনের সময়ে জমা দিতে। কেননা গবেষণা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও পুরো আবেদনে আরও কিছু বিষয় থাকে, যার সব কিছু মিলিয়েই নির্ধারিত হয় কোন শিক্ষার্থী ফান্ডের জন্য উপযুক্ত। এর সব কিছু মিলিয়েই একজন আবেদনকারীকে গ্রেডিং করা হয়। তাই গবেষণার পাশাপাশি অন্যান্য যে বিষয়গুলো যেমন: এসওপি, সিভি, রেকমেন্ডেশন লেটার সবকিছুর প্রতিই গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।

Comments

The Daily Star  | English

Panic grips NBR officials

The relief that followed the end of a disruptive strike by tax officials at the National Board of Revenue has quickly given way to anxiety and regret, as the government started a clampdown on those involved.

14h ago