বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও রেনেসাঁর আকুতি…

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও রেঁনেসার আকুতি…
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র। ছবি: সংগৃহীত

দেখতে দেখতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলো।

আগামীকাল ৯ ফেব্রুয়ারি এ উপলক্ষে জাঁকজমকের সঙ্গে আয়োজন করা হয়েছে ৪৫ বছর পূর্তি উৎসব। সেই উৎসব আয়োজনকে স্মরণ করেই এই লেখা।

আজ থেকে ৪৫ বছর আগে ১৯৭৮ সালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বহু পথ পাড়ি দিয়ে আজকে এই প্রতিষ্ঠান সারা দেশে স্ব-নামেই পরিচিত। বলা চলে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এখন চেনা বামুন। তাকে চেনাতে আর পৈতা লাগে না। কী আলোচনায় কী সমালোচনায়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে আর পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া যায় না। জনপ্রত্যাশায় কিংবা প্রত্যাশা ভঙ্গে বিপুল মানুষ বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কাছ থেকে তাদের পাওনাটা পেতে চায়। পেলে সুখী হয়। না পেলে সমালোচনায়, বেদনায় জর্জরিত হতে থাকে।

সম্ভবত এই ঘটনাতেই প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশের জাতিরাষ্ট্র বিনির্মাণের নানান প্রশ্নে আমরা যখন দ্বন্দ্বে জড়াই, সংঘাতে ব্যাপৃত থাকি, নিজেদের পক্ষে-বলয়ে সবাইকে চাই, তখন আমরা নিজ নিজ বিবেচনায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে আমাদের বর্গের মধ্যেই পেতে চাই। পেলে স্বস্তি অনুভব করি, না পেলে নিন্দা-সমালোচনা করি। গত ৪৫ বছরে জাতীয় জীবনে যত বড় বড় ঘটনা ঘটেছে সেই বিতর্কে এই প্রশ্ন উঠেছে যে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ছেলেমেয়েরা কই? তাদের অংশগ্রহণ কোথায়?

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্লোগান যেহেতু 'আলোকিত মানুষ চাই', সেহেতু জাতির সব সংকটে, রাজনৈতিক উত্তাপে কোনো না কোনো বর্গ থেকে এই প্রশ্ন উঠেছে যে, এখন আলোকিত মানুষেরা কই?

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের শক্তির জায়গাটাই হচ্ছে, এটা রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা দলের গোষ্ঠিগত বর্গের মধ্যে কখনো নিজের মাথাটা ঢুকিয়ে দেয়নি। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অর্থায়নের বড় অংশ যেহেতু সরকারের কাছ থেকে এসেছে, কিংবা সরকারি নিয়ম মেনে দাতাদের কাছ থেকে নিতে হয়েছে, সে কারণে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে সবসময় যখন যে সরকারে থেকেছে তার সঙ্গেই কাজ করতে হয়েছে। সেটার অভিজ্ঞতাও অম্লমধুর। তাই প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যে স্ট্রাগল বা টিকে থাকার লড়াই, সেটা খুব সহজ কখনো থাকেনি, আজও নয়।

কিন্তু বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র তার মর্যাদার প্রশ্নে কখনই আত্মাহুতি দেয়নি। বরং সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে জাতির মনন গঠনের যে বৌদ্ধিক লড়াই, জনগণের চোখের অগোচরে থেকেই, সেই কাজটা খুবই নিষ্ঠার সঙ্গে করে চলেছে গত ৪৫ বছর ধরে। প্রয়োজনে সে তার কাজের ধারা পাল্টেছে, তার কর্মকৌশলে পরিবর্তন এনেছে, কিন্তু মৌলিক যে প্রতীতি ও প্রত্যয় তাতে ক্ষান্তি দেয়নি।

