আপেল কেটে রাখলে কেন বাদামি হয়
সকালে স্কুলে আসার সময় তোমার মা আপেল কেটে দিয়েছিল। টিফিনের সময় বক্স খুলে দেখলে, সেই সুন্দর আপেলের টুকরোগুলো বাদামি হয়ে গেছে। কিন্তু, কেন এমন হলো?
বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে 'এনজাইমেটিক ব্রাউনিং'। যা জৈবরাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার কারণে হয়। ধরো তুমি একটি আপেল টুকরো টুকরো করে কাটলে। তাহলে কী হবে? তখন উদ্ভিদ টিস্যু অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসবে। তারপর এটি পলিফেনল অক্সিডেস (পিপিও) নামে পরিচিত একটি এনজাইমে চাপ প্রয়োগ করে। এতে আপেলের মধ্যে থাকা পলিফেনলগুলো অক্সিডাইজ হয়। আর তাতে নতুন রাসায়নিক (ও-কুইনোনস) তৈরি হয়। যা পরে অ্যামিনো অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে বাদামি রঙের মেলানিন তৈরি করে। এভাবেই একটি কাটা আপেল বাদামি হয়ে যায়।
বিভিন্ন আপেলে বিভিন্ন পরিমাণে প্রাথমিক এনজাইম এবং পলিফেনল থাকে। আর এ কারণেই কোনো আপেল কম আবার কোনো আপেল বেশি বাদামি হয়।
আচ্ছা শোন, এই 'এনজাইমেটিক ব্রাউনিং' কিন্তু শুধু আপেলে হয় না। নাশপাতি, কলা এবং বেগুনেও 'এনজাইমেটিক ব্রাউনিং' হয়। তাই এগুলো কাটা হলে দ্রুত বাদামি হয়ে যায়। এছাড়াও কফি, চা, এবং কোকোর গাঢ় রঙের জন্যেও 'এনজাইমেটিক ব্রাউনিং' দায়ী।
তবে, তোমরা চাইলে আপেলের বাদামি রঙ কমাতে পারবে। আপেলকে এই প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখতে কাটা টুকরোগুলো ফ্রিজে রেখে দাও। কিংবা লেবু বা আনারসের রস মাখিয়ে নিতে পারো। কারণ লেবু ও আনারেসর রসে থাকা অ্যাসিড এই প্রতিক্রিয়াকে ধীর করে দেয় এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এটিকে বাধা দেয়। এছাড়াও মধু, ক্যারামেল বা চিনির সিরাপ দিয়েও টুকরোগুলো ঢেকে রাখলে অক্সিজেনের সংস্পর্শে যেতে বাধা পায়। এভাবে আপেলের কাটা টুকরো বাদামি হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারবে।
সূত্র: ব্রিটানিকা
Comments