লেগ স্পিনে শ্রীলঙ্কার ইনিংসের মোড় ঘুরিয়ে নায়ক রিশাদ

ছবি: বিসিবি

একজন বিশেষজ্ঞ লেগ স্পিনারের জন্য হাহাকার ছিল বহুদিনের। রিশাদ হোসেনকে দিয়ে সেই শূন্যতা পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। গত বছরের মার্চে অভিষেকের পর থেকে টি-টোয়েন্টি একাদশের নিয়মিত মুখ তিনি। এই সংস্করণের বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলতে নেমেই আলো ছড়ালেন ২১ বছর বয়সী ক্রিকেটার। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টাইগারদের রোমাঞ্চকর জয়ের ম্যাচের মূল নায়ক তিনি।

শনিবার ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে 'ডি' গ্রুপের লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দারুণ বোলিংয়ে লঙ্কানদের ১২৪ রানে আটকে ফেলার পরও ব্যাটিংয়ে পথ হারানোর দশা হয়েছিল। তবে শঙ্কা ছাপিয়ে শেষমেশ ৬ বল হাতে রেখে লক্ষ্য ছুঁয়ে চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। বল হাতে ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন রিশাদ। মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, তাওহিদ হৃদয়, লিটন দাস ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জয়ে অবদান রাখলেও রিশাদের প্রভাবই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফলে তার হাতেই ওঠে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি।

টস জিতে প্রতিপক্ষকে আগে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। পাওয়ার প্লেতে ৫৩ রান তোলা শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ১৪ ওভারে দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ঠিক ১০০ রান। ওই অবস্থায় ঝড় তোলার মঞ্চ তাদের জন্য ছিল তৈরি। কিন্তু নতুন স্পেলে গিয়েই রিশাদ মোড় ঘুরিয়ে দিলে বাংলাদেশও ঘুরে দাঁড়ায়। ইনিংসের ১৫তম ওভারে সজোরে আঘাত করে ধরেন জোড়া শিকার, জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। তখন থেকেই লঙ্কানদের চ্যালেঞ্জিং পুঁজির আশা ফিকে হতে শুরু করে।

ওই ওভারের প্রথম বলেই রিশাদ ফেরান চারিথ আসালাঙ্কাকে। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশকে ভোগানো আসালাঙ্কা স্লগসুইপে ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসানের হাতে। ২১ বলে ১৯ রানে আউট হন তিনি। রানের চাকা দ্রুত ঘোরাতে ব্যাটিং অর্ডারে ওপরে উঠে আসেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তাকে টিকতেই দেননি রিশাদ। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই শূন্য হাতে বিদায় ঘটে হাসারাঙ্গার। রিশাদের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ নেন সৌম্য সরকার।

১৭তম ওভারে আক্রমণে ফিরে আবার প্রথম বলে উইকেট শিকারের উল্লাসে মাতেন রিশাদ। ক্রিজ আঁকড়ে থাকা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা সাজঘরে ফেরেন ২৬ বলে ২১ রানে। বড় শট খেলার চেষ্টায় থাকা ধনঞ্জয়া স্টাম্পড হলে শ্রীলঙ্কার কোমর ভেঙে যায় পুরোপুরি। আগে ২ ওভারে ১৬ রান দেওয়া রিশাদ এই স্পেলে ২ ওভারে স্রেফ ৬ রানে নেন ৩ উইকেট।

ইনিংসের শেষ ৬ ওভারে মাত্র ২৪ রান তুলতে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। সেসময় বাংলাদেশের তিন পেসার মোস্তাফিজ, তাসকিন আর তানজিম হাসান সাকিবও ছিলেন দারুণ। তবে দ্বীপদেশটির এমন ধসের শুরুটা হয় রিশাদের কল্যাণে। শুধু উইকেট শিকারে আবদ্ধ করে ফেললে অবশ্য তাকে প্রাপ্য কৃতিত্বের পুরোটা দেওয়া হয় না। বড় মঞ্চে অনভিজ্ঞ হলেও তার শরীরী ভাষা ছিল আত্মবিশ্বাসী, লাইন-লেংথে তিনি ছিলেন প্রায় নিখুঁত। বাঁহাতি ব্যাটারদেরও ফেলেন বেকায়দায়।

ম্যাচশেষে অল্প শব্দে রিশাদ জানান মাঠে নিজের সেরাটা নিংড়ে দেওয়ার কথা, 'পিচ ভালো ছিল। আমি নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করেছি। নিজের শক্তির জায়গায় অটুট থেকেছি... (হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনার সময়) স্বাভাবিক বলই করার চেষ্টা ছিল, সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েছি।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

7h ago