অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ক্যাশ মেমরি কেন মুছবেন, কীভাবে মুছবেন

অনেকেই ফোনের স্টোরেজ বা গতি বাড়াতে বারবার প্রতিটি অ্যাপের ক্যাশ ক্লিয়ার করেন। আবার কারও কারও ধারণা, ক্যাশ মুছে ফেললে ফোনের ওপর বাজে প্রভাব পড়বে।
অ্যান্ড্রয়েড ফোন ক্যাশ মেমরি কেন মুছবেন, কীভাবে মুছবেন
ছবি: সংগৃহীত

প্রতিদিন নানা কাজে ব্যবহার করা হলেও হাতের মুঠোফোনটির অনেক অংশই অজানা থেকে যায়। এরই মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ক্যাশ ক্লিয়ারের বিষয়টি। 

অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে ক্যাশ ক্লিয়ার মাঝে মাঝে বেশ বিতর্কের বিষয়ও হয়ে ওঠে। অনেকেই ফোনের স্টোরেজ বা গতি বাড়াতে বারবার প্রতিটি অ্যাপের ক্যাশ ক্লিয়ার করেন। আবার কারও কারও ধারণা, ক্যাশ মুছে ফেললে ফোনের ওপর বাজে প্রভাব পড়বে। আসলে বিভিন্ন অ্যাপের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি আলাদা। কোনো কোনো অ্যাপ যথাযথভাবে ক্যাশ ব্যবহার করে না। কোনো অ্যাপে অতিরিক্ত ক্যাশ জমে গেলে অ্যাপই বন্ধ হয়ে যায়। 

কেন ক্যাশ (Cache) ক্লিয়ার করা দরকার এবং এর মাধ্যমে ফোনের স্টোরেজে আদৌ কোনো পরিবর্তন আসে কি না, তা নিয়েই আজকের এই লেখা। 

অ্যাপ ক্যাশ কী?

ক্যাশ বলতে এক বিশেষ ধরনের স্টোরেজ বোঝায়, যা বিভিন্ন বহুল ব্যবহৃত অ্যাপের ফাইল ধরে রাখে। ক্যাশের কাজ হচ্ছে, পরবর্তীতে যখন এই অ্যাপ ব্যবহার করা হবে– তখন যাতে যথাসাধ্য দ্রুত সময়ে এতে প্রবেশ করা যায়। দ্রুত লোডিংয়ের সুবিধার জন্যই মূলত ক্যাশের উপস্থিতি। যেমন কোনো অ্যাপ থেকে ছবি বারবার ডাউনলোড করে দেখার বদলে সেই অ্যাপের ক্যাশ অংশে যদি ছবি প্রথমবারই ডাউনলোড হয়ে থাকে, তাহলে বারবার ইন্টারনেট ব্যবহারের ভোগান্তি পোহাতে হয় না। যখন ইচ্ছে ফাইলটি খুললেই হয়। এই সুবিধার পাশাপাশি ক্যাশের কারণে আবার ফোনের স্টোরেজ কমে যাওয়ার সমস্যার মুখোমুখিও প্রায়ই হতে হয়। আর সে কারণেই আসে ক্যাশ মুছে ফেলার বিষয়টি। 

যেভাবে 'ক্যাশ ক্লিয়ার' করতে হয়

কখনো কখনো মূল ডেটার সঙ্গে ক্যাশের সিংক্রোনাইজেশন বিগড়ে যায় এবং এর ফলে সবশেষ হালনাগাদ করা তথ্য পাওয়া যায় না। এ ছাড়া মাঝে মাঝে ক্যাশ অংশে মাত্রাতিরিক্ত তথ্য জমা হয়ে যায়, যে কারণে অ্যাপের কার্যক্ষমতা কমে যায়। অ্যাপ ধীরগতির হয়ে যায়। এমনটা হলে অ্যাপের ক্যাশ পরিষ্কার করা প্রাথমিক সমাধানগুলোর একটি। 

ক্যাশড ডাটা দীর্ঘস্থায়ী নয়, তাই তা মুছে ফেললেও কোনো ক্ষতি নেই। নির্দিষ্ট কোনো অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনের ক্যাশ পরিষ্কার করতে চাইলে সেটিংস অংশে যেতে হবে। এরপর সেই অ্যাপে স্টোরেজ অঞ্চলে গেলেই 'ক্লিয়ার ক্যাশ' অপশনটি পাওয়া যাবে। 

ক্যাশ পার্টিশন কী?

