‘বিশ্বকাপের ফ্লাইট ধরতে সম্ভাব্য সবকিছুই করব’
বয়স ৩৮ পেরিয়েছে। দীনেশ কার্তিক গত বছর দুয়েক যেভাবে ধারাভাষ্যে জড়িয়েছেন, তাতে খেলোয়াড় হিসেবে তার ইতি দেখছিলেন অনেকে। তবে এবার আইপিএল বদলে দিয়েছে প্রেক্ষাপট। উইকেটকিপার ব্যাটারকে ফিনিশারের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে বিস্ফোরক ব্যাটিং করতে। ভারতের আসন্ন বিশ্বকাপ দলে থাকার সম্ভাবনাও জোরালো করেছেন তিনি। নিজেও তাই দেখছেন বিশ্বকাপ খেলার সম্ভাবনা।
গত ১৫ এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দরবাদের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন কার্তিক। সানরাইজার্সের রেকর্ড ২৮৭ রান তাড়া করতে গিয়ে এক পর্যায়ে অনেক পিছিয়ে থাকা বেঙ্গালুরুকে প্রাণ ফেরান তিনি।
৩৫ বলে ৫ চার ৭ ছক্কায় কার্তিক খেলেন ৮৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। দল ২৫ রানে ম্যাচ হারলেও কার্তিকের প্রাণপণ চেষ্টা নজর কাড়ে সবার। এর আগে ওয়াংখেড়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ২৩ বলে কার্তিক করেছিলেন ৫৩ রান। এখন অবধি ৭ ম্যাচে ৬ ইনিংস ব্যাট করতে ৭৫.৩৩ গড় আর ২০৫.৪৫ স্ট্রাইকরেটে ২২৬ রান করেছেন কার্তিক। উইকেট-কিপার ব্যাটার হিসেবে তাই তিনি বিবেচিত হতেই পারেন।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগে নিজের বিশ্বকাপ সম্ভাবনা নিয়ে তাই ভীষণ আশাবাদী কথা শুনিয়েছেন এই ব্যাটার, 'জীবনের এই ধাপে এসে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা (বিশ্বকাপে) আমার কাছে বিশাল অনুভূতি হবে। আমি এটা (বাস্তবায়ন) করতে খুবই উদগ্রীব আছি। এরচেয়ে বড় কিছু জীবনে নেই।'
উইকেট-কিপার ব্যাটারদের মধ্যে এবার আইপিএলে ভালো করছেন সঞ্জু স্যামসন, রিশভ পান্ত, ইশান কিশান। প্রভাব বিবেচনায় কার্তিক এই বয়সেও তাদেরকে দিচ্ছেন ঠেক্কা। বিশ্বকাপ দলে থাকা, না থাকা নির্ভর করছে নির্বাচকদের উপর। তবে দলে থাকতে বাকি ম্যাচগুলোতে সেরাটা দিতে চান তিনি, 'বিশ্বকাপের জন্য ভারতের স্কোয়াড কেমন হবে তা ঠিক করতে খুবই শক্ত ও সৎ তিনজন দায়িত্বে আছেন- রাহুল দ্রাবিড় (কোচ), রোহিত শর্মা (অধিনায়ক) ও অজিত আগারকার (প্রধান নির্বাচক)। আমি তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি, সমর্থন করি। আমি বিশ্বকাপ খেলতে শতভাগ প্রস্তুত, বিশ্বকাপের ফ্লাইট ধরতে সম্ভাব্য সবকিছুই করব।'
কার্তিক যে পজিশনে খেলেন সেখানে থাকে মেরে খেলার চাহিদা থাকে প্রবল। পেশিবহুল না হওয়া কার্তিক নির্ভর করেন টাইমিংয়ের উপর। তাতেও বেশ সফল তিনি। এবার আইপিএলে যে সবচেয়ে লম্বা (১০৮ মিটার) ছক্কা এসেছে তার ব্যাটে। কার্তিক জানান নিজের শক্তির জায়গা বুঝেই শট খেলার অনুশীলন করে সাফল্যের খোঁজ করতে হয় তাকে 'খেলোয়াড় হিসেবে নিজের সামর্থ্য বোঝা জরুরি। আমি আন্দ্রে রাসেল বা কাইরন পোলার্ডের মতন (পেশিবহুল) নই। যারা কিনা ঠিকমতো টাইমিং না করলেও ছক্কা পেয়ে যায়। আমাকে গ্যাপ খুঁজে বের করতে হয়। বুঝতে হয় কোন বলগুলো বাউন্ডারি মারতে পারব।'
'যখন আমি অনুশীলন করি, বুঝতে চেষ্টা করি তারা এভাবে বল করলে আমি কীভাবে বাউন্ডারি বের করতে পারি। ফিল্ডিং কল্পনা করে ব্যাট করি। ফিনিশার হিসেবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে আমি দারুণ উপভোগ করছি।'
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কার্তিক সর্বশেষ খেলেছেন ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে। এবার যদি তিনি বিশ্বকাপ দলে ফের জায়গা পান তাহলে তা হবে বেশ নাটকীয়।
Comments