যেভাবে চার্জ দিলে ভালো থাকবে মোবাইলের ব্যাটারি
ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের ব্যাটারি চার্জ দিতে দিতে ধারাবাহিকভাবে এর সক্ষমতা কমে যায়। এ বিষয়টি আমরা সবাই জানি এবং প্রতিনিয়তই উপলব্ধি করি। নতুন স্মার্টফোন বা ল্যাপটপে যেখানে আগে ১ চার্জে সারা দিন কাজ করা যেত, ১-২ বছর পার হলে দেখা যায় দিনের মাঝখানেই আবার চার্জ দিতে হচ্ছে। জরুরী কাজে কোথাও গেলেও দেখা যায় অনেকেই মোবাইল চার্জ করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। এটা একই সঙ্গে বিরক্তিকর ও বিব্রতকর।
তবে এ ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করলে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ানো সম্ভব। আজকের লেখার আলোচ্য বিষয় এটাই।
কেন কিছু কিছু ডিভাইসের ব্যাটারি তাড়াতাড়ি অকেজো হয়ে যায়?
এ প্রশ্নের সহজ উত্তর আছে। কানাডাভিত্তিক মোবাইল মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান 'মোবাইল ক্লিনিকের' গ্রাহক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক লিজ হ্যামিলটন বলেন, 'সাধারণত একটা লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির আয়ুষ্কাল ৫০০ সাইকেল বা চক্র (প্রায় দেড় বছর)। একটি ব্যাটারি ০-১০০ পর্যন্ত একবার চার্জ হলে একটি পূর্ণ চক্র বা ফুল সাইকেল সম্পন্ন হয়। এভাবে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারি যত বেশি ফুল সাইকেল চার্জের ভেতর দিয়ে যাবে, ব্যাটারির সক্ষমতা তত কমবে এবং এটিকে তুলনামূলক বেশি ঘন ঘন চার্জে দিতে হবে।
কীভাবে মোবাইলের ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ানো যাবে?
কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে চার্জ দিলে ডিভাইসের ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ানো সম্ভব। আপনি আজ থেকেই এগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
লিজ বলেন, ব্যাটারির আয়ুষ্কাল অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রতিবার ফুল চার্জ না করে আংশিক চার্জ করা উচিত। তাঁর মতে ২৫-৮৫% চার্জ ব্যাটারির জন্য ভালো।
অনেক বেশি বা অনেক কম চার্জ দেওয়া—উভয় পরিস্থিতিতেই লিথিয়াম-আয়ন ভিত্তিক ব্যাটারি যথাযথভাবে কাজ করতে পারে না। শতভাগ চার্জ পূর্ণ হওয়ার পরও চার্জারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করাটা হচ্ছে ফোনের ব্যাটারির জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর ব্যাপার।
'অনেকেরই এই অভ্যাস আছে এবং তারা বুঝতে পারে না এর ফলে তাদের ব্যাটারির কতটা ক্ষতি হয়,' লিজ বলেন।
তাই সবার প্রতি পরামর্শ হচ্ছে- ফোনের ব্যাটারির চার্জ যাতে শূন্যের ঘরে নেমে না আসে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আবার ৮৫ শতাংশ চার্জ হয়ে গেলেই চার্জার থেকে ফোন সরিয়ে নেওয়া উচিৎ। আপনি যদি ব্যাটারি শতভাগ চার্জ করতে চান, তাহলে ফোনের চার্জের ৯০ এর কোঠা পেরুলে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন আর শতভাগ পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চার্জারটি খুলে ফেলুন। ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘসময় চার্জারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলে ডিভাইসের আয়ুষ্কালও কমে যেতে পারে।
এছাড়া স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা অনেক বেশি থাকলে সেটাকেও কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারেন। ফোনের যেসব ফিচার এবং অ্যাপ আপনি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছেন না, সেগুলো বন্ধ করে রাখতে পারেন কিংবা আনইনস্টল করে দিতে পারেন। এতে করে ব্যাটারির চার্জ অত দ্রুত কমবে না এবং বারবার ফোনে চার্জও দিতে হবে না।
লিজের মতে, 'যত কম চার্জ, ব্যাটারির স্থায়িত্ব তত বেশি।'
ওপরের পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে আপনার ডিভাইসের ব্যাটারির স্থায়িত্ব বা আয়ুষ্কাল বাড়বে।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
Comments