অ্যান্ড্রয়েড ফোনে থাকা প্রতিটি অ্যাপের ফাইলে ঢুঁ মারলেই দুটো অপশন দেখা যায়– ক্লিয়ার ডাটা এবং ক্লিয়ার ক্যাশ। এ ছাড়া 'ক্যাশ পার্টিশন' নামে আরেকটি অংশও থাকে সেখানে। ক্ষণস্থায়ী ফাইলগুলো একপাশে সরিয়ে জমা করে রাখবার কাজটিই করে ক্যাশ পার্টিশন। এতে করে ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলো আরও বেশি কার্যক্ষম হতে পারে। হার্ড ডিস্ক বা নেটওয়ার্কের স্টোরেজ থেকে আনার চাইতে যে ফাইলগুলো বারবার খুলে দেখা হয়, সেগুলোকে কম সময়ে খুঁজে পাবার জন্যই ক্যাশ পার্টিশন। এসব ফাইলের মধ্যে অ্যাপ ইনস্টলেশন ফাইল, অ্যাপ ডাটা, সিস্টেম আপডেট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। 

যেভাবে 'ক্যাশ পার্টিশন ক্লিয়ার' করতে হয়

অত্যন্ত কার্যকর হলেও মাত্রাতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়। এমনটা ক্যাশ পার্টিশনের ক্ষেত্রেও সত্য। তাই মাঝে মাঝে ক্যাশ পার্টিশনও পরিষ্কার করতে হয়। ফোনের গতি বাড়াতে, স্টোরেজ স্পেস খালি করতে, অ্যাপ ক্র্যাশ করা থেকে থামাতে ক্যাশ পার্টিশন পরিষ্কার করা জরুরি। ক্যাশ অংশে অনেক বেশি করাপ্টেড ফাইল থেকে থাকলেও ক্যাশ পার্টিশন পরিষ্কার করা একটি ভালো সমাধান। এ ছাড়া সিস্টেম আপডেট ইনস্টলের সঙ্গে ক্যাশ পার্টিশনের সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষত যেসব অ্যান্ড্রয়েড ফোনে সিস্টেম আপডেটের জন্য সিস্টেম ক্যাশ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোর জন্য। একটি সফল সিস্টেম আপডেটের পর যথাযথভাবে ক্যাশ পার্টিশন পরিষ্কার করে নিলে ভালো। এতে করে আপডেট করা সিস্টেমে পুরনো ফাইলগুলো ব্যবহৃত হবে না

ক্যাশ পার্টিশন পরিষ্কার করতে প্রথমেই ফোনটিকে রিকভারি মোডে নিতে হবে। এতে করে টাচস্ক্রিন কাজ না করতে পারে, সেজন্য ভলিউম বা পাওয়ার বাটন ব্যবহার করতে হবে। রিকভারি মোডে নেবার পর পর্দায় ভেসে ওঠা মেনু থেকে 'ওয়াইপ ক্যাশ পার্টিশন' অপশনটি বেছে নিতে হবে। সিস্টেম ক্যাশ পার্টিশন পরিষ্কার হওয়ার প্রক্রিয় সম্পন্ন হবে। এরপর ফোনটি রিবুট করে নিলেই হবে। 

তথ্যসূত্র: এমইউও, অ্যান্ড্রয়েডপুলিশ, ইজআস

 

Comments