‘সংখ্যালঘুদের উৎসবকে তুচ্ছ হিসেবে দেখছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়’

ছবি: সংগৃহীত

পূজার ছুটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ২টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। তাদেরকে সপ্তমীর দিনেও পরীক্ষা ও অনুশীলন করতে হবে— এমনটাই নিয়ম করেছেন বিভাগের শিক্ষকরা।

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম আবর্তনের ফাইনাল পরীক্ষা এবং নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম আবর্তনের চলমান ফাইনাল পরীক্ষার অনুশীলন করতে হবে শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষকদের সিদ্ধান্তের বাইরে কথা বলতে চান না বলেই জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। বিভাগ ২টিতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী থাকলেও সবার কথা বিবেচনা করে অনেকে সাধুবাদও জানিয়েছেন এই সিদ্ধান্তকে।

তবে, এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ওই ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমরা কথা বলেছিলাম ম্যাডামের সঙ্গে। কিন্তু বুঝতে পারিনি যে ওই দিন পূজার ছুটি থাকবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদের দায় থেকেই যায়। কারণ পূজার মতো একটা বিষয় তাদের মাথায় রাখা উচিত। বিষয়টি বিবেচনা না করেই পরীক্ষার রুটিন ঠিক করা হয় কীভাবে?'

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, তারা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন সেশনজটের কারণে। এ জন্যই হয়তো শিক্ষকরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, তাদের এই সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মনে করছেন না তারা।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব বলেন, 'সংখ্যালঘুদের উৎসবকে তুচ্ছ ও অপ্রয়োজনীয় হিসেবে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয়।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রতি বছর ধর্মীয় উৎসবের ছুটিতে অবিরত ক্লাস-পরীক্ষা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের আনন্দ বিনষ্ট যেমন করে, একই সঙ্গে এমন কাজ দেশে সংখ্যালঘুদের অধিকারকে তুচ্ছ ও অপ্রয়োজনীয় হিসেবে দেখার যে মানসিকতা, সেটাকেই প্রতিষ্ঠিত করে। রাষ্ট্র সবাইকেই স্বাধীনভাবে ধর্ম ও ধর্মীয় উৎসব পালনের অধিকার দেবে, নয়ত কাউকেই দেবে না।'

এ বিষয়ে জানতে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ওই ব্যাচের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শফিক উর রহমান বলেন, 'ছেলেমেয়েরা সেশনজটের কারণে পিছিয়ে পরেছে। তাই পরীক্ষা নিয়ে নেওয়াটা ভালো মনে করছি।'

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হালিমা বেগমকে গতকাল কল করা হলে তিনি কিছুক্ষণ পর ফোন দিয়ে কথা বলবেন জানিয়ে কল কেটে দেন। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে একাধিকবার কল করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Drug smuggling via air, land routes on the rise

This grim picture emerges as Bangladesh, like other countries around the world, observes the International Day Against Drug Abuse and Illicit Trafficking today.

13h ago