রোমাঞ্চকর অভিযানের সঙ্গী সেরা ১০ ক্লাসিক অফ রোড গাড়ি

সময়ের পরীক্ষায় টিকে যাওয়া ১০টি ক্লাসিক অফ-রোড বাহনের বিস্তারিত থাকছে এই লেখা। ছবি: সংগৃহীত
সময়ের পরীক্ষায় টিকে যাওয়া ১০টি ক্লাসিক অফ-রোড বাহনের বিস্তারিত থাকছে এই লেখা। ছবি: সংগৃহীত

গাড়ি নিয়ে একেকজনের পছন্দ একেক রকম। যে গাড়িপ্রেমীরা জীবনে রোমাঞ্চ পছন্দ করেন, ভালোবাসেন এবড়ো-খেবড়ো পথে নিজেদের ব্যক্তিগত রথ ছুটিয়ে চলতে, তাদের জন্য বিশেষায়িত ৪ চাকার যানকে ইংরেজিতে আলাদা করে বলা হয় 'অফ-রোড ভেহিকল'।

আসুন, জানা যাক সময়ের পরীক্ষায় টিকে যাওয়া ১০টি ক্লাসিক অফ-রোড বাহনের বিস্তারিত।  

ল্যান্ড রোভার ডিফেন্ডার। ছবি: সংগৃহীত
ল্যান্ড রোভার ডিফেন্ডার। ছবি: সংগৃহীত

ল্যান্ড রোভার ডিফেন্ডার

এটি ছাড়া বোধহয় ক্লাসিক অফ রোড তালিকা কখনোই সম্পূর্ণ হবে না। ১৯৪৮ সালে প্রথম তৈরি করা এই নামটি অফ-রোড যাত্রার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এর বক্স আকৃতির অবয়ব আর বেপরোয়া চেহারা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে বহু বিপদজনক রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতি আছে ল্যান্ড রোভার ডিফেন্ডারের ইতিহাসে। তাই রোমাঞ্চকর যাত্রায় একে সঙ্গী করে নিলে আর কোনো চিন্তা নেই!

জিপ র‍্যাংলার। ছবি: সংগৃহীত
জিপ র‍্যাংলার। ছবি: সংগৃহীত

জিপ র‍্যাংগলার

সামরিক বাহন হিসেবে এর শুরুটা হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। এর পর সময়ের সঙ্গে জিপ র‍্যাংগলার অফ-রোড আইকনের রূপ নিয়েছে। এই গাড়ির দরজা ও ছাদ খুলে ফেলা যায়, আবার একইভাবে লাগানোও যায়। চালককে জিপ র‍্যাংগলার দেয় উন্মুক্ত অনুভূতি আর একইসঙ্গে বৈচিত্র্যের আনন্দ। পাহাড়ি রাস্তায় ঠোকর খেতে খেতে এগোনো হোক কিংবা প্যাঁচপেচে কাদামাটিতে– র‍্যাংগলারের উৎসাহ কিছুতেই কমে না।

টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার। ছবি: সংগৃহীত
টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার। ছবি: সংগৃহীত

টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার

নির্ভরযোগ্যতা ও সক্ষমতার অন্য নাম টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার। প্রাথমিকভাবে এর নকশা করা হয়েছিল প্রতিকূল পরিবেশে চলাচলের জন্য নিয়মিত গাড়ি হিসেবে। পরে অবশ্য এটি বেশ বিলাসবহুল বাহনে পরিণত হয়, যা কিনা অফ-রোডের কোনো বাধা-বিপত্তি না মেনেই এগিয়ে চলে। দীর্ঘ সময়ের যাত্রায় যেকোনো জায়গায় চলে যাবার জন্য ল্যান্ড ক্রুজার হতে পারে অন্যতম পছন্দ।

ফোর্ড ব্রংকো। ছবি: সংগৃহীত
ফোর্ড ব্রংকো। ছবি: সংগৃহীত

ফোর্ড ব্রংকো

ধ্রুপদী ডিজাইন আর অফ-রোডে চলার বিশেষ ক্ষমতার জন্য দশকের পর দশক ধরে গাড়িপ্রেমীদের মন জয় করে চলেছে ফোর্ড ব্রংকো। এর যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৬ সালে। সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া এই গাড়ি একটি ছোট বিরতির পর আবারো বাজারে ফিরেছে। অনেক এসইউভির মতো, এই গাড়িরও ছাদ খোলা যায়, যা একটি বাড়তি আকর্ষণ। এছাড়া দুর্দান্ত গতি আর উন্নত প্রযুক্তির ফলে ফোর্ড ব্রংকো নিঃসন্দেহে সত্যিকারের অফ-রোড সঙ্গী।

মার্সিডিজ বেঞ্জ জি-ক্লাস। ছবি: সংগৃহীত
মার্সিডিজ বেঞ্জ জি-ক্লাস। ছবি: সংগৃহীত

মার্সিডিজ-বেনজ জি-ক্লাস

দুর্দান্ত গতি আর বিলাসবহুল নকশা সম্বলিত এই গাড়িকে বলা হয় 'অফ-রোড টাইটান'। এটি যাত্রা শুরু করে ১৯৭৯ সালে। প্রাথমিকভাবে এটি সামরিক ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হলেও পরে গাড়ির দুনিয়ায় এই জার্মান মাস্টারপিস একইসঙ্গে পাহাড়ি অভিযানে, বাড়ির পথে কিংবা লাল গালিচা সংবর্ধনায়তেও নিয়ে যাওয়ার রেওয়াজ চালু হয়।

