‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তাপাড়ে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি

তিস্তাপাড়, তিস্তা, অবস্থান কর্মসূচি, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, তিস্তা মহাপরিকল্পনা,
‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে তিস্তাপাড়ে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রাতে থাকার জন্য সেখানে তাঁবু বসানো হয়েছে। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

'জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই' স্লোগানে তিস্তাপাড়ে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তিস্তাপাড়ের জেলা লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, নীলফামারী ও গাইবান্ধায় একসঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়। তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে তিস্তাপাড়ের মানুষ এ কর্মসূচি পালন করছেন।

তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার সকাল থেকে রংপুর অঞ্চলের মানুষজন তিস্তাপাড়ে জড়ো হচ্ছেন। তিস্তাপাড়ে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হবে। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলো জন আকাঙ্ক্ষার দাবি। এ কারণে এ অঞ্চলের মানুষ ঘরে বসে নেই। তারা নিজ দায়িত্বে তিস্তাপাড়ে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।'

আসাদুল হাবিব দুলু কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি।

তিস্তাপাড়, তিস্তা, অবস্থান কর্মসূচি, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, তিস্তা মহাপরিকল্পনা,
তিস্তা নদীর সাম্প্রতিক দৃশ্য। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

তিনি আরও বলেন, 'আমরা লাগাতার ৪৮ ঘণ্টা তিস্তাপাড়ে অবস্থান করব। এখানে পালাগান, সারিগান, ভাওয়াই, লালন, লোকসংগীত ও গ্রামীণ খেলাধুলা হা-ডু-ডু, ঘুড়ি উড়ানো, গোল্লাছুট ও দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি।'

তার ভাষ্য, 'আমাদের ৪৮ ঘণ্টার লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পর সরকার আমাদের দাবি না মানলে আরও কর্মসূচির ডাক দেব।'

তিস্তাপাড়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষাকালে উজানে ভারতের পানিতে তাদের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়তে হয়। শুষ্ক মৌসুমে উজানে ভারত একতরফাভাবে তিস্তার পানি আটকে রাখে। এতে তিস্তার বুকে সেচের পানি পাওয়া যায় না। এ সময় তিস্তা শুকিয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়। কর্মহীন হয়ে পড়েন তিস্তার ওপর নির্ভরশীল কৃষক, জেলে ও মাঝি।

তিস্তাপাড়, তিস্তা, অবস্থান কর্মসূচি, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, তিস্তা মহাপরিকল্পনা,
সোমবার সকালে তিস্তা নদীর ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

তারা আরও জানান, তিস্তা নদী ড্রেজিং না হওয়ায় প্রতি বছর নদী ভাঙনে কয়েক হাজার পরিবার আবাদি জমি ও বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে। পানির ন্যায্য হিস্যা পেলে ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তিস্তা হয়ে উঠবে রংপুর অঞ্চলের জন্য আশীর্বাদ।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তাপাড় চর গোকুন্ডার কৃষক নূর ইসলাম (৬৫) বলেন, 'সোমবার সকাল থেকে তিস্তাপাড়ে অবস্থান নিয়েছি। এখানে রাতে থাকতে তাঁবুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।'

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাংলাদেশে তিস্তা নদী ১১৫ কিলোমিটার। তার মধ্যে তিস্তা ব্যারেজের উজানে ২০ কিলোমিটার, আর ভাটিতে ৯৫ কিলোমিটার। ভাটিতে তিস্তা নদী পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে।'

'তিস্তা ব্যারেজে পানি পাওয়া যাচ্ছে গড়ে দুই হাজার ৮০০ কিউসেক। এই পানি ছয় জেলার ৫৫ হাজার বোরো ধানের পানিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে। চুক্তি অনুযায়ী পানির হিস্যা পাওয়া গেলে শুষ্ক মৌসুমেও তিস্তা ব্যারেজের ভাটিতে নদীতে পানিপ্রবাহ থাকত,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

NBR moves to speed up auction of abandoned goods

About 2 lakh tonnes of imported goods left abandoned at Chattogram port alone for years

12m ago