কোনো রকম নির্দিষ্ট রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক মতাদর্শ ধারণ না করেই মতাদর্শমুক্ত থেকে 'মনুষ্যত্বের সমৃদ্ধি'র সাধনাতেই নিবিষ্ট থাকার এই চেষ্টা বা সাধনা এক অর্থে বড় কঠিন কাজ। গত ৪৫ বছর ধরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সেই নীরব কষ্টকর কাজটাই করে যাচ্ছে।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কিছুটা অশরীরী আত্মার ধাঁচে কাজ করে বলে এর শক্তির চেহারা নিয়ে বিচিত্র রকম ধারণার সৃষ্টি হয়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র কী কাজ করে, তা নিয়ে জনারণ্যে কোনো সুস্পষ্ট শরীরী অবয়বের ধারণা ঠাওর করা কঠিন। ইদানীং অবশ্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মোবাইল লাইব্রেরির গাড়িগুলো তার কাজের একটা চেহারা সম্পর্কে জনপরিসরে কিছুটা ধারণা তৈরি করতে পেরেছে।

যারা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাদের অনেকেরই ধারণা কেন্দ্রে বইপাঠ, নানারকম পাঠচক্র, ফিল্ম-চিত্রকলা-ফটোগ্রাফি ইত্যাদি শিল্পকলাধর্মী চর্চাই চলে। এ রকম বহুবিধ ধারণা বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রকে ঘিরে।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সারা দেশে হাজারো স্কুলে যে লাখো শিক্ষার্থীকে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত তাদের বয়স-মন অনুযায়ী নির্দিষ্ট কতগুলো বই পড়িয়ে যাচ্ছে, বইপাঠ শেষে মূল্যায়ন পরীক্ষা শেষে পুরষ্কারের নামে আরও বেশ কিছু নির্বাচিত বই হাতে ধরিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘরে পাঠিয়ে দিচ্ছে এবং এই কাজটি গত ৪৫ বছর ধরে ক্লান্তিহীনভাবে ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছে, সেই খবরটি হয়তো অনেকেরই অজানা। পাঠ্য বইয়ের বাইরে সাহিত্য-শিল্প-দর্শন-কীর্তিমান মানুষের জীবনী বিষয়ক যে হাজারো বই লাখো শিক্ষার্থীর জীবনকে গত ৪৫ বছর ধরে স্পর্শ করে যাচ্ছে, সেই নীরব কাজটি সম্পর্কে হয়তো অনেকেই অবগত নন। কিংবা অবগত হলেও সে সম্পর্কে খুব একটা চিন্তাশীল নন।

এ কথা আজ নির্দ্বিধায় বলা যায়, শুধুমাত্র বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কারণে বিশ্বসাহিত্যের সেরা যেসব বই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ পড়ছেন, চিনছেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র না থাকলে এসব বই সম্পর্কে তারা আদৌও অবগত হতেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বড় শক্তির জায়গা হচ্ছে এই বইপড়া কার্যক্রমের নির্বাচিত বইগুলো। কেও যদি মনোযোগ সহকারে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বইপড়া কর্মসূচির বইয়ের তালিকা দেখেন, সেটা নিয়ে একটু ভাবেন, তাহলে তারা দেখতে পাবেন কী অসাধারণ মেধা-মমতা-যত্ন-মনোযোগ আর ভাবনা সহকারে এই বইগুলো নির্বাচন করা হয়েছে।

বইপড়া কর্মসূচি, বইপড়া কর্মসূচির ওপরে নির্ভর করে পুরষ্কার কর্মসূচি, বিভিন্ন পাঠচক্রের জন্য নির্বাচিত বইয়ের তালিকাই প্রমাণ করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের শক্তিমত্তার প্রাবল্য। বই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রকাশনা বিভাগ থেকে উম্মুক্তভাবে বিক্রির জন্য যেসব বই প্রকাশিত হয়েছে তার তালিকাও বিস্ময়কর। এই প্রকাশনা প্রোগ্রামটি আজকে শুধু মনন সমৃদ্ধ পাঠক সৃষ্টি, পাঠকদের তৃষ্ণা মিটাতেই সক্ষম হয়েছে তাই নয়, এটা বাণিজ্যিকভাবেও সফল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে গেছে। বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ প্রকল্পের বহুখণ্ডের বৃহদাকৃতির প্রকাশনাও সেই সৃজনশীল শক্তিমান চিন্তারই বহির্প্রকাশ।

২.

এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। কলকাতায় যে বেঙ্গল রেনেসাঁ একসময় আমাদের চিন্তাজগতে আলোড়ন তুলেছিল, আমাদের তরুণ গবেষক-ভাবুক-চিন্তক বন্ধুদের কেও কেও এখন বলছেন, বেঙ্গল রেনেসাঁর মতো ঢাকায় একটা রেনেসাঁ বা নবজাগরণ হয়েছিল। তাদের মতে ১৯২১ সাল থেকে বাংলাদেশের নবজাগরণ শুরু। তিন ধাপে ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা পূর্ণতা পায়।

বাংলাদেশের নবজাগরণের প্রথম ধাপের নায়করা সংগঠিত হন 'শিখা' পত্রিকাকে কেন্দ্র করে মুসলিম সাহিত্য সমাজকে ভরকেন্দ্রে রেখে। দ্বিতীয় ধাপের নায়করা সংগঠিত হন ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে, বাংলা ভাষার ন্যায্য মর্যাদার প্রশ্নে। তৃতীয় ধাপের নায়করা সংগঠিত হন ছয় দফাকে সামনে রেখে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বাস্তবায়নের আকাঙ্ক্ষায়।

'বাংলাদেশের রেনেসাঁ' কথাটা প্রথম শুনি আমাদের তরুণ গবেষক-ভাবুক-চিন্তক বন্ধু ড. কাজল রশীদ শাহীনের কাছে। তার লেখাতেই পাই, 'ঢাকায় বিংশ শতকে সংঘটিত রেনেসাঁ বিশেষভাবে স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত। ইতালীয় রেনেসাঁ যেমন পুরো ইউরোপকে আলোড়িত করেছিল। বঙ্গীয় রেনেসাঁ কলকাতায় সংঘটিত হলেও তার ছোঁয়া লাগেনি তদানীন্তন পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশে। ভারতীয় ঐতিহাসিক সুশোভন সরকার বেঙ্গল রেনেসাঁর যে তিনটি দুর্বলতার কথা বলেছেন, তার মধ্যে এটিকে অন্যতম জ্ঞান করেছেন। বাংলাদেশের নবজাগরণের শক্তি হলো এটি ঢাকায় সংঘটিত হলেও তার ধাক্কা লাগে প্রথম পর্বে পুরো পূর্ববঙ্গে এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বে তদানীন্তন পুরো পূর্ব পাকিস্তানে।'

হাসান হাফিজুর রহমানের এক লেখার বরাতে ড. কাজল রশীদ শাহীন আমাদের জানাচ্ছেন, 'তিনি "সমকাল" পত্রিকা প্রকাশের কারণ সম্পর্কিত এক লেখায় উল্লেখ করেছেন, "পাকিস্তানের আগে বাঙালী মুসলমান স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠায় উত্তেজিত ছিল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে পরেই দেখা গেল স্বাতন্ত্র্যই মুক্তি নয়। দুর্বল বাঙালী ন্যাশনালেটি প্রবল পাঞ্জাবী ন্যাশনালেটির বন্ধনে বাঁধা পড়েছে। স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠার জায়গায় নতুনভাবে দেখা দিল আত্মপ্রতিষ্ঠার প্রশ্ন।"'

কাজল রশিদ শাহীনের প্রবল প্রত্যয় হচ্ছে, এ 'আত্মপ্রতিষ্ঠা'ই হলো বাংলাদেশের নবজাগরণ বা রেনেসাঁর বিরল বৈশিষ্ট্য। যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল মানবতাবাদ, ইহজাগতিকতা, উদারনৈতিক সমাজ ব্যবস্থা, ধর্মীয় কুসংস্কার মুক্তি, আধুনিকতা ও প্রগতিশীলতার চর্চা, ন্যায্যতাভিত্তিক রাষ্ট্র নির্মাণ ও সম্পদের সুষম বণ্টনের প্রত্যাশা পূরণ। রেনেসাঁ বা নবজাগরণ কীভাবে একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো বাংলাদেশের নবজাগরণ। যেখান থেকে উপ্ত হয়েছিল পুরো জাতিকে স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের জন্য প্রস্তুত করার বীজমন্ত্র।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে লিখতে বসে আবিষ্কার করলাম, বাংলাদেশের রেনেসাঁ যা গত শতকের বিশ দশকে থেকে ষাট-সত্তর দশক অবধি বাংলাদেশের সংস্কৃতি, রাজনীতি ও সমাজকে আলোড়িত করেছে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের উৎপত্তি তো সেই উত্তাপ ও আবহাওয়া থেকেই। রেনেসাঁ তাড়িত মনেই তো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতার আকুতির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বহুজন, যারা একটি উন্নততর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছেন।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্বপ্নবীজের কথা লিখতে গিয়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্বপ্নদ্রষ্টা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ লিখেছেন, 'আজকের স্বদেশ ও স্বজাতির এক চরমতম সংকট মোকাবিলা করার জন্যেই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা। শুধুমাত্র তারাই এখানে আমন্ত্রিত যাঁরা তাঁদের শ্রম, ত্যাগ ও প্রতিভার কষ্টার্জিত ফসলকে জাতির জন্যে উৎসর্গ করতে সংকল্পবদ্ধ। ব্যক্তিস্বার্থে উদ্বুদ্ধ সুবিধাবাদ এখানে অবাঞ্ছিত।'

