পুলিশের মারধরের অভিযোগ: বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রাইম মুভার শ্রমিকদের ১২ ঘণ্টার কর্মবিরতি

স্টার ফাইল ফটো

পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন প্রাইম মুভার ও ট্রেইলারচালক-শ্রমিকরা।

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে এই কর্মবিরতি শুরু হবে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাইম মুভার ট্রেইলার, কংক্রিট মিক্সার, ফ্ল্যাটবেড, ডাম্প ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাহী সভাপতি হুমায়ুন কবির বুধবার সন্ধ্যায় শহরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচির ঘোষণা করেন।

এই যান চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অন্যান্য স্থানে কন্টেইনার ও অন্যান্য পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত হয়।

যোগাযোগ করা হলে কবির বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে অলংকার এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় পাহাড়তলী থানার উপপরিদর্শক আল আমিন প্রাইম মুভারচালক মো. লিটনকে একজন আহত ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে জোর করেন। বন্দর থেকে একটি অভ্যন্তরীণ ডিপোতে পণ্য পরিবহন করে লিটন ক্লান্ত ছিলেন জন্য কাজটি করতে অস্বীকৃতি জানান। তখন ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে নিকটবর্তী অলংকার পুলিশ ক্যাম্পে যান।

লিটন ঘটনাটি ইউনিয়ন সভাপতি সেলিম খানকে জানান এবং পরে পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে উপপরিদর্শককে তার মোবাইল ফোন থেকে ইউনিয়ন সভাপতির সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন। সে সময় পুলিশ কর্মকর্তা দুর্ব্যবহার করেন, বলেন কবির।

তিনি আরও বলেন, এরপর ইউনিয়ন সভাপতি পুলিশ ক্যাম্পে গেলে সেখানে বাগবিতণ্ডা হয় এবং পুলিশ সেলিম ও আরও দুই শ্রমিককে পাহাড়তলী থানায় নিয়ে যায়।

কবিরের ভাষ্য, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সরাসরি নির্দেশে থানার ভেতরে তিনজনকে নির্দয়ভাবে মারধর করা হয়। পরে সহকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বুধবার কাজ করতে চাননি। চট্টগ্রামের প্রধান উপদেষ্টার সফরকে সম্মান জানাতে তারা শান্ত ছিলেন, জানান তিনি।

দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কর্মবিরতি চালবে, জানান কবির।

দ্য ডেইলি স্টার পক্ষ থেকে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আল আমিন ডেইলি স্টারকে বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি দুই পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে সেই রাতে ঘটনাস্থলে যান এবং সেখানে দেখেন যে, একজন ব্যক্তি গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছেন।

আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাউকে না পেয়ে তিনি লিটনকে অনুরোধ করেছিলেন। লিটন নিজেকে প্রাইম মুভারের চালক পরিচয় দিয়েছিলেন। যাচাই করার জন্য তিনি তার আইডিকার্ড ও লাইসেন্স নিয়েছিলেন, কিন্তু তখনই একটি সংঘর্ষের তথ্য পেয়ে তাকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা হতে হয়, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি স্বীকার করেছেন—ফোনে ইউনিয়ন নেতার সঙ্গে কথা বলতে চাননি। কারণ হিসেবে বলেছেন, তিনি অন্য দুটি মামলায় ব্যস্ত ছিলেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ইউনিয়ন নেতা ও বেশ কয়েকজন পৌঁছানোর পর  তারা পুলিশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন এবং মহাসড়ক অবরোধ করার হুমকি দেন।

পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ওসি হস্তক্ষেপ করেন এবং তাদের আলোচনার জন্য থানায় নিয়ে যান, জানান আল আমিন।

থানায় তিনজনকে মারধর করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না, কারণ তিনি রাতে পুলিশ ক্যাম্পেই ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

10h ago