আশুলিয়ায় ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ১
![](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2025/02/09/ashulia-3.jpg)
ঢাকার আশুলিয়ায় ঝুট ব্যবসার দখল ও ঝুটভর্তি ট্রাক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
এসময় কাপ্তান মিয়া নামে এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়া, ইট-পাটকেলের আঘাতে শেখ আবু জাফর নামে আরও এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
কাপ্তান হবিগঞ্জ জেলার মো. ডালিমের ছেলে এবং স্থানীয় একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কর্মরত।
আজ রোববার বিকেল ৩টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া চৌরাস্তা সংলগ্ন জামগড়া-বাগবাড়ি আঞ্চলিক সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার প্রীতি গ্রুপের প্রতিষ্ঠান প্রীতি কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের ঝুট নিয়ে আসছিলেন আশুলিয়া থানা তাঁতীদলের সহসভাপতি বকুল ভুঁইয়া। সম্প্রতি কারখানাটির ঝুটের এই ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন ঢাকা-১৯ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন বাবুর অনুসারী সাবেক যুবদল নেতা শরীফ চৌধুরী। আজ বকুল ভূঁইয়ার লোকজন কারখানা থেকে ঝুট নিয়ে যাওয়ার সময় শরীফ চৌধুরীর লোকজন ঝুটের ট্রাক লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার পাশাপাশি ট্রাকটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক এইচ এম আসাফ উদ্দৌলা রিজভী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কাপ্তান নামে এক কিশোরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার পিঠে গুলি লেগেছে।'
বিষয়টি জানতে ঢাকা-১৯ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন বাবু ও তার অনুসারী সাবেক যুবদল নেতা শরীফ চৌধুরী মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
স্থানীয় সূত্র আরও জানায়, বকুল ভূঁইয়ার সঙ্গে কারখানার চুক্তি থাকলেও মূলত ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন তার ছেলে স্থানীয় যুবলীগ নেতা রনি ভূঁইয়া। আজ সংঘর্ষের সময় রনির লোকজনই উপস্থিত ছিল।
আশুলিয়া থানা তাঁতীদলের সহসভাপতি বকুল ভূঁইয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ছয় মাস ধরে কারখানার ঝুট ব্যবসা আমি করি। আজ সকালে শরীফ চৌধুরীর লোকজন কারখানার সামনে ঝামেলা শুরু করে। পরে পুলিশকে জানালে তাদের সহযোগিতায় আমার লোকজন কারখানা থেকে ঝুট নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর পথে ঝুটের ট্রাক শরীফ চৌধুরীর বাড়ির সামনে পৌঁছালে বাড়ির ছাদ থেকেই তারা গুলি শুরু করে এবং একপর্যায়ে ট্রাকে আগুন দেয়। তাদের ছোড়া গুলিতে মঞ্জু নামে এক লেবারসহ আমাদের দুজন লোক গুলিবিদ্ধ হয়েছে।'
প্রীতি কম্পোজিট টেক্সটাইল লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রাকিবুল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের কারখানা প্রাঙ্গণে কোনো ঝামেলা হয়নি। শুনেছি ঝামেলা হয়েছে কারখানার বাইরে। আমাদের সঙ্গে ঝুটের চুক্তি রয়েছে বকুল ভূঁইয়া নামে একজনের, চুক্তি অনুযায়ী তিনিই ঝুট নেন।'
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূর আলম সিদ্দিকী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটেছে, একজন গুলিবিদ্ধও আছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে, বিশেষ করে যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি।'
Comments