হাসান-নাহিদের তোপে পাকিস্তানকে গুটিয়ে নাগালের মধ্যে লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ
প্রথম ইনিংসে মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিনে ঘায়েল হয়েছিলো পাকিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের নাজেহাল করলেন হাসান মাহমুদ আর নাহিদ রানা। এই দুই পেসারের তোপে দ্বিতীয় টেস্টেও জিততে নাগালের মধ্যে লক্ষ্য পেয়েছে বাংলাদেশ।
সোমবার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের চতুর্থ দিনের লাঞ্চ বিরতির পর পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস থেমেছে ১৭২ রানে। ফলে টানা দুই টেস্ট জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিতে ১৮৫ রানের লক্ষ্য পেয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। টেস্টে এরচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার নজির আর দুটি আছে বাংলাদেশের।
৪৩ রানে ৫ উইকেটে নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার হাসান। তিনিই প্রথম কোন বাংলাদেশি পেসার যিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে নিলেন ইনিংসে ৫ উইকেট। হাসানের ৫ উইকেটের দুটি ছিলো আগের দিন বিকেলে। চতুর্থ দিনে সেরা বোলার বলা যায় নাহিদকে। ৪৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে চতুর্থ দিনে ঝাঁজালো পারফরম্যান্স তরুণ গতি তারকা।
সকালে নেমে শান-আইয়ুব খেলতে থাকেন স্বাচ্ছন্দ্যে। এই জুটি আলগা হয় আইয়ুবের বাজে শট নির্বাচনে। জুটিতে ৩৮ রান আসার পর তাসকিনকে লফটেড ড্রাইভ করতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন আইয়ুব। ফেরেন ৩৫ বলে ২০ রান করে।
পাকিস্তান অধিনায়ক শানও থিতু হয়ে পড়েছিলেন। দলকে ভালো জায়গায় নেওয়ার মতন খেলছিলেন তিনি। তবে নাহিদের বলে গড়বড় করে তিনিও ফেরেন বাজে শটে। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দেন ৩৪ বলে ২৮ রান করে।
বাকি দুই উইকেট দারুণ দুই বলে শিকার ধরেন নাহিদ, ক্যাচ মিস না হলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেটও পেতে পারতেন তিনি। নাহিদ অবশ্য কাবু করেন বাবর আজমকে। বাবর এই সিরিজে খেলছেন নিজের ছায়া হয়ে। ছন্দহীন ব্যাটার নাহিদের আচমকা লাফানো বল সামলাতে পারেনি। ১১ রান করে নাহিদের বলে স্লিপে দিয়েছেন ক্যাচ। ঠিক পরের বলেই উইকেট পেতে পারতেন নাহিদ। স্লিপে রিজওয়ানের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন সাদমান ইসলাম। শূন্য রানে জীবন পেয়ে সেই রিজওয়ান পরে যোগ করেছেন ৪৩ রান।
রিজওয়ান বেশ কিছুটা সময় অস্বস্তি বাড়ালেও সাউদ শাকিল টিকতে পারেননি। নাহিদের ওই স্পেলেই কাটা পড়েন বাঁহাতি ব্যটার। বাংলাদেশের তরুণ পেসার গতি আর বাউন্সে নাজেহাল করে কুঁকড়ে রাখেন ব্যাটারদের। তার অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মেরে লিটন দাসের গ্লাভসে জমা পড়েন শাকিল, ১০ বলে করেন ২ রান।
১২৯ রানের লিড নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিলো পাকিস্তান। লাঞ্চ থেকে ফিরে রান বাড়িয়ে ফিফটির দিকে ছুটছিলেন রিজওয়ান। পাকিস্তানের লিড চলে গিয়েছিলো দেড়শোর কাছে। হাসান মাহমুদ নতুন স্পেলে ফিরে দারুণ দুই বলে থামিয়ে দেন পাকিস্তানের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন। হাসানের বলে খোঁচা মেরে লিটনের গ্লাভসে জমা দেন ৪৩ করা রিজওয়ান। ঠিক পরের বলে স্লিপে মোহাম্মদ আলিকে ক্যাচ বানান হাসান।
একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটার সালমান আলি আঘা টেল এন্ডারদের নিয়ে চেষ্টা চালাতে শুরু করেন। তাকে বেশি সঙ্গ দিতে পারেননি আবরার আহমেদ। নাহিদের গতিময় আচমকা বাউন্স সামাল দিতে না পেরে আবরার ক্যাচ দেন স্লিপে।
মির হামজাকে নিয়ে এরপর শেষ উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ২৭ রান যোগ করেন সালমান। ফিফটির দিকে থাকা সালমান অপরাজিত রয়ে যান ৪৭ রানে। হাসানের বলে মির হামজার ক্যাচ যায় স্লিপে। আম্পায়ার আউট দিলে রিভিউ নেয় পাকিস্তান। রিপ্লেতে পরিষ্কার বোঝা না যাওয়ায় মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। ১৮৫ রান তাড়া করতে পারলে দ্বিতীয়বারের মতন দেশের বাইরে সিরিজ জেতার স্বাদ পাবে বাংলাদেশ দল।
Comments