বাফুফে বাটলারকে কোচ রাখলে একযোগে অবসরের হুমকি সাবিনাদের

ছবি: সংগৃহীত

কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে বাংলাদেশ নারী দলের ফুটবলারদের দূরত্ব আবার এলো প্রকাশ্যে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে এবার রীতিমতো বড় হুমকি দিলেন সাবিনা খাতুন-ঋতুপর্ণা চাকমা-মাসুরা পারভীনরা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) যদি ইংলিশ কোচ বাটলারকে কোচ পদে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত থেকে না সরে, তাহলে একযোগে অবসর নেবেন তারা।

বৃহস্পতিবার বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে একটি লিখিত বক্তব্যে এই ঘোষণা দিয়েছেন নারী খেলোয়াড়রা। বাটলারের অধীনে অনুশীলন ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ৩০ জনের মধ্যে লিখিত বক্তব্যের নিচে স্বাক্ষর রয়েছে ১৮ জনের। সকালে বাটলার জিম সেশন আয়োজন করলে তাতে অংশ নেন মাত্র ১২ জন। সিনিয়র ফুটবলাররা অনুশীলন থেকে বিরত থেকে সন্ধ্যায় মুখোমুখি হন গণমাধ্যমের।

'নারী জাতীয় ফুটবল দলের প্রধান কোচ পিটার বাটলার ইস্যু নিয়ে আমাদের অবস্থান, প্রশ্ন ও যত অভিযোগ' শিরোনামের তিন পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, 'আমরা আশা করছি, বাফুফের মাননীয় সভাপতি (তাবিথ আউয়াল) বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিয়ে আশু সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন। এর আগ পর্যন্ত আমরা বাটলারের অধীনে কোনো অনুশীলন ক্যাম্পে অংশ নিব না। যেহেতু গত অক্টোবরের পর কোনো ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফে কোনো চুক্তি নবায়ন করেনি, তাই আইনত বাফুফে আমাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রাখে না। তারপরও যদি সেরকম কিছু করার সিদ্ধান্ত হয় এবং বাটলারকেই রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাফুফে অনড় থাকে, তবে আমরা একযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হব। ভেবে নিব, দেশের নারী ফুটবলে আমাদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে।'

সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন এক পর্যায়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন সাবিনা-মাসুরারা। বাটলারের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি, কটূক্তি, দুর্ব্যবহার ও দলের মধ্যে বিভাজন তৈরি করাসহ নানা অভিযোগ তাদের।

গণমাধ্যমের কাছে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাবিনা বলেছেন, 'দেখুন, এখানে আসলে একটা জিনিসই বলার আছে। নিজেদের আর প্রমাণের কিছু নেই, ব্যাপারটা আত্মসম্মানের। কারণ, দিনশেষে মেয়েরা দেশের জন্যই খেলে। কিন্তু দেশের মানুষ মেয়েদের যেভাবে কটূক্তি করছে, এটা মেয়েদের জন্য মেনে নেওয়াটা অসম্ভব।'

বাটলারের চুক্তি নবায়নের আগে খেলোয়াড়দের সঙ্গে বাফুফে আলোচনা না করায় হতাশ ডিফেন্ডার মাসুরা বলেছেন, 'এখানে অনেকেই জানে, আমরা এই কোচের ব্যাপারে অনেকবার বলেছি। বাফুফে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সেটা বড় ব্যাপার না। তার সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তারা কি একবারও ভাবেনি, "এই মেয়েগুলো কেন এই কথাগুলো বলছে সেটা আমাদের একটু ভাবা উচিত। তাদের সঙ্গে বসা উচিত যে তাদের আসলে কী সমস্যা।" খেলব আমরা। যে আঘাত পায়, সে-ই বোঝে যে আঘাতটা কত বড়। আপনারা কেউ বুঝবেন না। তো এই বিষয় নিয়ে আমাদের সঙ্গে একটু কথা বলা উচিত ছিল।'

বাটলারের বিরুদ্ধে নারীরা আগেও বিদ্রোহ করেছিলেন। নেপালে গত বছরের অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ চলাকালীন আলোড়ন তুলেছিল সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে বাটলারের দ্বন্দ্ব। সেসব পেছনে ফেলে শেষমেশ সাফের শিরোপা ধরে রাখে বাংলাদেশ। এরপর চলতি জানুয়ারি মাসের ১১ তারিখ বাটলারের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করে বাফুফে। কিন্তু কোচের সঙ্গে খেলোয়াড়দের দূরত্ব না কমে বরং আরও বেড়েছে। গত সোমবার বাটলার ঢাকায় ফিরে পরদিন টিম মিটিং ডাকলে সিনিয়র ফুটবলাররা তাতে অংশ নেননি। এবার তাদের কাছ থেকে এসেছে গণ অবসরের হুমকি।

Comments

The Daily Star  | English

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

1h ago