পুড়ছে পৃথিবী, মরছে মানুষ
চরম আবহাওয়া পরিস্থিতিতে ইউরোপে গত ৪০ বছরে মারা গেছেন প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ। শুধু প্রাণহানিই নয়, এ কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৫৬০ বিলিয়ন ইউরোর বেশি।
গত বুধবার ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সির (ইইএ) বরাত দিয়ে ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর এ তথ্য জানায়।
শুধু শীতপ্রধান ইউরোপই নয়, বৈশ্বিক উষ্ণতায় পুড়ছে পুরো পৃথিবী। বহু বছর ধরেই জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে মেরু অঞ্চলে বরফ গলা ও সাগরের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হলেও বা পরিবেশবাদীদের ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করা সত্ত্বেও দিন দিন বেড়ে চলছে দূষণ।
বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে একদিকে যেমন শীতের সময়কাল কমে আসছে অন্যদিকে দীর্ঘ হচ্ছে গ্রীষ্ম ও তীব্র হচ্ছে গরম। সারা পৃথিবীতে বয়ে যাওয়া চলমান তাপপ্রবাহ ও এর কারণে বিপর্যস্ত জনজীবন নিয়ে এই প্রতিবেদন।
ইউরোপে প্রাণহানি ও আর্থিক ক্ষতি
ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সির প্রতিবেদন অনুসারে, ১৯৮০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত 'বন্যা, ঝড়, তাপ ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন।'
এ ছাড়া, ৫৬০ বিলিয়ন ইউরোর আর্থিক ক্ষতির মাত্র ১৭০ বিলিয়ন ইউরোর ইনস্যুরেন্স ছিল।
সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, তাপপ্রবাহের কারণে ৮১ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে। এ কারণে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১৫ শতাংশ।
ফ্রান্স টোয়েন্টিফোরের সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত গ্রীষ্মে ইউরোপে তাপপ্রবাহের কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মানুষের মৃত্যু হলেও তা ইইএর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি।
সংস্থাটি জানিয়েছে, গত বছরের জুলাইয়ে মারা গেছেন ৫৩ হাজার মানুষ। মাসভিত্তিক গড় হিসাবে ২০১৬-১৯ সালের তুলনায় তা ১৬ শতাংশ বেশি। তবে সব মৃত্যুই সরাসরি তাপপ্রবাহের সঙ্গে যুক্ত নয় বলেও জানানো হয়েছে।
স্পেনে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গত জুন, জুলাই ও আগস্টে ৪ হাজার ৬০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সংস্থাটির তথ্য অনুসারে, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০২২ সালে মরুকরণের ঝুঁকি ৫ থেকে ৬ গুণ বেড়েছে। একই বছরে দাবানলে সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে।
ইইএর বিশেষজ্ঞ আলেক্সান্ডার কাজমিয়েরকজাক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'আরও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে জরুরিভিত্তিতে চরম আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট বিপর্যয়গুলো মোকাবিলা করতে হবে।'
ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে খরা
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনর প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে গত এপ্রিলে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী দেশ স্পেন, মরক্কো ও আলজেরিয়া এবং পার্শ্ববর্তী দেশ পর্তুগালে খরায় ফসল পুড়ে যায় এবং অনেক জলাধার শুকিয়ে যায়।
সংবাদমাধ্যমটির 'জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়া এমন চরম আবহাওয়া পরিস্থিতি হয়ত দেখা যেত না' শীর্ষক প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে বলা হয়, মরক্কোর কোনো কোনো অঞ্চলে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল, যা 'জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়া প্রায় অসম্ভব'।
বিজ্ঞানীদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতা ছাড়া এমন চরম পরিস্থিতি প্রাকৃতিকভাবে ঘটতে পারে ৪০ হাজার বছরে মাত্র একবার।
প্রভাবশালী সাময়িকী ফরেন পলিসির এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়, 'যে ভূমধ্যসাগরকে আমরা চিনি তা হারিয়ে যাচ্ছে'।
এতে আরও বলা হয়, সবুজ বেলাভূমি ও আনন্দদায়ক বাতাসের জন্য খ্যাত ভূমধ্যসাগরের উপকূল চরম আবহাওয়ার কারণে শিরোনাম হচ্ছে। দুর্বিষহ গরম, দাবানল ও শুকিয়ে যাওয়া নদীর জন্য পরিচিত হয়ে উঠছে এই অঞ্চলটি।
