পাকিস্তানে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের জেরে যাত্রীবাহী গাড়িতে বন্দুক হামলা, নিহত ৪৩
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের যাত্রীবাহী গাড়িতে বন্দুক হামলার দুইটি পৃথক ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ হয়েছে। এই প্রদেশে দীর্ঘদিন ধরে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্বের জেরে এই হামলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
হামলার ঘটনার পর থেকে এ দুর্গম পার্বত্য জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং মোবাইল সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার শিয়া মুসলিমদের বহনকারী দুইটি পৃথক গাড়িবহরে বন্দুকধারীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালায়।
গতকাল জানানো হয়েছিল, নিহতের সংখ্যা ৩৮ ও আহত ২৮।
দুইটি হামলার ঘটনাই আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে কুররাম জেলায় ঘটে। শিয়া-সুন্নিদের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষী এই জেলা।
বেশ কয়েকমাস ধরে নতুন করে এই অঞ্চলের শিয়া ও সুন্নি গোত্রের মধ্যে সংঘাত দানা বেঁধে উঠেছে।
জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাভেদউল্লাহ মেহসুদ এএফপিকে বলেন, 'কুররামে গাড়িবহরে গতকালের হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ হয়েছে।'
'নিহতদের মধ্যে সাত নারী ও তিন শিশু রয়েছে', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, ১৬ আহত ব্যক্তির মধ্যে ১১ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
নাম না প্রকাশের শর্তে অপর এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, শুক্রবার পুরো জেলায় মোবাইল সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। তিনি জানান, এলাকার পরিস্থিতি 'থমথমে'। স্থানীয়রা জেলার প্রধান শহর পারাচিনারে অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন।
কর্মকর্তা বলেন, 'কুররামের দুই অংশের সংযোগ স্থাপনকারী মূল সড়কে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বাজারও বন্ধ রাখা হয়েছে। সব ধরনের পরিবহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।'
সুন্নিপ্রধান পাকিস্তানে গোত্র ও পারিবারিক সংঘর্ষ খুবই সাধারণ ঘটনা। বিশ্লেষকরা জানান, দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে শিয়ারা বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
মেহসুদ জানান, স্থানীয় গোত্রপ্রধানদের কাউন্সিল (জিরগা) গঠন করে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জুলাই-সেপ্টেম্বরের সংঘর্ষে অসংখ্য মানুষ নিহত হন। সেবার জিরগার মাধ্যমে এর অবসান ঘটানো হয়েছিল।
Comments