শ্রীলঙ্কায় সাবেক প্রেসিডেন্টের বিশেষ সুবিধা কমানোর উদ্যোগ
অন্য যেকোনো দেশের মতো, শ্রীলঙ্কায়ও সাবেক প্রেসিডেন্টদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু বিশেষ সুযোগ সুবিধা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, এ ধরনের বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা বাতিল ও খর্ব করার উদ্যোগ নিয়েছেন নবনির্বাচিত বামপন্থি প্রেসিডেন্ট অনুঢ়া কুমারা দিশানায়েকে।
গতকাল শনিবার এই তথ্য জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম ডেইলি মিরর।
কিছু সুবিধা বাতিল বা সংস্কারের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে। এ কারণে সরকার সাবেক প্রেসিডেন্টদের জন্য বরাদ্দ করা সুযোগ-সুবিধার বিস্তারিত খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে।
ডেইলি মিররকে এক সূত্র জানান, পরবর্তী নির্বাচিত পার্লামেন্ট এসব আইনি জটিলতা দূর করার জন্য কাজ করবে।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় সাবেক প্রেসিডেন্টদের পেনশন সুবিধাসহ আরও বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা বাতিলের প্রতিশ্রুতি দেন অনুঢ়া কুমারা দিশানায়েকে।
১৯৮৬ সালে 'প্রেসিডেন্টস এনটাইটেলমেন্টস অ্যাক্ট নং ৪' আইনের মাধ্যমে সাবেক প্রেসিডেন্টরা বেশ কিছু সুবিধা পান। মূলত এই সুবিধাগুলোতে কোনো পরিবর্তন আনতে বা বাতিল করার ক্ষেত্রে রয়েছে আইনি জটিলতা।
এই আইন অনুযায়ী, সকল সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাদের বিধবা স্ত্রীরা আজীবন বিনা ভাড়ায় একটি উপযুক্ত বাসভবনে বসবাস করার অধিকার রাখেন।
যদি কোনো উপযুক্ত বাসভবন বরাদ্দ করা না যায়, তাহলে সে অনুযায়ী সাবেক প্রেসিডেন্টের মাসিক পেনশনের এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ অর্থ বাড়ি ভাড়া বাবদ তাদেরকে দিতে হবে।
এ ছাড়া, প্রত্যেক সাবেক প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত সচিবের বেতন জোগাতে মাসিক ভাতা দেয় সরকার। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের সচিব যে পরিমাণ অর্থ বেতন হিসেবে পান, তার সমপরিমাণ অর্থ প্রত্যেক সাবেক প্রেসিডেন্টকে দেয় সরকার।
আর সাবেক প্রেসিডেন্টের বিধবা স্ত্রীদের ক্ষেত্রে মন্ত্রীদের সচিবের বেতনের সমান বেতন দেওয়া হয়।
পাশাপাশি, এ মুহূর্তে মন্ত্রিসভার মন্ত্রীরা সরকারি পরিবহনসহ অন্যান্য যা যা সুবিধা পেয়ে থাকেন, তার বেশিরভাগই সাবেক প্রেসিডেন্ট ও তাদের স্ত্রীরা উপভোগ করে থাকেন।
পাশাপাশি, একটি সমন্বিত তহবিল থেকে তাদের সবাইকে পেনশন দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানান, নির্বাচনী অঙ্গীকার মানতে সরকার এ ধরনের সব সুবিধা যাচাই-বাছাই করে এগুলোকে বাতিল বা খর্ব করার উদ্যোগ নিয়েছে।
সূত্র জানান, 'আমরা দেখব, কাউকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে কী না। তবে উল্লেখিত আইনের মাধ্যমে যেসব সুবিধা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো খর্ব করার আগে আইনটিতে সংস্কার আনতে হবে।'
আগামীকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
Comments