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এই আকুতি পেলেন কোথা থেকে? তার এই যুগ ধর্মের পাগলামি এবং তার জন্য একজীবনের আত্মাহুতির প্রেরণাবীজই বা কী? সম্ভবত সেটার আবাহন ও প্রবহণ দুটোই এসেছে বাংলাদেশের রেনেসাঁর আলোকদ্যুতি থেকে।

সে কারণেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের আপনমনের ভাবনায় উদ্ভাসিত হয়েছে, 'আগামীতে যখন এই জাতির জীবনে বৈদগ্ধ আর পরিশীলনের যুগ আসবে তখন সেই সময়ের তরুণেরা আমাদের এইসব হাস্যকর কাণ্ডকারখানার কথা ভেবে অবাক হবে। বুঝে উঠতে পারবে না কেন তাদের একজন বিমূঢ় পূর্বসূরি তাদেরই মত মেধা আর মননশীলতা নিয়ে আজীবন কেবল দেশের মানুষের চিৎপ্রকর্ষ বাড়াবার পণ্ডশ্রমে মানবজন্মের অপচয় করে গিয়েছিল। হয়তো তার মেধার বা মননের ধারকত্ব সম্বন্ধেই তাদের সন্দেহ জাগবে। তারা বুঝবে না যে আকুতিতে তার অন্তরাত্মা সেদিন ক্রন্দন করেছে তা বিস্মিত শিল্পসিদ্ধি নয়, একটা নতুন জাতি নির্মাণের বেদনা। একটা অকর্ষিত আদিম ও প্রাথমিক জাতিকে গড়ে তোলাতেই তারা ছিল নিঃশেষিত।' (পৃষ্ঠা ৩৫, আমার অনুভূতিতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, মার্চ ১৯৯৭, বিসাকে)

এই যে জাতি নির্মাণের বেদনা ও আকুতি, সেটাই আসলে রেনেসাঁর আকুতি। অধ্যাপক সায়ীদ সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকা বেদনাবান মানুষদের একজন ছিলেন বলেই, জাতি নির্মাণের আকুতির ডাকে সাড়া দিয়েই এরকম বাতিঘর নির্মাণকে জীবনের ধ্রুবতারা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

তিনি লিখেছেন, 'যে কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটা জায়গায় পার্থক্য আছে। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের নিজস্ব কোনো মতাদর্শ নেই। কেন্দ্র কাউকে কোনো মতাদর্শে দীক্ষিত করে না। কেন্দ্রের যদি কোনো মতাদর্শ থেকে থাকে তবে তা একটাই-মনুষ্যত্বের সমৃদ্ধি।' (পৃষ্ঠা: ১৬, আমার অনুভূতিতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, মার্চ ১৯৯৭, বিসাকে)

পুনশ্চ: বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র আসলে বাংলাদেশের রেনেসাঁর আকুতিকেই জাগিয়ে রেখেছে। এই যাত্রায় ৪৫ বছর একটা সংখ্যা মাত্র…।

শুভ কিবরিয়া: সিনিয়র সাংবাদিক, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সাবেক কেন্দ্র-সমন্বয়কারী (২০০০-২০০৬)

Comments

The Daily Star  | English

1,500 dead, nearly 20,000 injured in July uprising: Yunus

He announced plans to demand the extradition of deposed dictator Sheikh Hasina from India

1h ago