বিপৎসীমার কাছাকাছি তিস্তার পানি, ৩ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

স্টার ফাইল ফটো

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে দ্রুত বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। ইতোমধ্যে রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বাড়ি-ঘরে পানি উঠতে শুরু করেছে। বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের হাজারো মানুষ।

তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় পানির স্তর ৫২ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে, যা বিপৎসীমার মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল। কাউনিয়া পয়েন্টে পানির স্তর ছিল ২৯ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক শূন্য এক সেন্টিমিটার নিচে ছিল।

শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইতোমধ্যে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালীগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ব্যাহত হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনযাত্রা।

ডিমলার ছোটখাতা গ্রামের বাসিন্দা আক্তার আলম জানান, 'নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি এবং বাচ্চাদের নিয়ে আমরা চরম বিপদে আছি।'

বাইশপুকুর গ্রামের রমজান আলী বলেন, 'বৃষ্টি হওয়ার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর এলাকায় পানি বাড়তে শুরু করে। এখন পানিবন্দি হয়ে চরম বিপদে পড়েছি। গরু-ছাগল দিনের বেলায় রাস্তার উঁচু স্থানে রাখলেও রাতে দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার উপপ্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন জানান, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ৪৪টি জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে।

'তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও' সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানি বলেছেন, 'অসময়ের বন্যা ও ভাঙনের ফলে প্রতি বছর তিস্তা নদী এক লাখ কোটি টাকার সম্পদ গিলে খায়। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য নদী খনন, সংরক্ষণ এবং তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন জরুরি।'

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মোস্তাফিজার রহমান জানান, আগামী দুই দিন রংপুর বিভাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে এখনো বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় নদীগুলোর পানির স্তর বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ফলে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

দ্য ডেইলি স্টারের পাবনা সংবাদদাতা জানিয়েছেন, সিরাজগঞ্জে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জ কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, এদিন সকাল ১১টার দিকে কাজীপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৬৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন, 'যদিও বন্যার কোনো আশঙ্কা নেই। তবে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।'

Comments

The Daily Star  | English
The bold move to a flexible exchange rate regime

The bold move to a flexible exchange rate regime

With the central bank agreeing to go for a flexible exchange rate, the IMF will disburse the fourth and fifth instalments in June this year.

10h ago