ল্যান্ড রোভার সিরিজ ১। ছবি: সংগৃহীত
ল্যান্ড রোভার সিরিজ ১। ছবি: সংগৃহীত

ল্যান্ড রোভার সিরিজ ১

ডিফেন্ডারের পূর্বসুরী হিসেবে ল্যান্ড রোভার সিরিজেরও অফ-রোড ইতিহাসে বিশেষ স্থান রয়েছে। ১৯৪৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই বাহনটি এর বহুমুখী ব্যবহার এবং অভিনব স্টাইলের জন্য আইকনে রূপ নিয়েছে। এই সিরিজ ১ পরবর্তীতে আসা সব ল্যান্ড রোভারের পথনকশা এঁকে দিয়েছে এবং অফ-রোড জগতে ব্রিটিশ ব্র্যান্ডের প্রতিশ্রুতি ধরে রাখতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রেখেছে।

নিসান প্যাট্রোল। ছবি: সংগৃহীত
নিসান প্যাট্রোল। ছবি: সংগৃহীত

নিসান প্যাট্রোল

এ তালিকায় থাকা অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছে কিছুটা ম্লান মনে হলেও এই গাড়িকে পেছনে ফেলা যায় না। দুর্দান্ত প্রকৌশল আর পূর্ব ইতিহাসই বলে দেয়, নিসান প্যাট্রোল একাধারে কীভাবে মরুভূমি, পাহাড়-পর্বত এবং সবকিছুই ডিঙিয়ে যেতে পারে। আর ঠিক এ কারণেই অফ-রোড চালকদের কাছে এই গাড়িটি একইসঙ্গে রোমাঞ্চ ও নির্ভরশীলতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

শেভ্রলে ব্লেজার। ছবি: সংগৃহীত
শেভ্রলে ব্লেজার। ছবি: সংগৃহীত

শেভ্রলে ব্লেজার কে৫

সত্তরের দশকে জন্ম নেয়া শেভ্রলে ব্লেজার কে৫ অফ-রোডের রথী-মহারথীদের জন্য এক অনন্য আকর্ষণ। এর দাপুটে স্টাইল আর সক্ষমতা– দুয়ে মিলে এই আমেরিকান কিংবন্তির সঙ্গে অফ-রোড অভিজ্ঞতা অন্য মাত্রা বয়ে আনে। পাথুরে পথ কিংবা খাড়া পথে চলতে ব্লেজার কে৫ এর জুড়ি মেলা ভার।

রেঞ্জ রোভার ক্লাসিক। ছবি: সংগৃহীত
রেঞ্জ রোভার ক্লাসিক। ছবি: সংগৃহীত

রেঞ্জ রোভার ক্লাসিক

এই গাড়িটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৭০ সালে। বিলাসবহুল অফ-রোডিং এর ধারণাই পালটে দিয়েছিল রেঞ্জ রোভার ক্লাসিকের আগমন। এর অভিজাত ডিজাইন এবং অফ-রোডে চলাচলের বিশেষ গতি, সবমিলিয়ে এই গাড়িটি যেন পরিশুদ্ধ অভিযানের জন্য অন্যতম পছন্দ হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তী লাক্সারি এসইউভিগুলোর জন্য মাইলফলক প্রতিষ্ঠা করেছে রেঞ্জ রোভার ক্লাসিক।

সুজুকি জিমিনি। ছবি: সংগৃহীত
সুজুকি জিমিনি। ছবি: সংগৃহীত

সুজুকি জিমনি

এই তালিকায় সুজুকি জিমনিই শেষ কথা বলে। ছোট আকার সত্ত্বেও জিমনির গতির সঙ্গে তুলনা হয় না। অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের হওয়া সত্ত্বেও এটি অন্যতম অফ-রোডার হিসেবে নিজের জায়গা করে নিয়েছে। বরং এর কমপ্যাক্ট আকারের কারণেই সরু এবড়ো-খেবড়ো রাস্তাতেও চালাতে কোনো সমস্যা হয় না এবং খুব সহজেই মোড় ঘোরানো যায়।

অটোমোটিভ ইতিহাসে এই ক্লাসিক অফ-রোড বাহনগুলোর নাম উজ্জ্বল হয়ে আছে। আফ্রিকার বুনো পরিবেশ থেকে শুরু করে রকি মাউন্টেনের বিপদজনক রাস্তা– পৃথিবীর সর্বত্রই নিজেদের চাকার ছাপ রেখে গেছে এই বিশেষ প্রজাতির গাড়িগুলো। রোমাঞ্চকর অভিযানের সঙ্গী হিসেবে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়া নিরুদ্দেশ যাত্রায়ও এসব ক্লাসিক অফ-রোড গাড়িগুলো সেরা। সময়ের সীমারেখা ডিঙিয়ে, পাহাড়-পর্বতকে ছাড়িয়ে যেতে গাড়িপ্রেমীরা এগুলোর যেকোনো একটিকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে পড়তে পারেন।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন অনিন্দিতা চৌধুরী

 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

9h ago