গুলিস্তানে বিস্ফোরণ

‘বন্ধুকে পাইনি, মোবাইলটা পেয়েছি’

ফায়ার সার্ভিস ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির আশেপাশের অংশে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। ছবি: মোস্তফা ইউসুফ/স্টার

ঢাকার গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের পাশে একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ স্বজনদের অপেক্ষায় ভিড় করে আছেন তাদের পরিবার ও বন্ধুরা।

আজ বুধবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে পুরাণ ঢাকার বাসিন্দা মো. আরিফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার বন্ধু মোমিন উদ্দিন সুমনের দোকান ছিল এই ভবনের নীচতলায়। গতকাল এই ভবনে বিস্ফোরণ হওয়ার খবর শুনেই ওকে কল করতে থাকি। মোবাইলে কল ঢুকেছে কিন্তু রিসিভ করেনি।'

গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত মোবাইলে কল বেজেছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, '৯টার পর আর কল ঢুকেনি। উদ্ধারকারীরা ওর মোবাইলটা উদ্ধার করেছে। বন্ধুর মোবাইলটা পেয়েছি, কিন্তু আমার বন্ধুকে এখনো পাইনি।'

ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বেসমেন্টে ছিল বাংলাদেশ স্যানিটারি ও আনিকা এজেন্সি। দুটো দোকানেই স্যানিটারি সামগ্রী বিক্রি হতো। বাংলাদেশ স্যানিটারির ম্যানেজার মেহেদী হাসান স্বপন ও আনিকা এজেন্সির মালিক মোমিন উদ্দিন সুমনের এখনো খোঁজ মেলেনি।

স্বজনদের ধারণা, তারা ২ জনই বেসমেন্টের ভেতরে চাপা পরেছেন।

মেহেদী হাসান স্বপনের ভাই সোহাগ ও মামা শ্বশুর আবদুল মান্নান ঘটনাস্থলে কান্নাকাটি করছিলেন। বারবার উদ্ধার কাজ শুরুর তাগাদা দিচ্ছিলেন।

দুর্ঘটনা কবলিত ভবনটিতে কাজ করতেন মেহেদী হাসান স্বপন। এখন পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার ভাই সোহাগ ও মামা শ্বশুর আবদুল মান্নান ঘটনাস্থলে কান্নাকাটি করছিলেন।আজ সকালে ছবিটি তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী পলাশ খান।

গুলিস্তানে ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে, আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন।

গতকাল ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভেতরে উদ্ধার কাজ চালানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, 'আমরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও সেনাবাহিনীর এক্সপার্টের পরামর্শ নিয়েছি। এই অবস্থায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। যেহেতু ঝুঁকিপূর্ণ, সেহেতু এ মুহূর্তে আমরা ঢুকতে পারছি না। সেনাবাহিনী থেকে সাপোর্ট নিচ্ছি, ভবনটিকে রিএনফোর্স করে; যেটা আমরা সরিং বলি নিজেদের ভাষায়। সরিং করে, এটাকে স্টেবল করে উদ্ধার অভিযান করব।'

আজ সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্তও রাজউক টিম ভবনটি পরিদর্শন করেনি। ফলে, ফায়ার সার্ভিস ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির ভেতরে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।

তবে, ভবনটির আশেপাশের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে নিজেদের উদ্ধার কাজ শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিস।

সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী দলও সেখানে যাচ্ছে।

গতকাল রাত থেকেই স্বজনদের খুঁজে না পাওয়া মানুষ ভবনটির আশেপাশে উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষায় রয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

10h ago