প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছর স্পেন ও পর্তুগাল ১ হাজার বছরের বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক আবহাওয়ায় পড়েছিল। গরম থেকে বাঁচতে গ্রিস ও ফ্রান্স থেকে হাজার হাজার মানুষ ঘর ছেড়েছিলেন।
সে সময় স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছিলেন, 'দেখতে পাচ্ছি, জলবায়ু পরিবর্তন মানুষ হত্যা করছে। আমাদের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করছে। আমাদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা, খামার নষ্ট করে দিচ্ছে।'
সাইবেরিয়ায় তাপপ্রবাহ
পৃথিবীর অন্যতম শীতল অঞ্চল রাশিয়ার সাইবেরিয়াও তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না। পরিবেশবিষয়ক সাময়িকী 'নেচার'র সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবেরিয়ায় বর্তমানের গরম গত ৭ হাজার বছরেও দেখা যায়নি।
২০২০ সালের তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সে সময় সাইবেরিয়ার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
একই সময়ের তথ্য দিয়ে সিএনএন জানায়, বিজ্ঞানীদের ভাষ্য—সাইবেরিয়ায় এমন তাপপ্রবাহের পেছনে জলবায়ু সংকট দায়ী থাকার সম্ভাবনা আছে। কেননা, মানুষের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন না হলে আর্টিক অঞ্চলে এমন পরিবর্তন দেখা যেতে পারে প্রতি ৮০ হাজার বছর পর পর।
উত্তর গোলার্ধে খরা
গত গ্রীষ্মে উত্তর আমেরিকা থেকে ইউরোপ হয়ে চীন পর্যন্ত বিস্তৃত উত্তর গোলার্ধ খরায় কেটেছে। এর ফলে ফসলহানি, পানির সংকট ও দাবানল দেখা গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় খরা দেখা দিয়েছে। গরমের কারণে চীন ও ইউরোপে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চরম আবহাওয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো উত্তর গোলার্ধের গত বছরের গ্রীষ্ম। এই তাপপ্রবাহ দীর্ঘ সময় বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে অবস্থান করেছিল।
পূর্ব আফ্রিকায় খরা
বিশ্বের সবচেয়ে দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল 'আফ্রিকার শিং' হিসেবে খ্যাত পূর্ব আফ্রিকায় গত টানা ৩ বছর ধরে খরা চলছে। ফলে, সেই অঞ্চলে সোমালিয়া, ইথিওপিয়া ও কেনিয়ার বিস্তৃত এলাকায় ফসলহানির পাশাপাশি পানির তীব্র সংকট চলছে। গবাদিপশুগুলো খাবারের অভাবে শুকিয়ে মরছে।
এই খরাকে গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করে সিএনএন জানায়, এর প্রভাব মানুষের ওপর চরমভাবে পড়ছে। সেখানে মারা গেছেন অন্তত ৪০ হাজার মানুষ। এ ছাড়া, ২ কোটি মানুষ পড়েছেন তীব্র খাদ্য সংকটে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় সোমালিয়ার প্রতিনিধি গত এপ্রিলে সিএনএনকে বলেছিলেন, 'আমাদের দেশের অর্ধেক মানুষ খরাপীড়িত। ৩০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।'
'আমাদের দেশের মানুষ বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মূল্য ক্রমাগত দিয়ে যাচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, খরার কারণে আফ্রিকার পূর্বাঞ্চলে ৫ কোটি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিস্তৃত পরিসরে আরও ১০ কোটি মানুষের ক্ষতি হচ্ছে।
গরমের অতিষ্ঠ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনজীবন
দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর ওপর দিয়ে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে তা '২০০ বছরে একবার দেখা যায়' বলে শিরোনাম করেছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তা প্রায়ই দেখা যাবে বলেও এতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, রেকর্ড ভাঙা গরমে অতিষ্ঠ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জনজীবন। গরমের কারণে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে। কৃষকরা খেতে যেতে পারছেন না। ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতিতে পড়ছেন।
ক্লাইমেট অ্যানালিটিকসের জলবায়ুনীতি বিভাগের আঞ্চলিক প্রধান ড. ফাহাদ সাইদ সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমসকে বলেন, 'এই রেকর্ডগড়া গরমের কারণে থাইল্যান্ড, চীন ও দক্ষিণ এশিয়ায় সাধারণ মানুষকে আরও অনেক বছর স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগতে হবে।'
'এটি জনজীবনকে হুমকিতে ফেলেছে' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'বিশেষ করে দরিদ্র মানুষকে ভুগতে হবে সবচেয়ে বেশি।'
রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এ বছর ভিয়েতনামে গরম ৪৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় মাগওয়ে অঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুধু তাই নয়, এ বছর পর্যটনসমৃদ্ধ থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। লাউসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ প্রসঙ্গে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ের প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী দু দাং গণমাধ্যমটিকে বলেন, 'ভয়ঙ্কর আবহাওয়া। প্রচুর ঘামছি। এত ঘামছি যে মনে হচ্ছে আমি পানিতে ডোবা ইঁদুর।'
দক্ষিণ এশিয়ায় তীব্র তাপপ্রবাহ
দক্ষিণ এশিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ, বিশেষ করে বাংলাদেশে গরমের কথা পাঠকদের কাছে বিশেষভাবে তুলে ধরা বাহুল্যই বটে।
বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে সিএনএনর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশে যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে 'হয়ত মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তা অন্তত ৩০ গুণ বেড়ে এমনটি হয়েছে'।
অর্থাৎ, কল-কারখানার ধোঁয়া, বনাঞ্চল উজাড়সহ মানবসৃষ্ট দূষণ না হলে এমনটি হতো না।
গত শুক্রবার বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে ঢাকার গণমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টার জানায়, গত এপ্রিল ও মে মাসে দেশটিতে তাপমাত্রার যে রেকর্ড হয়েছে তা মানিয়ে নেওয়া ছাড়া গতি নেই।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশটির কয়েকটি অঞ্চলের ওপর দিয়ে গত এপ্রিলে ২৪ দিন ও মে মাসে ২২ দিন তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে।
শুধু তাই নয়, এই ২ মাসে দেশটিতে গড় বৃষ্টি ছিল ৩০ বছরের মধ্যে কম।
ভারতের তাপপ্রবাহ নিয়ে গত ৩০ মে জার্মানির গণমাধ্যম ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়, 'ভারতের তীব্র তাপপ্রবাহ অবর্ণনীয় কষ্টের কারণ হয়েছে'।
প্রতিবেদন অনুসারে, এ বছর ভারতের কোনো কোনো অঞ্চলে পারদ উঠেছিল ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বিশেষজ্ঞরা দুর্বল জনগোষ্ঠীদের জরুরিভিত্তিতে রক্ষার আবেদন করেছিলেন।
একই দিনে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে ভারতের গরমকে তুলনা করা হয় 'জ্বলন্ত চুলার' সঙ্গে।
গত শনিবার ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত ২ দিনে দেশটির উত্তরপ্রদেশে প্রচণ্ড গরমে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছেন। তাদের সবার বয়স ৬০ বছরের বেশি।
পাকিস্তানে তীব্র গরমের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ জুন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দেশটির জনগণকে রক্ষার আবেদন করে। সংস্থাটির প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার সংকটপীড়িত দেশটির জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়।
গত এপ্রিলে দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ অঞ্চল তীব্র তাপপ্রবাহে 'পুড়েছিল' বলে জানা যায় দেশটির সংবাদমাধ্যম সূত্রে।
তীব্র গরমের কারণ ও ভবিষ্যৎ
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে 'জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ ও প্রভাব' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—জীবাশ্ম জ্বালানি তথা তেল, গ্যাস ও কয়লাকে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ বলা যেতে পারে। কেননা, বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের ৭৫ শতাংশ ও কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণে এগুলোর অবদান ৯০ শতাংশ।
এতে আরও বলা হয়, গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো পৃথিবীকে চাদরের মতো মুড়িয়ে রাখে বলে সূর্যের তাপ বায়ুমণ্ডলে আটকে যায়। ফলে পৃথিবীতে তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং জলবায়ুর পরিবর্তন দেখা দেয়।
প্রতিবেদন অনুসারে, জানা ইতিহাসের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি বেড়ে যাচ্ছে। এটি প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। মানবজাতিসহ পুরো প্রাণিজগতের অস্তিত্ব হুমকিতে ফেলেছে।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদিও এর আগের জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে সূর্যের অবদান ছিল কিন্তু তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে যে, চলমান জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সূর্যকে দায়ী করা যায় না।
গবেষণা সংস্থাটির পূর্বাভাস—পৃথিবী ক্রমাগত উষ্ণ হতে থাকবে এবং এর প্রভাব হবে ভয়াবহ।
Comments