অ্যান্ড্রয়েড ফোনে গেম খেলার সময় ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ানোর ৫ উপায়

অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও মোবাইল গেমিং বেশ জনপ্রিয়। ছবি: অর্কিড চাকমা/স্টার
অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও মোবাইল গেমিং বেশ জনপ্রিয়। ছবি: অর্কিড চাকমা/স্টার

মোবাইলে পছন্দের গেম খেলার সময় ব্যাটারির চার্জ শেষ হওয়ার নোটিফিকেশন দেখলে বিরক্ত লাগাটাই স্বাভাবিক। স্মার্টফোনে গেম খেললে, বিশেষ করে অনলাইন গেমগুলোর ক্ষেত্রে ব্যাটারির চার্জ অনেক দ্রুত শেষ হতে থাকে।

অ্যান্ড্রয়েড ফোনে দীর্ঘক্ষণ গেম খেলার সময় ব্যাটারির চার্জ ধরে রাখতে পাঁচটি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন।

১. ফোন এবং গেম সেটিংস ঠিক করুন

গেম খেলার আগে স্মার্টফোনের ব্রাইটনেস সমন্বয় করে নিন। ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখলে ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হবে না। অন্ধকার পরিবেশে খেলার সময় এটি সবচেয়ে উপযুক্ত।

সাউন্ড অনেক বাড়ানো থাকলেও ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হতে পারে। তাই গেমের সাউন্ড কমিয়ে রাখতে পারেন বা পুরোপুরি বন্ধ রাখতে পারেন। এতে করে চার্জও বাঁচবে আবার আশেপাশের মানুষও শব্দের কারণে বিরক্ত হবে না।

কিছু কিছু গেমে গ্রাফিক্স কোয়ালিটি, ফ্রেম রেট ও রেজ্যুলেশন কমানোর সুযোগ থাকে। গেমের স্ক্রিন কতটা আকর্ষণীয় হবে, তা এই জিনিসগুলোর মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। তবে এগুলোর কারণে আবার প্রচুর চার্জও নষ্ট হয়। চার্জ দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে ভিজুয়াল কোয়ালিটির সঙ্গে কিছুটা আপোষ করতে পারেন।

অফলাইন গেমের ক্ষেত্রে মোবাইল অ্যারোপ্লেন মোডে দিয়ে অথবা ওয়াইফাই বা মোবাইল ডাটা অফ করে খেলতে পারেন। ইন্টারনেট চালু থাকলে ফোনে বিভিন্ন নোটিফিকেশন আসবে, ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেক অ্যাপ চলবে, যা চার্জ নষ্ট করবে।

২. ফোন যাতে অতিরিক্ত গরম না হয়ে যায়

মোবাইলে দীর্ঘসময় গেম খেললে ব্যাটারি নিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। ছবি: রয়টার্স
মোবাইলে দীর্ঘসময় গেম খেললে ব্যাটারি নিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। ছবি: রয়টার্স

অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে স্মার্টফোনের ব্যাটারিসহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের ক্ষতি হতে পারে। ফলে দ্রুত চার্জ শেষ হওয়া, ব্যাটারির ক্ষতিসহ ফোন দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ফোন গরম হয়ে গেলে এর কার্যকারিতা কমে যেয়ে অনেক গেম হ্যাং করে বা ধীর হয়ে যায় এবং গেম খেলার যথার্থ অভিজ্ঞতা পাওয়া যায় না।

ফোন যাতে গরম না হয়ে যায়, সেজন্য সরাসরি সূর্যের আলো থেকে দূরে গিয়ে, ফোনের কভার খুলে, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ করে এবং তুলনামূলক ঠাণ্ডা পরিবেশে গেম খেলা যেতে পারে। কুলিং প্যাড কিংবা ফ্যানও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফোনের তাপমাত্রা কমাতে আপনি সর্বোচ্চ এগুলোই করতে পারেন। স্মার্টফোন মূলত গরম হয় সিপিউ এবং জিপিইউ সর্বোচ্চ সক্ষমতায় চললে। গেম খেলার সময় সিপিইউ এবং জিপিইউর উপর বাড়তি চাপ পড়ে, ফলে তখন বাড়তি তাপমাত্রা পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব নয়।

৩.  এমএসএএ ফিচার বন্ধ করে রাখুন

ফোর্স ফোরএক্স মাল্টিস্যাম্পল অ্যান্টি-অ্যালায়াসিং (এমএসএএ) একটি ডেভলপার ফিচার, যার সাহায্যে অ্যাপ ও গেমসের রেজ্যুলেশন আপনার ফোনের রেজ্যুলেশনের তুলনায় চারগুণ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। এই ফিচার ব্যবহার করলে গেমের গ্রাফিক্স আগের চেয়ে সুন্দর হবে ঠিকই, তবে ব্যাটারির অনেক চার্জও নষ্ট হবে এবং ফোন দ্রুত গরম হবে।

স্মার্টফোনে সাধারণত এই ফিচারটি বাই ডিফল্ট বন্ধই থাকে। তবে আপনি যদি কখনো এটি চালু করে থাকেন, তাহলে আবার বন্ধ করে দিতে পারেন।

৪. দ্রতগতির স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করুন

অনলাইনে গেম খেলার সময় ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল থাকলে ব্যাটারির উপর বাড়তি চাপ পড়ে। কারণ, আপনার স্মার্টফোন তখন ইন্টারনেটে যুক্ত থাকার জন্য ক্রমাগত নেটওয়ার্ক সিগন্যাল খুঁজতে থাকে।

এর ফলে ফোন গরম হয়ে যেতে পারে ও ব্যাটারির চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ দুর্বল, সেখানে অনলাইন গেমিং না করাটাই উত্তম। এক্ষেত্রে উচ্চ গতির ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহার করতে পারেন।

৫. ফোন চার্জে লাগিয়ে রাখুন

মোবাইলে দীর্ঘসময় গেম খেললে ব্যাটারি নিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। ছবি: রয়টার্স
মোবাইলে দীর্ঘসময় গেম খেললে ব্যাটারি নিয়ে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। ছবি: রয়টার্স

গেম খেলার সময় ফোনে যদি পর্যাপ্ত চার্জ না থাকে, তাহলে চার্জে লাগিয়ে গেম খেলতে পারেন। এতে দুটি লাভ হতে পারে- আরও লম্বা সময় গেম খেলতে পারবেন আর একই সঙ্গে ব্যাটারি চার্জও হতে থাকবে।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে কিছু বিতর্ক রয়েছে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে ফোন চার্জে রেখে কাজ করা বিপজ্জনক।

গেম খেলার সময় ওয়্যারলেস বা ফাস্ট চার্জিং পদ্ধতিতে ফোনে চার্জ না দেওয়াই ভালো। কারণ এসব পদ্ধতিতে চার্জ দেওয়ার সময় ব্যাটারি গরম হয়ে যায়।

সূত্র: মেকইউজঅব

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

7h ago