ভাষা শিক্ষা

ডুয়োলিংগো পরীক্ষা কী, কীভাবে দেবেন

ডুয়োলিংগো পরীক্ষা কী, কীভাবে দেবেন

ডুয়োলিংগো মূলত একটি আমেরিকান শিক্ষা প্রযুক্তি, যা কি না অ্যাপের মাধ্যমে ভাষা সনদ প্রদান করে থাকে। যে অ্যাপটি আমরা সাধারণত ব্যবহার করি, তা এই প্রযুক্তির মূল চর্চার ক্ষেত্র। 

ভোকাবুলারি, ব্যাকরণ, উচ্চারণ এবং শ্রবণ দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হয় ডুয়োলিংগোতে– যার মাধ্যমে ভাষা শিক্ষায় আগ্রহী ব্যবহারকারীরা নতুন একটি ভাষায় দক্ষ হয়ে উঠতে পারেন। 

বিশেষভাবে বাংলা ভাষাভাষীদের ইংরেজি শিক্ষার জন্য এখন ডুয়োলিংগোতে আলাদা একটি অংশ রাখা হয়েছে। 

ভাষা শিক্ষার সহজ ও সাবলীল উপায়গুলোর মধ্যে বর্তমান সময়ে ডুয়োলিংগোর বেশ কদর আছে। এই অ্যাপের সবচেয়ে ভালো দিক হচ্ছে এর ভাষা শিক্ষার অধ্যায়গুলো ছোট ছোট, তাই প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে একটু সময় বের করে চর্চা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। 

এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা যাতে আগ্রহ না হারিয়ে ফেলে সেজন্য অ্যাপটি তৈরি করা হয়েছে গেমের মতো করে। 

ইংরেজি ভাষা শেখার জন্য বিশেষ ডুয়োলিংগো টেস্ট রয়েছে, যাতে অনলাইনে অংশগ্রহণ করা যায়। বিশ্বব্যাপী এই টেস্টের গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, জার্মানি এবং অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন ডুয়োলিংগো টেস্টের ফলাফল গ্রহণযোগ্য। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কোর্সেরার হালনাগাদ তথ্য থেকে জানা যায়, বর্তমানে এতে ১ হাজার ৮৭১টি প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত। 

যদিও এই টেস্টের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যক্তির ইংরেজি দক্ষতা যাচাই। এ ছাড়া বিভিন্ন চাকরির আবেদন ও ব্যবহারিক জীবনেও এই টেস্ট অত্যন্ত ফলপ্রসূ। 

ডুয়োলিংগো এক্সাম অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবার কারণে স্থানিক বা সময়গত কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর সনদটিও অনলাইনে ডাউনলোড করে নিয়ে খুব কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো যাবে। 

এই পরীক্ষাটি অংশগ্রহণকারীর দক্ষতার সঙ্গে মানানসই। অর্থাৎ, প্রতিটি উত্তর প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী প্রশ্নের মান নির্ধারিত হয়। কেউ যদি একের পর এক সঠিক উত্তর দিয়ে যান, তাহলে পরবর্তী প্রশ্ন আরও কঠিন হবে। আবার ভুল উত্তর দিলে পরবর্তী প্রশ্ন কিছুটা সহজ করা হবে। তার মানে পরীক্ষার মধ্যেও অংশগ্রহণকারী নিজেকে আরও ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। 

পরীক্ষার সময় সাধারণত এক ঘণ্টা, তবে কেউ চাইলে আরও কম সময়ে কম প্রশ্নের মাধ্যমে এতে অংশ নিতে পারেন। ডুয়োলিংগোর একটি আপগ্রেডেড সেকশনও আছে, যাতে পরীক্ষার্থীরা ১০ মিনিটের একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে পারেন এবং বিশদ প্রশ্নের ক্ষেত্রে তাদের উত্তরগুলো রেকর্ড করার মাধ্যমে জমা দিতে পারেন। পরীক্ষার ফলাফল ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়। 

পরীক্ষার প্রস্তুতি

ডুয়োলিংগো টেস্ট অনেকাংশেই আইএলটিএস বা টোফেল-এর সমমানের। তাই এ পরীক্ষার প্রস্তুতি ঠিক সেভাবেই নিতে হবে, যেভাবে আইএলটিএসের জন্য নেওয়া হয়। অনুশীলনের জন্য ডুয়োলিংগোর প্রতিদিনের লক্ষ্য পূরণ, স্যাম্পল টেস্টে অংশ নেওয়া, কম্পিউটার অ্যাডাপ্টিভ টেস্ট সম্পর্কে ধারণা গ্রহণ এবং অবশ্যই প্রতিদিন চর্চা চালিয়ে যাওয়াই হবে ডুয়োলিংগো টেস্টের অন্যতম প্রধান প্রস্তুতি। 

অন্যান্য ইংরেজি দক্ষতা যাচাইয়ের পরীক্ষার মতো এতেও ব্যক্তির ৪টি দক্ষতা— অর্থাৎ বলা, শোনা, পড়া এবং লেখার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ফি ৪৯ মার্কিন ডলার।

ফলাফল

ডুয়োলিংগো টেস্টের মোট নাম্বার হচ্ছে ১০ থেকে ১৬০। পাঁচের গুণিতক নিয়মে এই নাম্বার ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। কেউ যদি ১২০-এর বেশি নাম্বার পায়, তাহলে ফলাফল বেশ ভালো হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়। 

এ ছাড়া আইএলটিএসের সঙ্গে তুলনা করে দেখলে ডুয়োলিংগোর ১১৫-১২০ হচ্ছে আইএলটিএস স্কোর ৭, ১৩৫-১৪০ হচ্ছে ৮ এবং ১৫৫-১৬০ নাম্বারকে আইএলটিএস স্কোর ৯ ধরা হবে। 

যদি কেউ এমন কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান, যেখানে আইএলটিএস ও টোফেলকে এগিয়ে রাখা হয়– সেক্ষেত্রে ডুয়োলিংগো স্কোর যেন ১১০-এর নিচে কোনোভাবেই না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

 

তথ্যসূত্র: জেডুকাডটকম, হুররেএডুটেকডটকম, কোরসেরা

 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

16h ago