বেআইনিভাবে কোনো কিছু করার সুযোগ বা ইচ্ছা আমাদের নেই: আসিফ নজরুল

অধ্যাপক আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

বেআইনিভাবে কোনো কিছু করার সুযোগ বা ইচ্ছা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেই বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা সরকারের আমলের প্রচুর মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে। সেই মামলাগুলো আমরা প্রত্যাহার করতে পারছিলাম না। অনেকে বলছে, আমরা কেন মিথ্যা, হয়রানিমূলক এত মামলা প্রত্যাহার করছি না। আমরা তো চাইলেই প্রত্যাহার করতে পারব না।

'যে মামলায় চার্জশিট হয়নি, তদন্ত পর্যায়ে আছে, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলে প্রত্যাহারের সুযোগ থাকে। চার্জশিট হয়ে যাওয়া মামলা প্রত্যাহারের জন্য পিপিকে আবেদন করতে হয়। অথবা বিচার কার্য সম্পন্ন করে যিনি আসামি আছেন, তাকে মুক্তির সুযোগ খুঁজতে হয়,' বলেন তিনি।

আজ সোমবার সন্ধ্যার পর সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, 'যে মামলায় সাজা হয়ে গেছে, সেই মামলা আমরা কেন প্রত্যাহার করছি না এমন প্রশ্নও তোলা হয়। আইনটা একটু জানা থাকলে ভালো হয়। যে মামলায় সাজা হয়ে গেছে, সেই মামলা যতই মিথ্যা হোক, ষড়যন্ত্রমূলক অবিশ্বাস্য মামলা হোক, যার বিরুদ্ধে শাস্তি হয়েছে, তার আবেদন ছাড়া সপ্রণোদিতভাবে আইন মন্ত্রণালয়ের কোনো কিছু করার নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের যা করার আমরা করছি, যথেষ্ট চেষ্টা করছি। ভুল থাকবে, তবে একটি জিনিস নিশ্চিত থাকেন, বেআইনিভাবে কোনো কিছু করার সুযোগ বা ইচ্ছা আমাদের নেই।'

আইসিটি আইনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের যে কেউ এখানে পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকতে পারবেন।  আসামিপক্ষ যে কোনো দেশের আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবে।'

তিনি বলেন, 'নিম্ন আদালতে বিচার কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। গত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় প্রায় সাড়ে চার হাজার সরকারি উকিল ছিলেন, গত ৫ আগস্টের পর দুএকজন ছাড়া সবাই পালিয়ে গেছেন বা আত্মগোপনে আছেন। তাই আমাদের জিপি, পিপি, অতিরিক্ত পিপি নিয়োগ দিতে হয়েছে। বাইরে থেকে বোঝা যায় না যে, নিয়োগ দিতে এত সময় লাগছে কেন।'

'সাড়ে চার হাজার সরকারি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমাদের এখানে আবেদন এসেছে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার। এটি যাচাই-বাছাই করে একটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সাড়ে চার হাজার বাছাই করা, আমার মন্ত্রণালয়ের যে কী পরিশ্রম গেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের! সেটা বোঝাতে পারব না। আজকে আমি ঢাকা জেলার প্রায় ৭০০ সরকারি আইনজীবী নিয়োগের ফাইলে স্বাক্ষর করেছি। এখানেও আবেদন পত্র ছিল প্রায় ১০ হাজারের মতো,' যোগ করেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, 'মাঝে মাঝে লোকজন একটু কনফিউজড হয়ে যায়। মাঝে মাঝে শুনি, মানুষজন আমাকে বলে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুনি ডিমের দাম বাড়লো কেন? এটা আসিফ নজরুলের দোষ। একজন ছাত্র চিকিৎসা পাচ্ছে না! আসিফ নজরুলের দোষ বা আইন মন্ত্রণালয়ের দোষ। পুলিশ গ্রেপ্তার করল কেন? সেটাও নাকি আইন মন্ত্রণালয়ের দোষ। পুলিশের গ্রেপ্তারের সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয়ের কী সম্পর্ক? মনে হয়, আমাদের প্রতি বেশি প্রত্যাশা কিংবা আমাকে হয়তো আপনারা কেউ কেউ বেশি ভালোবাসেন।'

'কিন্তু এটা তো আইন দ্বারা ডিফাইন্ড, অন্য মন্ত্রণালয়ের কাজ তো আমি করতে পারব না। কোনো রকম এখতিয়ার আমার নেই। তবে যখন উপদেষ্টামণ্ডলীর সভা হয়, যখন ইসুগুলো আছে, তখন নিজেদের মতামত পরামর্শ উদ্বেগ এগুলো জানাতে পারি। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের,' বলেন তিনি।

তিন বিচারকের সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি) পুনর্গঠন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'এই মাসের মধ্যেই বিচার শুরু হতে পারে।বিচারিক প্রক্রিয়ার কোনো কিছুই আমাদের (সরকারের) হাতে নেই।'

Comments

The Daily Star  | English
Attack on Bangladesh mission in Agartala

India must protect Bangladesh's diplomatic missions

Hostile rhetoric, mobilisations by Hindutva groups fuelling unrest

18h ago