তিস্তাপাড়ে গভীর রাতে ইউএনওর অভিযানে বন্ধ হলো অবৈধ বালু উত্তোলন

হাতীবান্ধায় তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করেন ইউএনও। ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা। গতরাত ১টার দিকে উপজেলার সিন্দুর্ণা ইউনিয়নের তমোর চৌপথি এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রের সদস্যরা পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা ড্রেজার মেশিন ও বালু তোলার পাইপ ধ্বংস করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী চক্র দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে তিস্তা থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছিল। এতে নদীভাঙনের আশঙ্কায় দিন কাটছে তিস্তাপাড়ের মানুষের। ইতিমধ্যে অনেক আবাদি জমি, ঘরবাড়ি ও ফলের বাগান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাদের অভিযোগ, এই চক্রের সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।

ভুক্তভোগী কৃষকেরা জানান, ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে তারা রাতে ঘুমাতে পারতেন না। আবার দিনের বেলায় বালুবাহী ট্রাক্টরের কারণে গ্রামের কাঁচা রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তমোর চৌপথি এলাকার কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ করে আসছিলাম। অবশেষে ইউএনও অভিযান চালানোয় আমরা স্বস্তি পেয়েছি।'

আরেক কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আমার আবাদি জমি এখন ভাঙনের মুখে। বালু উত্তোলনকারীদের দাপটে আমরা আতঙ্কে ছিলাম। চক্রটি যেন আবার বালু তোলা শুরু করতে না পারে, সে জন্য প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।'

সিন্দুর্ণা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আরিফ ইসলাম জানান, তার ইউনিয়নে একটি 'বালুখেকো' চক্র রয়েছে যারা বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তুলে অবৈধভাবে টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশে ভাঙন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা বলেন, 'সরকারি অনুমোদন ছাড়া বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ বেআইনি। এতে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়। তিস্তাপাড়ের ভাঙনের অন্যতম কারণ এই অবৈধ বালু উত্তোলন। খবর পাওয়ামাত্রই আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। এর বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Crimes against humanity: trial against Hasina begins at ICT

Co-accused in the case are former home minister Asaduzzaman Khan Kamal and former IGP Abdullah Al-Mamun

16m ago